বিসিসিআই সচিব জয় শাহ। —ফাইল চিত্র।
আইপিএলের সাফল্যের পর আর একটি নতুন প্রতিযোগিতার পরিকল্পনা করছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। ২০২৪ সাল থেকে শুরু হতে পারে নতুন এই প্রতিযোগিতা। বিশ্বকাপ মিটতেই নতুন প্রতিযোগিতার পরিকল্পনায় ব্যস্ত বোর্ড কর্তারা।
আর ২০ ওভার নয়। জয় শাহ, রজার বিন্নিদের চোখ এ বার ১০ ওভারে। সূত্রের খবর, আগামী বছর থেকে শুরু হতে পারে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নতুন টি-টেন প্রতিযোগিতা। সূত্রের খবর, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে হতে পারে বোর্ডের নতুন টি-টেন প্রতিযোগিতা।
নতুন প্রতিযোগিতা শুরু করা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বিসিসিআই। বিষয়টি রয়েছে পরিকল্পনার স্তরে। টি-টেন প্রতিযোগিতা নিয়ে আগ্রহ মূলত বোর্ড সচিব জয়ের। তিনি নিজেই নতুন প্রতিযোগিতার নকশা তৈরি করছেন বলে জানা গিয়েছে। আইপিএলের বিপুল অর্থনৈতিক সাফল্য তাঁকে নতুন প্রতিযোগিতা নিয়ে আগ্রহী করে তুলেছে।
বোর্ড কর্তারা অবশ্য চাইলেই নতুন টি-টেন প্রতিযোগিতা শুরু করতে পারবেন না। এর জন্য আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির সম্মতি প্রয়োজন। নিয়ম অনুযায়ী, বিসিসিআই আইপিএলের সমগোত্রীয় কোনও প্রতিযোগিতা শুরু করতে চাইলে, তাতে ফ্যাঞ্চাইজ়িগুলি আপত্তি বা প্রত্যাখ্যান করতে পারে। আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতেই রয়েছে এই নিয়ম। তাই জয়রা ১০ ওভারের নতুন প্রতিযোগিতা শুরু করতে চাইলে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির সম্মতি প্রয়োজন।
সূত্রের খবর, নতুন পরিকল্পনা নিয়ে ইতিমধ্যেই আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন জয়। মনে করা হচ্ছে, সম্মতি পেতে অসুবিধা হবে না। নতুন প্রতিযোগিতায় দল কেনার ক্ষেত্রে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলিকেই প্রথম সুযোগ দেওয়া হতে পারে।
আরও একটি চিন্তা রয়েছে বোর্ড কর্তাদের। তা হল, আইপিএলের জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ণ রাখা। গত ১৫ বছরে আইপিএলের যে ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ বা প্রতিযোগিতার মূল্য তৈরি হয়েছে, তা নতুন প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে প্রথম থেকে হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু ১০ ওভারের প্রতিযোগিতা শুরু হলে আইপিএলের আকর্ষণ এবং মূল্য কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যা কাম্য নয়। তাই বোর্ড কর্তারা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অর্থনৈতিক দিকটিও খতিয়ে দেখতে চাইছেন।
নতুন প্রতিযোগিতা শুরুর বিষয়টি কেন এল বোর্ড সচিবের ভাবনায়? বিসিসিআইয়ের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এখন দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় আয়োজন করে বিশেষ লাভ হয় না। বরং অনেক সময় তহবিলের টাকা খরচ করে সিরিজ় আয়োজন করতে হয়। তেমন আয় নেই মহিলাদের ক্রিকেট থেকেও। এ ভাবে চলতে থাকলে কমতে শুরু করবে বিসিসিআইয়ের আর্থিক সঙ্গতি। নতুন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় আয়োজনের ফলে তৈরি হওয়া ঘাটতি মেটানোর পাশাপাশি আয় বৃদ্ধিই লক্ষ্য।
আগেই আইপিএলে বিনিয়োগ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে সৌদি আরব। নতুন টি-টেন প্রতিযোগিতাতেও বিদেশি বিনিয়োগ আসতে পারে বলে মনে করছেন বোর্ড কর্তারা। যদিও কী ভাবে এই প্রতিযোগিতা হবে, কারা খেলবেন, অতিরিক্ত ক্রিকেটের চাপ কী ভাবে সামাল দেওয়া যাবে, বিদেশি ক্রিকেট বোর্ডগুলি দু’বার খেলোয়াড়দের ছাড়তে রাজি হবে কি না— এমন নানা প্রশ্ন রয়েছে। সে সব নিয়ে এখন ভাবছেন না জয়। আর্থিক লাভের বিষয়টি নিশ্চিত করা গেলে তবেই বাকি বিষয়গুলি নিয়ে এগোতে চান বোর্ড সচিব।
বিসিসিআইয়ের কোনও কর্তা নতুন প্রতিযোগিতার ভাবনা নিয়ে সরকারি ভাবে মুখ খোলেননি। কারণ পুরো বিষয়টি রয়েছে একদম প্রাথমিক স্তরে। যদিও বিসিসিআইয়ের একটা অংশ মনে করছে, সচিবের ইচ্ছা অপূর্ণ থাকবে না। আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরেই ভারতের মাটিতে শুরু হয়ে যাবে ১০ ওভারের ক্রিকেট।