বিশ্ব ক্রিকেটে বেশ কিছু বছর ধরে ‘ফ্যাব ফোর’ কথাটা খুব পরিচিত। অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ, ইংল্যান্ডের জো রুট, নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন এবং ভারতের বিরাট কোহলী। এই চার জনকে এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা চার ব্যাটার বলে মেনে নিয়েছেন অনেকে। পাকিস্তান ভক্তরা এই তালিকায় বাবর আজমকেও রাখার কথা বলেন। কিন্তু বিশ্ব ক্রিকেটে এঁরাই কি সেরা?
কোহলীদের সেরা সময় শেষ? —ফাইল চিত্র
শততম টেস্ট খেলতে নেমে মোহালিতে ষষ্ঠ বলে একটা স্ট্রেট ড্রাইভ মারেন বিরাট কোহলী। চোখ জুড়িয়ে দেওয়া সেই শট দেখে বিরাট-ভক্তদের মনে বড় রানের আশার প্রদীপ জ্বলে উঠেছিল। কিন্তু লসিথ এমবুলদেনিয়ার ফুল লেংথ বল যখন বিরাটকে অবাক করে স্টাম্পটা ভেঙে দিল, তখন বিরাট যেমন হতাশ হয়ে পিচের দিকে তাকাচ্ছিলেন, তেমনই হতাশ হয়েছিলেন সমর্থকরা।
২৩ নভেম্বর, ২০১৯। ইডেনের মাঠে শতরান করেছিলেন বিরাট কোহলী। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গোলাপি বলের সেই টেস্ট শতরানের পর যে শতরানের খরা শুরু হয়েছে, আড়াই বছর কেটে গেলেও তা কাটার কোনও লক্ষ্মণ নেই।
বিশ্ব ক্রিকেটে বেশ কিছু বছর ধরে ‘ফ্যাব ফোর’ কথাটা খুব পরিচিত। অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ, ইংল্যান্ডের জো রুট, নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন এবং ভারতের বিরাট কোহলী। এই চার জনকে এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা চার ব্যাটার বলে মেনে নিয়েছেন অনেকে। পাকিস্তান ভক্তরা এই তালিকায় বাবর আজমকেও রাখার কথা বলেন। কিন্তু বিশ্ব ক্রিকেটে এঁরাই কি সেরা?
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
দেখে নেওয়া যাক বিরাটের শেষ শতরানের পর বাকি চার ব্যাটারের থেকে কতটা এগিয়ে বা পিছিয়ে তিনি। এই সময়ের মধ্যে ১৭টি টেস্ট খেলেছেন বিরাট। ৮৪১ রান করলেও শতরান নেই। এক দিনের ম্যাচ খেলেছেন ২১টি। ৭৯১ রান করেছেন। টেস্টে গড় ২৮.০৩, এক দিনের ক্রিকেটে গড় ৩৭.৬৬।
ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক জো রুট এই সময়ের মধ্যে সব চেয়ে বেশি টেস্ট খেলেছেন। ২৮টি টেস্টে রুট করেছেন ২৬৬৬ রান। তিনটি দ্বিশতরান করেছেন তিনি। গড় ৫৫.৫৪।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
স্মিথ খেলেছেন ১৫টি টেস্ট। একটি শতরান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। করেছেন ৯৫৭ রান। ১০টি এক দিনের ম্যাচে তিনি করেছেন ৫৬৮ রান। টেস্টে গড় ৪১.৬০, এক দিনের ক্রিকেটে গড় ৬৩.১১। স্মিথ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ১৮টি। করেছেন ৩০৯ রান, গড় ২৩.৭৬। নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক উইলিয়ামসন এই সময়ের মধ্যে খেলেছেন ১১টি টেস্ট। দু’টি দ্বিশতরান-সহ তাঁর সংগ্রহ ১০৫৮ রান। গড় ৬২.২৩। এক দিনের ম্যাচ খেলেছেন মাত্র দু’টি। টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ১৭টি। তাঁর সংগ্রহ ৫১৬ রান। গড় ৩৬.৮৮।
পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর খেলেছেন ১৭টি ম্যাচ। ৪টি শতরান-সহ তাঁর সংগ্রহ ১৩৮৯ রান। ৯টি এক দিনের ম্যাচে তিনি করেছেন ৬২৬ রান। গড় ৭৮.২৫। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তিনি খেলেছেন ৩৭টি ম্যাচ। একটি শতরান-সহ তিনি করেছেন ১২১৫ রান। বাবরের গড় ৪০.৫০।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
টেস্ট গড়ে বাকি চার জনের থেকে অনেকটা পিছিয়ে বিরাট। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাকিদের থেকে গড় অনেকটাই বেশি ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের। কিন্তু এই পাঁচ জন কি এখনও ক্রিকেটের সেরা ব্যাটার? পরিসংখ্যান দেখলে উঠে আসছে আরও কিছু নাম।
২৩ নভেম্বর ২০১৯ থেকে এখনও পর্যন্ত টেস্টে সব চেয়ে বেশি রান এসেছে রুটের ব্যাট থেকে। তিনি করেছেন ২৬৬৬ রান। এর পর তালিকায় আছেন মার্নাস লাবুশানে (১৬০৬ রান), বাবর আজম (১৩৮৯), দিমুথ করুণারত্নে (১২৯৯ রান) এবং আজহার আলি (১২১৩ রান)। এক দিনের ক্রিকেটে রানের বিচারে প্রথম পাঁচের মধ্যে রয়েছেন আয়ারল্যান্ডের পল স্টারলিং (১০০৯ রান), ওয়েস্ট ইন্ডিজের শাই হোপ (৯৫৩ রান), লোকেশ রাহুল (৯৩০ রান), তামিম ইকবাল (৮০৫ রান) এবং বিরাট কোহলী (৭৯১ রান)। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রানের তালিকায় শীর্ষে মহম্মদ রিজওয়ান। তাঁর সংগ্রহ ১৪৫৯ রান। দ্বিতীয় স্থানে বাবর আজম। তিনি করেছেন ১২১৫ রান। তৃতীয় স্থানে থাকা নিকোলাস পুরান করেছেন ৯১৯ রান। জস বাটলার করেছেন ৮৮০ রান। পঞ্চম স্থানে রয়েছেন মার্টিন গাপ্টিল। তিনি করেছেন ৮৬৩ রান।
একটা সময় সেরা ব্যাটারদের নাম নিলেই যেমন উঠে আসত ফ্যাব ফোর বা ফাইভের নাম, এখন সেই তালিকায় রয়েছেন একাধিক জন। তবে কি বিরাট কোহলীদের সেরা সময় শেষ?