আসিফ আলি। ফাইল ছবি
করিম জনতের মাত্র একটি ওভার স্বপ্ন শেষ করে দিল আফগানিস্তানের। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অঘটন প্রায় ঘটিয়েই ফেলেছিল তারা। কিন্তু করিমের ১৯তম ওভারে চারটি ছয় মেরে পাকিস্তানকে জিতিয়ে দিলেন আসিফ আলি। নিউজিল্যান্ড ম্যাচেও যিনি দলকে জিতিয়েছিলেন। পাকিস্তান জিতল ৫ উইকেটে।
২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে বেন স্টোকসের এক ওভারে চার ছক্কা মেরে দলকে জিতিয়েছিলেন কার্লোস ব্রাথওয়েট। শুক্রবার দুবাইয়ের রাত যেন পাঁচ বছর আগের সেই ইডেনের রাত মনে করিয়ে দিল। তবে শেষ ওভার নয়, এ বার জয় এল ১৯তম ওভারে। যে ম্যাচ একসময় মনে হয়েছিল একপেশে হতে চলেছে, তাকেই দুর্দান্ত লড়াই বানিয়ে দিয়েছিলেন মহম্মদ নবি, রশিদ খানরা। কিন্তু করিমের একটা ওভার সমস্ত পরিশ্রমে জল ঢেলে দিল। টানা তিনটি ম্যাচে জয় পেয়ে সেমিফাইনালের দিকে এক পা বাড়িয়েই রাখল পাকিস্তান।
শুক্রবার টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আফগানিস্তান। কিন্তু মহম্মদ নবির সেই সিদ্ধান্ত কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যুমেরাং হয়ে যায়। পাকিস্তান বোলারদের দাপটে শুরু থেকেই একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে আফগানরা। পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই চার উইকেট হারিয়ে ফেলেন নবিরা। ১০ ওভারে মধ্যে মাত্র ৫৯ রানে আফগানিস্তানের অর্ধেক ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরত পাঠিয়ে দেন পাকিস্তান বোলাররা। কয়েকটা খুচরো ফিল্ডিং ব্যর্থতা না হলেও আরও বেশি সাফল্য আসত।
এরপরেই শুরু হয় আফগানিস্তানের ঘুরে দাঁড়ানোর খেলা। গুলবাদিন নাইবকে নিয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন অধিনায়ক নবি। একাধিক উইকেট হারিয়ে সেই মুহূর্তে ধরে খেলার দরকার ছিল। ঠিক সেই কাজটাই করলেন নবি এবং নাইব। ধরে তো খেললেনই, মারার বল পেলে মারলেনও। পাকিস্তানের বোলারদের শেষের দিকে একটু হলেও দিশেহারা দেখাচ্ছিল। সপ্তম উইকেটে দুই ব্যাটার যোগ করলেন ৭১ রান। আফগানিস্তান ৬ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৪৭।
দুবাইয়ের উইকেটে এই রান অনায়াসে তাড়া করে জিতেছে পাকিস্তান। ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচে এর থেকে সামান্য বেশি রান এক উইকেটও না হারিয়ে তুলে নিয়েছিলেন বাবর আজমরা। কিন্তু শুক্রবার প্রথমেই উইকেটকিপার মহম্মদ রিজওয়ানকে হারায় পাকিস্তান। মুজিব উর রহমানের বলে তিনি ক্যাচ দেন নবীনের হাতে। তবে রিজওয়ানকে হারালেও ফখর জমানকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানের ইনিংস টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন বাবর। দু’জনে মিলে দ্বিতীয় উইকেটে ৬৩ রানের জুটি গড়েন। ফখর ফেরার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মহম্মদ হাফিজও (১০)। শোয়েব মালিককে নিয়ে সে সময় ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন বাবর। কিন্তু অর্ধশতরানের পরেই রশিদের দুরন্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান তিনি।
চাপ আরও বেড়ে যায় ১৮তম ওভারে। নবীন উল-হক সেই ওভারে মাত্র দু’রান দেন। সঙ্গে তুলে নেন শোয়েব মালিকের উইকেট। জেতা ম্যাচ তখন কার্যত হাতছাড়া হতে চলেছে পাকিস্তানের। শেষ ২ ওভারে দরকার ছিল ২৪ রান। এরপরেই শুরু হয় আসিফের জাদু। করিমের প্রথম, তৃতীয়, পঞ্চম এবং ষষ্ঠ বলে ছয় মেরে এক ওভারেই ম্যাচ শেষ করে দেন তিনি। ম্যাচেও সেরাও হয়েছেন আসিফ।