চার ওভারে ১৫ রান দিয়ে এনগিডি তুলে নিলেন ভারতের চারটি উইকেট। ছবি: রয়টার্স
আইপিএলে খেলছেন দীর্ঘ দিন ধরে। ফলে ভারতের অনেক ব্যাটারকেই হাতের তালুর মতো চেনা তাঁর। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে সেটাই কাজে লাগালেন লুনগি এনগিডি। তাঁর বোলিংয়ের দাপটে ধসে গেল ভারতের ইনিংস। চার ওভারে ১৫ রান দিয়ে এনগিডি তুলে নিলেন ভারতের চারটি উইকেট, যার মধ্যে রয়েছেন রোহিত শর্মা, কেএল রাহুল, বিরাট কোহলি এবং হার্দিক পাণ্ড্য।
ভারতের প্রথম সারির চার ব্যাটারকে তুলে নিয়ে সাফল্যের রহস্য ভেদ করেছেন এনগিডি। বলেছেন, “ভারতের মতো দলের বিরুদ্ধে খেলতে নামলে যত কম রানে ওদের আটকে দেওয়া সম্ভব, ততই ভাল। ফলে শুরুর দিকে উইকেট নেওয়া দরকার ছিল আমাদের। আমার যে উচ্চতা, সেটাই সবচেয়ে কাজে লেগেছে বলে মনে হয়। কিছু কিছু বল আবার বাউন্স করেছে। পার্থের মতো পিচে এ ধরনের জিনিস আশা করাই যায়। নিজে যে লেংথে বল করেছি, সেটা নিয়ে খুশি।”
ভারতের পরিকল্পনা তারা আগেই জেনে গিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন এনগিডি। তাঁর কথায়, “আমরা জানতাম ভারতীয় ব্যাটাররা আমাদের জোরে বোলারদের আক্রমণ করবে। তাই ওদের এমন লেংথে বল করতে চেয়েছিলাম যাতে ওরা রান করতে না পারে। কেউ কেউ তার মধ্যেও রান করে গিয়েছে। তবে নিজেদের পরিকল্পনা আমরা কাজে লাগাতে পেরেছি।”
দক্ষিণ আফ্রিকার ২৬ বছরের এই পেসারের জন্ম ডারবানে। এনগিডির বাবা সেখানকার একটি স্কুলের সাফাইকর্মী ছিলেন। তাঁর মা অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। পরিবারে অর্থকষ্ট থাকলেও পড়াশোনার দিকে কখনও ফাঁকি দেননি এনগিডি। বৃত্তি পেয়ে তিনি ভর্তি হন হিল্টন কলেজ স্কুলে। সেখানে তিন বছর রাগবি খেলেন এনগিডি। জ়িম্বাবোয়ের অলরাউন্ডার নীল জনসনের কাছে ক্রিকেটের প্রশিক্ষণ নেন তিনি।
২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার নর্দার্ন ক্রিকেট দলে নেওয়া হয় এনগিডিকে। পরের বছর আফ্রিকা টি-টোয়েন্টি কাপের সেরা ক্রিকেটার হন তিনি। ২০১৭ সালেই দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে অভিষেক হয় এনগিডির। ২০১৮ সালে আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংস কিনে নেয় তাঁকে। একাধিক টি-টোয়েন্টি লিগেও সুযোগ পান দক্ষিণ আফ্রিকা। সে বছর টেস্ট এবং এক দিনের ক্রিকেটেও দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে অভিষেক হয় তাঁর। এখনও পর্যন্ত ১৫টি টেস্ট, ৪০টি এক দিনের ম্যাচ এবং ৩৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দেশের হয়ে খেলে ফেলেছেন এনগিডি। মোট ১৭২টি উইকেট নিয়েছেন।
পার্থে এ দিন সকাল থেকেই ঝোড়ো হাওয়া দিচ্ছিল। তার মধ্যেই ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন। হাওয়ার সাহায্য নিয়ে বল দারুণ সুইং করাচ্ছিলেন রাবাডা, এনগিডিরা। তাতেই ভারতীয় ব্যাটাররা কেঁপে যান। পরিবেশের ফায়দা তুলেই যে সাফল্য পেয়েছেন, সেটা এনগিডির কথাতেও স্পষ্ট।