এক ওভারে খেলার ছবি বদলে দিলেন শামি। —ফাইল চিত্র
অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের ১৯ ওভার পর্যন্ত গ্যালারিতে বসে ছিলেন তিনি। দেখে মনে হচ্ছিল এই ম্যাচে আর নামবেন না। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁর নামা নিয়েও প্রশ্ন উঠছিল। কিন্তু শেষ ওভারে শামির হাতে বল তুলে দিলেন রোহিত শর্মা। তখন অস্ট্রেলিয়ার জিততে দরকার ছিল ১১ রান। ওই এক ওভারেই জ্বলে উঠলেন শামি। শেষ ওভারে ৪ উইকেট পড়ল। তার মধ্যে একটি রানআউট। এক ওভারে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের ছবি বদলে দিলেন বাংলার শামি। শেষ পর্যন্ত ৬ রানে ম্যাচ জিতল ভারত।
বিশ্বকাপে নামার আগে প্রস্তুতি ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ১৮৬ রান করে ভারত। অর্ধশতরান করেন লোকেশ রাহুল ও সূর্যকুমার যাদব। সেই রান তাড়া করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ডেথ ওভারে ভাল বল করলেন ভারতীয় বোলাররা। টান টান ম্যাচে এই জয় বিশ্বকাপে নামার আগে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস জোগাবে রোহিত শর্মাদের।
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে যেখানে শেষ করেছিলেন সেখান থেকেই শুরু করলেন রাহুল। প্রথম বল থেকে আক্রমণাত্মক শট খেলা শুরু করলেন তিনি। প্রথম চার ওভারে মাত্র দু’টি বল খেলার সুযোগ পান অধিনায়ক রোহিত। একাই দলের রানকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন রাহুল। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পরেই মাত্র ২৭ বলে নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করেন তিনি। কিন্তু তার পরেই ছন্দপতন। ৩৩ বলে ৫৭ রান করে আউট হন রাহুল। পরের ওভারেই সাজঘরে ফেরেন রোহিত।
তৃতীয় উইকেটের জন্য জুটি বাঁধেন বিরাট কোহলি ও সূর্যকুমার যাদব। দু’জনকেই বেশ সাবলীল দেখাচ্ছিল। বড় শট মারছিলেন তাঁরা। কিন্তু ১৯ রান করে মিচেল স্টার্কের বাউন্সার সামলাতে না পেরে আউট হন কোহলি। হার্দিক পাণ্ড্য রান পাননি। দীনেশ কার্তিক করেন ২০ রান।
এক দিকে ভাল খেলছিলেন সূর্য। নিজের ছন্দে ব্যাট করছিলেন তিনি। ৩২ বলে নিজের অর্ধশতরান করেন সূর্য। কিন্তু পরের বলেই আউট হয়ে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৬ রান করে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে কেন রিচার্ডসন ৪ উইকেট নেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার নতুন ওপেনিং জুটি ঝড় তোলে। ডেভিড ওয়ার্নার না থাকায় অ্যারন ফিঞ্চের সঙ্গে নামেন মিচেল মার্শ। পাওয়ার প্ল-তে হাত খোলা শুরু করেন দুই ব্যাটার। পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারে ৩৫ রান করে ভুবনেশ্বর কুমারের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন মার্শ। তিন নম্বরে নামা স্টিভ স্মিথ রান পাননি।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে রান করলেন অধিনায়ক ফিঞ্চ। বিশ্বকাপের আগে তাঁর ব্যাটিং নিয়ে অনেক সমালোচনা হচ্ছিল। সে সবের জবাব দিলেন তিনি। অর্ধশতরান করলেন ফিঞ্চ। ডেথ ওভারে ভাল বল করলেও গোটা ম্যাচে ভারতের বোলিং আক্রমণ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেল।
ডেথ ওভারে ম্যাচে ফিরল ভারত। পর পর উইকেট পড়ল অস্ট্রেলিয়ার। ১৮তম ওভারে আরশদীপ সিংহের বলে আউট হন মার্কাস স্টোইনিস। ১৯তম ওভারে ৭৬ রানের মাথায় ফিঞ্চকে আউট করে ভারতের আশা জাগিয়ে তোলেন হর্ষল। পরের বলেই কোহলির দুরন্ত থ্রোয়ে সাজঘরে ফেরেন টিম ডেভিড।
শেষ ওভারে শামির হাতে বল তুলে দেন রোহিত। তৃতীয় বলে বাউন্ডারিতে এক হাতে প্যাট কামিন্সের দুরন্ত ক্যাচ ধরেন কোহলি। পরের বলেই অ্যাস্টন অ্যাগারকে রানআউট করেন শামি। তার পরের বলে জশ ইংলিশকে বোল্ড করেন শামি। শেষ বলে শামির শিকার রিচার্ডসন। ১৮০ রানে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।