পাকিস্তানের ভারোত্তোলক বাট। ছবি পিটিআই
ভারতের ঘরে যেখানে একের পর এক সোনার পদক এসে চলেছে, সেখানে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে সাফল্য খুবই কম। এখনও পর্যন্ত মাত্র একটি সোনার পদক জিতেছে। ভারোত্তোলনে পাওয়া সেই একটি পদক নিয়েই ব্যাপক উচ্ছ্বাস হচ্ছে গোটা দেশে। এতটাই যে, সোনাজয়ীর নামে উড়ালপুলের নামকরণ করার দাবি তুলেছেন জনৈক ভক্ত। তাঁর দাবির উত্তর দিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও।
১০৯ কেজি-প্লাস বিভাগে মোট ৪০৫ কেজি তুলে সোনা জিতেছেন পাকিস্তানের মহম্মদ নুহ দস্তগির বাট। তাঁর সোনাজয়ের পরেই শাহবাজ টুইট করে লেখেন, ‘দারুণ খেললে বাট সাব।’ সেই টুইটেরই উত্তর দিয়েছেন ফয়জান খান নামে এক সমর্থক। লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শুধু মাত্র ভাল খেলেছ বললে হবে না, বাট সাবের নামে উড়ালপুলের নামকরণ করতে হবে।’ সেখানে শাহবাজ উত্তর দিয়ে লেখেন, ‘কোনও বাঁধের নামকরণ করলে চলবে?’
কমনওয়েলথে ভারোত্তোলনে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার সোনা পেল পাকিস্তান। এর আগে ২০০৬ মেলবোর্ন গেমসে ৮৫ কেজি বিভাগে সোনা জিতেছিলেন। ঘটনাচক্রে, বাটের বাবা গুলাম দস্তগির প্রাক্তন জাতীয় সেরা ভারোত্তোলক ছিলেন। সাফ গেমসেও পদক পেয়েছিলেন। গুজরানওয়ালার বাড়িতে ছেলের জন্য জিমন্যাসিয়াম তৈরি করে দিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই এখন অনুশীলন করেন বাট।
প্রসঙ্গত, বাটের বিভাগে ব্রোঞ্জ জিতেছেন ভারতের গুরদীপ সিংহ। পরে দুই ক্রীড়াবিদ উচ্ছ্বাসে মাতেন। বিভিন্ন বয়স ভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় তাঁরা একে অপরের মুখোমুখি হয়েছেন বহু বার। কখনও জিতেছেন ভারতের গুরদীপ। কখনও পাকিস্তানের বাট। দুই ভারোত্তোলকের মধ্যে প্রতিযোগিতা যত তীব্র হয়েছে, তত দৃঢ় হয়েছে বন্ধুত্ব। দু’দেশের বৈরিতা প্রভাব ফেলতে পারেনি তাঁদের সম্পর্কে। সীমান্তের কাঁটাতার কখনই তাঁদের সম্পর্কের কাঁটা হয়নি।
প্রতিযোগিতার মঞ্চে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলেন না। কিন্তু একে অপরকে পরামর্শ দেন। এমনই তাঁদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক। বার্মিংহামে একই সঙ্গে পদক জিতেছেন দু’জনে। পরস্পরের সাফল্যে তাঁরা উচ্ছ্বসিত। পদক জয়ের পর দু’জনে এক সঙ্গে উৎসবে মাতেন। বাট বলেছেন, “গুরদীপ আর আমি দারুণ বন্ধু। সোনা জয়ের পর আমিই প্রথম গুরদীপকে ওর পদকের জন্য অভিনন্দন জানাই। পরে আমরা দু’জনে মিলে পার্টি করেছি। সিধু মুসে ওয়ালার গান চালিয়ে একটু নাচানাচিও করলাম।”