বৃহস্পতিবার জেতার পরে জ়িম্বাবোয়ে ক্রিকেট দলের উল্লাস। ছবি: পিটিআই
পাকিস্তানকে হারিয়ে এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অঘটন ঘটিয়েছে জ়িম্বাবোয়ে। বাঁধভাঙা উল্লাসের মাঝে তারা ফিরে গিয়েছে ছ’বছর আগের একটি ঘটনায়। সেই অপমানের জবাব দিতে কোমর বেঁধে নেমেছে জ়িম্বাবোয়ে।
২০১৬ সালে জ়িম্বাবোয়ের হারারেতে একটি কৌতুক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ‘মিস্টার বিন’-খ্যাত কৌতুকাভিনেতা রোয়ান অ্যাটকিনসনের আসার কথা ছিল। কিন্তু তিনি আসেননি। যাঁরা সেই সময় ১০ ডলার খরচ করে মিস্টার বিনকে দেখতে গিয়েছিলেন, তাঁদের সামনে শেষ পর্যন্ত হাজির করানো হয় পাকিস্তানের কৌতুকাভিনেতা আসিফ মহম্মদকে।
হারারে ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারের দর্শকরা মুখ বুজে এই বঞ্চনা, অপমান সহ্য করে নিয়েছিলেন। হয়তো তাঁরা সুযোগ এবং সময়ের অপেক্ষায় ছিলেন। এ বারের বিশ্বকাপে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানকে জ়িম্বাবোয়ে হারাতেই সে দেশের প্রেসিডেন্ট এমার্সন ডামবুজো মাঙ্গাগোয়া টুইট করে লেখেন, ‘‘দুর্দান্ত জয় জ়িম্বাবোয়ের। পরের বার আসল মিস্টার বিনকে আমাদের দেশে পাঠাবেন।’’
সুযোগ হাতছাড়া করেননি বীরেন্দ্র সহবাগও। জ়িম্বাবোয়ের প্রেসিডেন্টের টুইটের জবাব দিয়ে ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার লিখেছেন, ‘‘মিস্টার প্রেসিডেন্টও চুপ থাকতে পারলেন না।’’
গত রবিবার প্রথমে ভারতের বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে হারের পরে বৃহস্পতিবার জ়িম্বাবোয়ের কাছেও হারে বাবর আজ়মের পাকিস্তান। প্রথমে ব্যাট করে ১৩০ রান করে জ়িম্বাবোয়ে। কিন্তু সেই রান তাড়া করতে গিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান। পর পর উইকেট হারাতে থাকে তারা। শেষ পর্যন্ত ১ রানে হারতে হয় বাবরদের।
প্রথমে ব্যাট করে ১৩০ রান করে জ়িম্বাবোয়ে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি পাকিস্তানের। দুই ওপেনার বাবর ও রিজ়ওয়ান ছন্দে ছিলেন না। বাবর ৯ বলে ৪ রান করে আউট হন। রিজ়ওয়ান করেন ১৬ বলে ১৪ রান। ভারতের বিরুদ্ধে অর্ধশতরান করা ইফতিকার আহমেদও ৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন।
তিন উইকেট পড়ে গেলেও এক দিকে ভাল খেলছিলেন শান মাসুদ। আগের দিনের ছন্দেই খেলছিলেন তিনি। শাদাব খানের সঙ্গে জুটি বাঁধার চেষ্টা করেন তিনি। খুব বেশি বড় শট মারতে না পারলেও এক-দু’রান করে স্কোরবোর্ড সচল রাখেন তিনি। দু’জনের মধ্যে ৫০ রানের জুটি হয়। দেখে মনে হচ্ছিল, ম্যাচ পাকিস্তানের হাতে। কিন্তু তখনই অঘটন। সিকন্দর রাজার ওভারে একটি ছক্কা মারার পরে আরও একটি ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন শাদাব। তিনি ১৭ রান করেন। পরের বলেই হায়দার আলিকে আউট করেন সিকন্দর। খেলা আবার ঘুরে যায়। সিকন্দরের পরের ওভারে ৪৪ রান করে স্টাম্প আউট হন মাসুদ।
শেষ ওভারে পাকিস্তানের জিততে দরকার ছিল ১১ রান। একটি চার মারেন ওয়াসিম। ২ বলে জেতার জন্য ৩ রান দরকার ছিল। কিন্তু নওয়াজ় আউট হয়ে গেলে ১ বলে ৩ রান করতে হত পাকিস্তানকে। শেষ বলে ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট হন শাহিন আফ্রিদি। ১ রানে ম্যাচ হারে পাকিস্তান।