এশিয়া কাপের ব্যর্থতার পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফল করতে চান রোহিতরা। ফাইল ছবি।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল ভারত। সেই দলের ১০ জন ক্রিকেটার এ বারের দলেও রয়েছেন। পাঁচ জন ক্রিকেটার এ বারের দলে সুযোগ পাননি। এসেছেন পাঁচ নতুন মুখ। রোহিত শর্মার দলটি এ বার চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে?
২০২১ সালে অধিনায়ক ছিলেন বিরাট কোহলী। সহ-অধিনায়ক ছিলেন রোহিত। এ বার নেতৃত্ব রোহিতের কাঁধে। সহ-অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। এই পরিবর্তন ছাড়াও বদলে গিয়েছে ক্রিকেটারদের নাম। আগের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে ছিলেন ঈশান কিশন, রবীন্দ্র জাডেজা, বরুণ চক্রবর্তী, রাহুল চাহার এবং মহম্মদ শামি। এঁদের কাউকেই এ বার দলে রাখেননি জাতীয় নির্বাচকরা। এক মাত্র শামিকে রাখা হয়েছে ‘স্ট্যান্ড বাই’ হিসাবে।
উইকেট রক্ষক-ব্যাটার ঈশানের বদলে দলে নেওয়া হয়েছে ব্যাটিং অলরাউন্ডার দীপক হুডাকে। আইপিএল এবং ভারতীয় দলের হয়ে ভাল পারফরম্যান্সের জন্যই হুডাকে দলে নেওয়া হয়েছে। দু’বছর ধরে ভাল ছন্দে রয়েছেন বডোদরার অলরাউন্ডার। ঈশান বাঁহাতি ওপেনার। আগ্রাসী ব্যাটিং করতে পারেন। উইকেটরক্ষাও করেন। হুডাও আগ্রাসী ব্যাটার। সঙ্গে বল হাতেও কার্যকর তিনি।
অলরাউন্ডার জাডেজার জায়গায় দলে এসেছেন উইকেট রক্ষক-ব্যাটার দীনেশ কার্তিক। এশিয়া কাপের মাঝে চোট পেয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছেন জাডেজা। তাঁর জায়গায় এসেছেন কার্তিক। দু’জনেই আগ্রাসী ব্যাটার। পাঁচ বা ছয় নম্বরে নেমে ব্যাট হাতে ম্যাচ শেষ করতে পারেন দু’জনেই। কার্তিক অবশ্য জাডেজার মতো বোলিং করতে পারবেন না। ঈশান না থাকায় উইকেট রক্ষকের দায়িত্ব সামলাতে পারবেন তিনি। যদিও জাডেজার ছিটকে যাওয়া নিশ্চিত ভাবেই ভারতের জন্য বড় ক্ষতি।
বরুণের জায়গায় দলে এসেছেন হর্ষল পটেল। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হর্ষল দলের সঙ্গে নেট বোলার হিসাবে গিয়েছিলেন। এ বার রয়েছেন মূল দলে। স্পিনার বরুণের বদলে নেওয়া হয়েছে জোরে বোলার হর্ষলকে। অস্ট্রেলিয়ায় হবে এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সে কথা মাথায় রেখেই দলের বোলিং আক্রমণ অন্য রকম ভাবে সাজিয়েছেন নির্বাচকরা। গত আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে অত্যন্ত সাধারণ পারফরম্যান্সও বরুণের সুযোগ না পাওয়ার অন্যতম কারণ।
গত বিশ্বকাপের দলে ছিলেন চাহার। এ বার এসেছেন যুজবেন্দ্র চহাল। পারফরম্যান্সের ভিত্তিতেই চাহারের জায়গায় দলে এসেছেন চহাল। জাতীয় দল থেকে বাদ যাওয়ার পর নতুন ছন্দে ফিরে এসেছেন চহাল। গত আইপিএলে চহাল নিয়েছেন ২৭টি উইকেট। অন্য দিকে চাহারের সংগ্রহ ছিল ১৪টি উইকেট।
২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে ছিলেন শামি। তার পর থেকেই তাঁকে ২০ ওভারের ক্রিকেটের ভাবনার বাইরে রেখেছেন। চলতি বছরে দেশের হয়ে একটিও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেননি তিনি। যদিও আইপিএলে গুজরাত টাইটান্সের হয়ে ভাল বোলিং করেছেন অভিজ্ঞ জোরে বোলার। তাঁর বদলে নেওয়া হয়েছে অর্শদীপ সিংহকে। আইপিএলে ভাল পারফরম্যান্স করার ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন অর্শদীপ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও দক্ষতার ছাপ রেখেছেন। হাতে রয়েছে কার্যকরী ইয়র্কার। তরুণ জোরে বোলার বাঁহাতি। যা তাঁকে বাড়তি সুবিধা দিয়েছে। দলের জোরে বোলিং আক্রমণের বৈচিত্র্য বাড়াতে অর্শদীপকে বেছে নিয়েছেন নির্বাচকরা।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। এ বার খেলতে হবে অস্ট্রেলিয়ার উইকেটে। সে কথাও বিবেচনা করা হয়েছে দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে। এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠতে না পারা ভারতীয় দল কি পারবে বিশ্বকাপে ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে? জাতীয় নির্বাচকদের দাবি, এ বারের দলে ভারসাম্য অনেক বেশি।