ইডেন গার্ডেন্সে কোন কর্তারা বসবেন, তাই নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। ফাইল ছবি
বাংলার ক্রিকেট প্রশাসনের দখল কার হাতে থাকবে? এই প্রশ্নের জবাব এ বার সহজে না-ও মিলতে পারে। কারণ, বাংলার ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা সিএবি-র নির্বাচনে জোর লড়াইয়ের ইঙ্গিত। নিজেদের ঘুঁটি সাজাতে সোমবার বিরোধী গোষ্ঠীর কর্তারা বৈঠকে বসেছিলেন।
একটি সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেল, কলকাতার একটি ক্লাবে বৈঠকে বসেন গৌতম দাশগুপ্ত, বিশ্ব মজুমদার, সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়, বাবলু গঙ্গোপাধ্যায়, বিশ্বরূপ দে-সহ আরও বেশ কয়েক জন কর্তা। সেখানেই সিএবি-র নির্বাচনে তাঁরা কোন ছকে লড়বেন, তার প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়।
বিরোধীদের সব থেকে বড় হাতিয়ার, বাংলা ছেড়ে একাধিক ক্রিকেটারের অন্য রাজ্যে চলে যাওয়া। সিএবি-র এক প্রাক্তন সচিব বললেন, ‘‘অশোক ডিন্ডা, ঋদ্ধিমান সাহা, শ্রীবৎস গোস্বামী, সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের মতো ক্রিকেটার বাংলা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। বাংলা ক্রিকেটে এরকম আগে কখনও ঘটেনি। আমরা সবার আগে চাইছি, বাংলার ক্রিকেটের কোল যেন খালি না হয়। পুজোয় মা দুর্গার কাছে এটাই প্রার্থনা করলাম। মা তো জানেন না বাংলার ক্রিকেটে কী হচ্ছে। ক্রিকেটাররা বাংলা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। আর এতে যাঁরা সাহায্য করছেন তাঁরা পুরস্কৃত হচ্ছেন। আমরা থেমে থাকব না। যে দরবারে কড়া নাড়লে সুবিচার পাওয়া যাবে, সেখানে পৌঁছে যাব।’’
বৈঠকের পরে বিরোধী গোষ্ঠীর তিন কর্তা সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়, গৌতম দাশগুপ্ত, বিশ্বরূপ দে। নিজস্ব চিত্র
বাংলার এক প্রাক্তন ক্রিকেটার এবং বর্তমানে বাংলার একটি দলের কোচ বললেন, ‘‘একেবারে সাধারণ স্তর থেকে উঠে আসা এক প্রশাসকই আমাকে তুলে এনেছিলেন। আমরা যখন খেলতাম, তখন এটাই হত। দীর্ঘ দিন ধরে তাঁদের প্রশাসনিক কাজ দেখেছি। আমার মনে হয় এরকম মানুষদেরই প্রশাসক হিসাবে আসা উচিত।’’ তিনি চান না, প্রাক্তন ক্রিকেটাররা প্রশাসনে আসুন। তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘খেলোয়াড়রা প্রশাসনে এলে প্রশাসনিক কাজে সেই দক্ষতা আনতে পারেন না।’’ ঘটনা হল, ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষ পদে রয়েছেন। তাঁর দাদা এবং প্রাক্তন ক্রিকেটার স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় এই মুহূর্তে সিএবি-র সচিব।
এই ব্যাপারে বিরোধী গোষ্ঠীর হাতে রয়েছে টাউন ক্লাবের ক্রিকেটার সক্ষম চৌধুরীর উদাহরণ। তাদের দাবি, টাউনের এই ক্রিকেটার গত ১ বছর ধরে কোনো ম্যাচের মধ্যে ছিলেন না, অথচ বাংলার অনুর্দ্ধ ২৫-এর ১৯ জনের দলে সুযোগ পান। ঘটনাটি সচিবের নজরে আসায় তাঁকে তৎক্ষণাৎ বাদ দেওয়া হয়। বিরোধীদের দাবি, সিএবির কোনো এক কর্তার অঙ্গুলিহেলনে এরকম হয়েছিল। বিরোধীদের বক্তব্য, তাঁদের হাতে এরকম বহু ঘটনার প্রমাণ রয়েছে।
সম্ভবত ৩১ অক্টোবর সিএবি-র বার্ষিক সাধারণ সভা এবং নির্বাচন হবে।