(বাঁদিকে) নবীন উল হক এবং বিরাট কোহলি। ছবি: সংগৃহীত।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরাট কোহলি এবং লখনউ সুপার জায়ান্টসের নবীন উল হকের বিবাদে সরগরম হয়েছিল আইপিএল। বিশ্বকাপে বুধবার আবার মুখোমুখি হয়েছিলেন দুই ক্রিকেটার। দিল্লির দর্শকেরা প্রথম থেকেই কোহলির পাশে ছিলেন। নবীন বল করতে এলেই তাঁরা ‘কোহলি, কোহিল’ বলে চিৎকার করছিলেন। সেই চিৎকার থামিয়ে দিলেন দিল্লির ঘরের ছেলে নিজেই।
বুধবার ভারতের কোহলি এবং আফগানিস্তানের নবীন হাত মিলিয়ে নিলেন হাসি মুখে। পরস্পরের পিঠ চাপড়ে দিলেন। কোথায় লড়াই? কোথায় রাগ? বিশ্বকাপের মঞ্চে উধাও সব।
নিজের নামাঙ্কিত প্যাভিলিয়ন থেকে ব্যাট কোহলি বেরিয়ে আসতেই দিল্লির গ্যালারি তীব্র চিৎকারে স্বাগত জানিয়েছে তাঁকে। টেলিভিশনের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে নবীনের মুখ। দু’জনেই স্বাভাবিক। গ্যালারির উচ্ছ্বাস, তাঁদের প্রভাবিত করতে পারেনি। না। বোধহয় পেরেছিল কোহলিকে। নবীনকে শুরু থেকেই দেখে খেলছিলেন তিনি। নবীনও লাইন, লেংথ ঠিক রেখে বল করার চেষ্টা করছিলেন। ব্যাট-বলের লড়াই জমছিল না। গ্যালারি তাতানোর চেষ্টা করলেও লাভ হচ্ছিল না। কিছু ক্ষণ এ ভাবে চলার পর ভাব করে নিলেন কোহলি এবং নবীন। বিশ্বকাপের মঞ্চে পিছনে পড়ে রইল আইপিএলের ঝগড়া। দু’জনের লড়াই দেখতে মুখিয়ে থাকা দিল্লির দর্শকদের কোহলি হাত দেখিয়ে চুপ করতে বললেন। আর নবীনকে বিদ্রুপ নয়। যেন বলতে চাইলেন, আর পিছনে নয় সামনে তাকানোর সময়। ক্রিকেটের লড়াই ২২ গজে বন্দি থাকুক। বজায় থাকুক ব্যক্তিগত সৌজন্য। খেলা শেষ হওয়ার পর আবার পরস্পরকে জড়িয়ে ধরেন তাঁরা।
কোহলি এবং নবীন যখন বিরোধ ভুলে পরস্পরের পিঠ চাপড়ে দিচ্ছেন, সেই দৃশ্য দেখলেন ধারাভাষ্যকার গৌতম গম্ভীর। তাঁদের ঝগড়ায় তিনিও ছিলেন সক্রিয় ভূমিকায়। আইপিএলের লখনউ ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির মেন্টর গম্ভীরের হাতে তখন মাইক্রোফোন। কথা বলতেই হল তাঁকে। গম্ভীর বললেন, ‘‘প্রত্যেক খেলোয়াড় লড়াই করে দলের জন্য। লড়াই করে দেশের জন্য। লড়াই করে সতীর্থদের জন্য। লড়াই করে সাজঘরের জন্য। সেই লড়াই খেলার। ব্যক্তিগত লড়াই কখনও কাম্য নয়। সমাজমাধ্যমে কোনও খেলোয়াড়কে বিদ্রুপ করা উচিত নয় ক্রীড়াপ্রেমীদেরও।’’
ধারাভাষ্যকার গম্ভীর এ দিন ভারতের ছিলেন না। আফগানিস্তানের তো নন-ই। তিনি নিরপেক্ষ। তাই পক্ষ নেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না। ক্রিকেট ছাড়া পক্ষ নেওয়ার মতো আসলে কিছু ছিলও না। কোহলির সঙ্গে তাঁর দূরত্ব কতটা কমল, তা বোঝা যাবে আগামী দিনে। তবে বিরাট বন্ধুত্বে নবীন যুগের শুরু দেখল বিশ্বকাপ। আরসিবি-এলএসজি লড়াই মুখ থুবড়ে পড়ল ভারত-আফগানিস্তান ক্রিকেট মৈত্রীর সামনে।