হার্দিক পাণ্ড্য। —ফাইল চিত্র।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের সহ-অধিনায়ক ছিলেন হার্দিক পাণ্ড্য। বিশ্বকাপ জেতার পরে রোহিত শর্মা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেওয়ার পরে মনে করা হয়েছিল, হার্দিকই হবেন ভারতের নতুন অধিনায়ক। কিন্তু তাঁকে বাদ দিয়ে সূর্যকুমার যাদবকে টি-টোয়েন্টি দলের নতুন অধিনায়ক করা হয়েছে। কেন হার্দিকের বদলে সূর্যকে দায়িত্ব দেওয়া হল? জবাব দিলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচক প্রধান অজিত আগরকর।
অধিনায়ক হিসাবে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজ় খেলতে সোমবার রওনা হচ্ছেন সূর্যেরা। তার আগে মুম্বইয়ে সাংবাদিক বৈঠক আগরকরকে সবচেয়ে বেশি এই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় যে, কেন হার্দিকের বদলে সূর্যকে অধিনায়ক করা হয়েছে। প্রথম লাইনেই সম্ভবত হার্দিককে অধিনায়ক না করার কারণ স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। আগরকর বলেন, “আমরা এক দিনে অধিনায়ক নির্বাচক করিনি। অনেক দিন ধরে আলোচনা হয়েছে। সাজঘর থেকে খবর নিয়েছি। তার পরেই নতুন অধিনায়ক হিসাবে সূর্যকে ভেবেছি।”
আগরকরের এই কথায় প্রশ্ন উঠছে, তবে কি সাজঘরে হার্দিকের ভাবমূর্তি খুব একটা ভাল নয়? সতীর্থদের সঙ্গে কি তাঁর সম্পর্ক খারাপ? সেই জন্যই কি সূর্যকে বেশির ভাগ ক্রিকেটার অধিনায়ক হিসাবে দেখতে চেয়েছেন? সে বিষয়ে অবশ্য স্পষ্ট করে কিছু জানাননি আগরকর। তবে তিনি এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা ভেবেই সূর্যকে অধিনায়ক করা হয়েছে। আগরকর বলেন, “আমাদের হাতে সময় আছে। পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দু’বছর পরে। আশা করি সূর্য ভাল ভাবে নেতৃত্ব দেবে।”
পাশাপাশি হার্দিকের চোট পাওয়ার প্রবণতার কথাও টেনে এনেছেন আগরকর। তিনি বলেন, “হার্দিক দলের খুব গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। কিন্তু ওর ফিটনেসের সমস্যা আছে। ও খুব চোটপ্রবণ। সূর্য অধিনায়ক হওয়ার যোগ্য। ওর ক্রিকেটের মস্তিষ্ক ভাল। আশা করছি ওকে প্রায় সব ম্যাচেই পাওয়া যাবে।”
চোট সারিয়ে ক্রিকেটে ফেরার পরে আইপিএলে বার বার বিতর্কে জড়িয়েছেন হার্দিক। রোহিতকে সরিয়ে তাঁকে অধিনায়ক করায় মুম্বইয়ের সাজঘর দু’ভাগ ভাগ হয়ে যাওয়ার খবর বেরিয়েছিল। আইপিএলে খারাপ খেলার পরে ক্রিকেটারের ভারতের বিশ্বকাপের দলে হার্দিকের জায়গা হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত জায়গা পান তিনি। সহ-অধিনায়কও করা হয়। কিন্তু বিশ্বকাপের পরে আর হার্দিকের নেতৃত্বে আস্থা রাখল না ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। মুম্বই ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির অধিনায়ক হলেও জাতীয় দলে সাধারণ ক্রিকেটার হিসাবেই খেলতে হবে তাঁকে।
ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের সহ-অধিনায়ক করা হয়েছে শুভমন গিলকে। সেই ভূমিকাতেও কি হার্দিকের কথা ভাবেননি নির্বাচকেরা? জবাবে আগরকর বলেন, “চোট সারিয়ে সবে ঋষভ পন্থ দলে এসেছে। ওর উপরে আমরা অতিরিক্ত চাপ দিতে চাইছি না। লোকেশ রাহুল দীর্ঘ দিন টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা পায়নি। শুভমন তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটার। জ়িম্বাবোয়ে সিরিজ়েও ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছে। তাই ওর উপর ভরসা রাখা হয়েছে।”
শ্রীলঙ্কা সিরিজ়ের দল থেকে সঞ্জু স্যামসন, রুতুরাজ গায়কোয়াড়, অভিষেক শর্মাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। আগরকর জানিয়েছেন, ১৫ জনের দল নির্বাচন করতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। তিনি বলেন, “সকলকে তো এক সিরিজ়ে নেওয়া সম্ভব নয়। যে বাদ যাবে তারই খারাপ লাগবে। কিন্তু তাকে দেখতে হবে, যারা সুযোগ পেয়েছে তারা যোগ্য কি না। যেমন কোনও দোষ না থাকলেও বিশ্বকাপের দলে রিঙ্কু (সিংহ)-কে জায়গা দিতে পারিনি। তবে যারা জায়গা পাচ্ছে, তাদের ভাল খেলতে হবে। নইলে পিছনে আর এক জন তৈরি আছে।”
রবীন্দ্র জাডেজাকেও শ্রীলঙ্কা সিরিজ় থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি নির্বাচকদের ভাবনায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন আগরকর। টেস্ট সিরিজ়ের কথা মাথায় রেখে জাডেজাকে এই সিরিজ়ে নেননি তাঁরা। আগরকর বলেন, “জাডেজা ও অক্ষর (পটেল)-কে এই ছোট সিরিজ়ে একসঙ্গে খেলানোর কোনও মানে নেই। এর পরে ১০টা টেস্ট খেলবে ভারত। সেখানে জাডেজা বড় ভূমিকা নেবে। ওর কথা নির্বাচকদের মাথায় আছে। ওকে বাদ দেওয়া হয়নি। টেস্টের কথা মাথায় রেখে এই সিরিজ়ে নেওয়া হয়নি।”