Sanjiv Goenka

সুপার জায়ান্টস পরিবার! শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কার হাত ধরে ক্রিকেট থেকে ফুটবল মাতাবে তিন দল

ক্রীড়াপ্রেমী শিল্পপতি সঞ্জীব ক্রিকেট এবং ফুটবল নিয়ে সমান আগ্রহী। আইপিএলের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি লিগেও বিনিয়োগ করেছেন। ফুটবলের মতো ঝকঝকে সাফল্যে ক্রিকেটে নেই তাঁর।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৩ ১৪:৫২
Share:

মোহনবাগানের নামের আগে থেকে এটিকে মুছে দিয়েছেন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। ছবি: টুইটার।

সদস্য, সমর্থকদের দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে মোহনবাগানের নামের আগে থেকে ‘এটিকে’ শব্দবন্ধ মুছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। শনিবার সবুজ-মেরুন ব্রিগেড আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরই ‘আরপি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা’ গোষ্ঠীর কর্ণধার ঘোষণা করেছেন, আগামী মরসুম থেকে ‘মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস’ নামে আইএসএল খেলবে সবুজ-মেরুন শিবির। খেলাধুলোর জগতে কলেবরে বাড়ল সুপার জায়ান্টস পরিবার। দুই থেকে তিন হল তারা।

Advertisement

ভারতীয় ফুটবল থেকে পাকাপাকি ভাবে মুছে গেল এটিকে। সেই জায়গায় এল সুপার জায়ান্টস। মোহনবাগানের নামের সঙ্গে জুড়ে থাকল বিনিয়োগকারী সংস্থার নাম। কিন্তু সুপার জায়ান্টস কেন? সঞ্জীব জানিয়েছেন, তাঁর আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লখনউ সুপার জায়ান্টসের সঙ্গে মিল রেখেই নাম রেখেছেন আইএসএল দলের।

বরাবরই ক্রীড়াপ্রেমী হিসাবে পরিচিত সঞ্জীব। কলকাতার শিল্পপতি এক সময় কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিকানা নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শাহরুখ খান-জুহি চাওলারা অংশীদারিত্ব বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায়, তাঁর সেই ইচ্ছা পূর্ণ হয়নি। সঞ্জীব অবশ্য দমন করেননি ক্রীড়াক্ষেত্রে বিনিয়োগের ইচ্ছাকে। প্রথমে আইপিএলের রাইজিং পুনে সুপার জায়ান্টস ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি কিনেছিলেন তিনি। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে সে সময় চুক্তিই ছিল দু’বছরের। তাই দু’বছর পর তাঁকে ছাড়তে হয়েছিল আইপিএলের দল। পরে সুযোগ পেয়ে আবারও পা রেখেছেন আইপিএলের মঞ্চে। কিনেছেন লখনউ সুপার জায়ান্টস। যে দলের অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। ক্রিকেটে বিনিয়োগ সঞ্জীব আটকে রাখেননি দেশের মধ্যে। দল কিনেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন টি-টোয়েন্টি লিগেও। সেখানে ডারবান সুপার জায়ান্টসের মালিকানা রয়েছে তাঁর সংস্থার হাতে। সেই সুপার জায়ান্টস গোষ্ঠীতেই এ বার ঢুকিয়ে নিলেন মোহনবাগানকে। ক্রিকেটের সঙ্গে ফুটবলকে মিলিয়ে দিলেন সঞ্জীব।

Advertisement

কলকাতার শিল্পপতির ফুটবলে বিনিয়োগ নতুন নয়। আইএসএলের শুরু থেকেই তিনি সঙ্গে রয়েছেন। প্রথম তাঁর দল ছিল অ্যাটলেটিকো দি কলকাতা। অ্যাটলেটিকো দি মাদ্রিদের সঙ্গে গাঁটছড়া ছিল তাঁর আইএসএল দলের। স্পেনের ক্লাবটি সরে যাওয়ার পর ক্রীড়াপ্রেমী শিল্পপতি হাত মেলান নিজের প্রিয় ক্লাব মোহনবাগানের সঙ্গে। সে সময় সবুজ-মেরুন কর্তারা আইএসএল খেলার জন্য বিনিয়োগকারী খুঁজছিলেন। অন্য দিকে, অ্যাটলেটিকো দি মাদ্রিদ সরে যাওয়ায় কিছুটা সমস্যায় পড়েন সঞ্জীব। সেই সুযোগে কাছাকাছি আসে মোহনবাগান এবং সঞ্জীব।

২০২০ সালের ১০ জুলাই মোহনবাগানের সঙ্গে সংযুক্তি হয় এটিকের। দলের নাম হয় এটিকে মোহনবাগান। কিন্তু এই নাম নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি ছিল সবুজ-মেরুন সমর্থকদের একাংশের। তাঁরা মোহনবাগানের নামের সামনে থেকে এটিকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন। প্রথম প্রথম সেই দাবিতে কান দেননি দলের কর্তারা। ২০২২ সাল এটিকে-বিরোধী স্বর ক্রমশ বাড়তে থাকে। বার বার বিক্ষোভের মুখে পড়েন বাগান কর্তারা। ক্লাবের তাঁবুতে বিক্ষোভ দেখান সমর্থকরা। যুবভারতীতে ম্যাচ চলাকালীন দেখা যায় পোস্টার, ব্যানার। বিক্ষোভের মুখে পড়ে বাগান সচিব দেবাশিস দত্ত দাবি করেন, মোহনবাগানের নামের শুরু থেকে এটিকে সরে যাবে। কিন্তু বাস্তবে সেটা না হওয়ায় বিক্ষোভ জারি থাকে। শেষ পর্যন্ত শনিবার সঞ্জীব নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন মোহনবাগান নামের আগে এটিকে মুছে দেওয়ার কথা।

আইপিএলে সঞ্জীবের দল এখনও তেমন সাফল্য পায়নি। যদিও ফুটবল মাঠে এই নিয়ে চার বার চ্যাম্পিয়ন হল তাঁর দল। ফুটবল মাঠের সাফল্যের দৌড় ক্রিকেট মাঠে পৌঁছে দিতেই হয়তো সঞ্জীব মোহনবাগানের নামের সঙ্গে জুড়ে দিলেন ক্রিকেটের ছোঁয়া। একই সঙ্গে শেষ করে দিলেন মোহনবাগান সমর্থকদের ‘রিমুভ এটিকে’ আন্দোলন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement