(বাঁ দিকে) যুবরাজ সিংহ। মহুয়া মৈত্র (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
বিতর্কে যুবরাজ সিংহের সংস্থা। স্তন ক্যানসারের প্রচার করতে গিয়ে বিজ্ঞাপনে স্তনের বদলে কমলালেবুর ছবি ব্যবহার করে বিতর্কের মুখে পড়েছে প্রাক্তন ক্রিকেটারের সংস্থা ‘ইউউইক্যান’। সমাজমাধ্যমে এ নিয়ে ঝড় ওঠার পরে সেখান থেকে বিজ্ঞাপনটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সমাজমাধ্যমে প্রতিবাদ করেছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তবে নিজেদের কাজের জন্য ক্ষমা চায়নি যুবরাজের সংস্থা। মুদ্রিত বিজ্ঞাপন এখনও রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়।
বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছে, একটি বাসে এক মহিলা হাতে দু’টি কমলালেবু নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। সামনে বসা এক মহিলার কোলে এক ঝুড়ি কমলালেবু রয়েছে। পিছনে আরও দু’জন মহিলা। প্রত্যেকেই দাঁড়িয়ে থাকা মহিলার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। আরও একটি বিজ্ঞাপনে দু’জন মহিলাকে কমলালেবু কিনতে দেখা যাচ্ছে। সঙ্গে লেখা, ‘আপনি আপনার কমলালেবুকে কতটা ভাল চেনেন’? আর একটি বিজ্ঞাপনে লেখা, ‘মাসে এক বার আপনার কমলালেবু পরীক্ষা করান’।
যুবরাজের সংস্থার সেই বিজ্ঞাপন। ছবি: সমাজমাধ্যম।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ মহুয়া মৈত্র। তিনি দিল্লি মেট্রোকে উল্লেখ করে সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “স্তন শব্দটা দয়া করে জোরে বলতে শিখুন। আপনার মায়ের রয়েছে, আপনার স্ত্রী, বোন, মেয়ের রয়েছে। আপনারও রয়েছে। তাকে কোনও মতেই কমলালেবু বলা যায় না।”
ক্রিকেট খেলতে খেলতেই যুবরাজের ক্যানসার হয়েছিল। তা সারিয়ে আবার ফিরেছিলেন বাইশ গজে। তার পরেই এই সংস্থা গড়ে তোলেন। স্তন ক্যানসার নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে দীর্ঘ দিন ধরেই কাজ করছে ‘ইউউইক্যান’। সাধারণ মানুষ তাঁদের উদ্যোগের প্রশংসা করলেও বিজ্ঞাপনের ছবি এবং ভাষা তাঁরা মেনে নিতে পারেননি। দিল্লি মেট্রোয় সেই বিজ্ঞাপন দেখার পর এক ব্যক্তি সমাজমাধ্যমে প্রথম সেটি উল্লেখ করেন। তার পরেই দ্রুত সেই বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে পড়ে।
ওই ব্যক্তি লিখেছিলেন, “যদি স্তনকে স্তনই না বলতে পারি তা হলে সেই দেশে স্তন ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা কী ভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হবে? দিল্লি মেট্রোয় এই বিজ্ঞাপন দেখে প্রচণ্ড হতাশ হয়েছি। ‘আপনার কমলালেবু পরীক্ষা করান’ এই কথার অর্থ কী? কারা এই বিজ্ঞাপন বানায়? কারা অনুমতি দেয়? এ রকম বোকা মানুষেরাই কি সমাজটাকে চালাবে?” তিনি যুবরাজকেও ‘ট্যাগ’ করেছেন পোস্টে।
সংস্থার তরফে এই বিজ্ঞাপন সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে লেখা হয়েছে, “‘ইউউইক্যান’-এর অংশ হিসাবে আমরা জানি, সর্বসমক্ষে স্তন ক্যানসার নিয়ে কথা বলা কতটা সমস্যার। এই প্রসঙ্গ অনেকেই এড়াতে চান, যদি না তাঁর বা তাঁর ঘনিষ্ঠ কারও এই ক্যানসার থেকে থাকে।” ‘ইউউইক্যান’ জানিয়েছে, তারা এটাকে ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’ এবং ‘অনেক ভাবনাচিন্তা’ করে নেওয়া বলেই মনে করছে। তারা আরও লিখেছে, “আমরা এই অভিযান চালিয়ে গর্বিত। ইতিমধ্যেই এটি সাফল্য পেয়েছে এবং স্তন ক্যানসার নিয়ে অনেক মানুষ কথা বলা শুরু করেছেন।”