Asia Cup 2022

ছেলেদের পর মেয়েরাও এশিয়া কাপের ফাইনালে, শ্রীলঙ্কা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ক্রিকেটের হাত ধরে

রাজনৈতিক কারণে যে শ্রীলঙ্কা এশিয়া কাপ নিজেদের দেশে আয়োজন করতে পারেনি, তারা ট্রফিটা জিতে নিয়েছিল। ব্যাট-বল হাতে নিজেদের এশিয়া-শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করেছিলেন শনাকারা। সেই সুযোগ এ বার আতাপত্তুদের সামনে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২২ ১৭:২১
Share:

ফাইনালে ওঠার আনন্দে শ্রীলঙ্কার মহিলা ক্রিকেট দল। ছবি: টুইটার থেকে

এক মাস আগে এশিয়া কাপ জিতেছিল দাসুন শনাকারা। বৃহস্পতিবার মেয়েদের এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠলেন চামারি আতাপত্তুরা। ছেলেদের এবং মেয়েদের ক্রিকেটে দাপট দেখাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। অর্থনৈতিক সঙ্কটে দমবন্ধ পরিস্থিতি দেশে। দ্রব্যমূল্য আকাশছোঁয়া। নাভিশ্বাস উঠছে আমজনতার। সমস্যা সমাধানের রাস্তা খুঁজছে সরকার। সাধারণ মানুষ খুঁজছে একটু স্বস্তি। অনিশ্চয়তা, আশঙ্কা, অন্ধকার ভবিষ্যতের মাঝেও মানুষকে আনন্দ দিচ্ছে ক্রিকেট।

Advertisement

এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে শেষ বলে পাকিস্তানের দরকার ছিল ৩ রান। কিন্তু এক রান নিয়ে রান আউট হয়ে যান পাকিস্তানের নিদা দার। আনন্দে দৌড়তে থাকেন আতাপত্তুরা। না পাওয়ার দেশে হঠাৎ একটা আশার আলো। এশিয়া কাপ ট্রফিটা ছোঁয়ার সুযোগ। শনিবার ভারতের বিরুদ্ধে খেলতে হবে শ্রীলঙ্কাকে। কিন্তু মেয়েদের দলের উচ্ছ্বাস প্রকাশ দেখে মনে হচ্ছিল তাঁরা সব পেয়ে গিয়েছেন। দেশের পরিস্থিতির মাঝে ফাইনালে ওঠাই যে বিরাট ব্যাপার তা জানেন শ্রীলঙ্কার মেয়েরা। ম্যাচ শেষেও উচ্ছ্বাস ছিল অধিনায়ক আতাপত্তুর গলায়। তিনি বলেন, “১৪ বছর পর এশিয়া কাপের ফাইনালে আমরা। দারুণ আনন্দ হচ্ছে।”

কোনও একক পারফরম্যান্সকে গুরুত্ব দিচ্ছে না শ্রীলঙ্কা দল। কঠিন সময়ে একে অপরের পাশে দাঁড়াতে চাইছেন শ্রীলঙ্কার মহিলা ক্রিকেট দল। ম্যাচের সেরা হয়ে ইনোকা রানাউইরা বলেন, “আমি এই পুরস্কার অচিনির (কুলসূর্য) সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই। শেষ ওভারটা ও দারুণ করেছে। প্রতিযোগিতা যখন শুরু হয়, তখন থেকে আমরা এক হয়ে উঠতে পেরেছি। একে অপরকে বিশ্বাস করতে পেরেছি। আমাদের দলে কোনও বড় নাম নেই। একটা ভাল দল আছে।”

Advertisement

রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক কারণে যে শ্রীলঙ্কা এশিয়া কাপটা (ছেলেদের) নিজেদের দেশে আয়োজনই করতে পারেনি, তারা ট্রফিটা জিতে নিয়ে চলে গিয়েছিল। ব্যাট-বল হাতে নিজেদের এশিয়ার মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছিলেন শনাকারা। সেই সুযোগ এ বার আতাপত্তুদের সামনেও।

কিছু দিন আগে পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার ভয়াবহ পরিস্থিতির ছবি দেখা যাচ্ছিল। রাষ্ট্রপতির বাসভবনে ঢুকে পড়েছিল সাধারণ মানুষ। আন্দোলনের কারণে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছিল সেখানে। শনাকারা এশিয়া কাপ জেতার পর দেখা গিয়েছিল শ্রীলঙ্কার আনন্দের ছবিও। রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক সঙ্কটে ডুবে থাকা দ্বীপরাষ্ট্রের মানুষের কাছে ক্রিকেট দলের সাফল্য তাজা বাতাসের মতো। নানা দুশ্চিন্তার মাঝে এক ঝলক মুক্তির আনন্দ এনে দিয়েছিলেন শনাকারা। তাঁদের নিয়ে মেতে উঠেছিল সে দেশের মানুষ।

দোতলা বাসে করে সকাল সাড়ে ছ’টায় ট্রফি নিয়ে শুরু হয় শহর পরিক্রমা। অত সকালেও ক্রিকেটারদের দেখতে, অভিনন্দন জানাতে অসংখ্য মানুষ রাস্তায় নেমেছিলেন। কারও হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। কারও হাতে ফুল বা মালা। সমাজমাধ্যমেও বহু মানুষ ক্রিকেটারদের স্বাগত জানান। দমবন্ধ পরিস্থিতির মাঝে ওই ট্রফি ছিল মুক্তির বাতাস।

দেশের পরিস্থিতি যে পাল্টে গিয়েছে এমন নয়। এখনও রয়েছে অর্থাভাব। সাময়িক ভাবে শান্ত হলেও প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘ যে সব কিছু নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফেলেছেন এমন নয়। আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। এর মাঝে শ্রীলঙ্কার মেয়েরা এশিয়া কাপ জিততে পারলে তা যে আরও এক বার দেশের মানুষকে আনন্দ দেবে তা বলাই যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement