ছবি রয়টার্স।
ঘুম থেকে ওঠার পরে জানলার পর্দাটা সরিয়ে দিতেই চোখে পড়ল উজ্জ্বল সূর্য। আরও একবার অন্ধকার রাত শেষে সূর্যোদয় হল। ভারতীয় দলকে এটাই মাথায় রাখতে হবে। পাকিস্তানের কাছে হারের ক্ষত এখনও মিলিয়ে যায়নি। কিন্তু তার মধ্যেও মনে রাখতে হবে, একটা সময় রাত ঠিক শেষ হয়।
অনেকের কাছে বিরাট কোহালির অসাধারণ সব কৃতিত্বে ছায়া ফেলে দেবে অধিনায়ক হিসেবে পাকিস্তানের কাছে বিশ্বকাপে প্রথম হারের ঘটনা। বিরাট খুব উদারচেতা হয়ে স্বীকার করে নিয়েছে, ওই বিশেষ দিনে ভারতকে সব বিভাগে হারিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান এবং এই ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাবে দল। হ্যাঁ মহাশয়রা, ভারত কিন্তু আইসিসি বিশ্বকাপটা এখনও জিততে পারে। কারণ একটা হার মানে দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়া নয়।
ভাল দল ধরাশায়ী হয়ে যাওয়ার পরেও উঠে দাঁড়াতে পারে। খাদের কিনারা থেকে ফিরে আসতে পারে। ভারতের সেই ক্ষমতা আছে। যে কারণে দলের পাশে থাকাটা এখন অত্যন্ত জরুরি। এও বলব, পাকিস্তানের কাছে হারের জন্য কোনও ক্রিকেটারের দিকে আঙুল তোলা বন্ধ করতে হবে।
ভারতকে ধাক্কা দেওয়ার কাজটা প্রথম শুরু করে শাহিন শাহ আফ্রিদি। শুরুতে দুরন্ত একটা স্পেলে ফিরিয়ে দেয় ভারতের দুই ওপেনার— রোহিত শর্মা এবং কে এল রাহুলকে। প্রথম ছ’ওভারের মধ্যে ফিরে যায় সূর্যকুমার যাদবও। অফস্টাম্পের বাইরে ব্যাট চালিয়ে ক্যাচ দিয়েছিল সূর্য।
শরীর ছুড়ে দিয়ে দারুণ একটা ক্যাচ ধরে উইকেটকিপার মহম্মদ রিজ়ওয়ান। এই ম্যাচটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে রিজ়ওয়ানের কাছে। এর পরে ব্যাট হাতে অধিনায়ক বাবর আজ়মের সঙ্গে জুটি বেঁধে পাকিস্তানকে জয় এনে দেয় ও। কোনও উইকেটই পড়তে দেয়নি। এই রকম জয়ের পরে একটা দল মনে করতেই পারে ওরা অপ্রতিরোধ্য।
পাকিস্তানকে এ বার খেলতে হবে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবারের যে ম্যাচে হয়তো অত সমর্থন পাবে না পাকিস্তান। গ্যালারি ফাঁকা থাকতে পারে। কিন্তু তা বলে ঢিলে দিলে চলবে না পাকিস্তানের। মনে রাখতে হবে, নিউজ়িল্যান্ড এমনই একটা দল, যারা নিঃশব্দে এসে আঘাত করতে ভালবাসে। প্রতিপক্ষকে চমকে দিতে ভালবাসে।
মঙ্গলবারের আর একটা ম্যাচে খেলবে প্রথম লড়াইয়ে হেরে যাওয়া দুই দল— দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুটো দলই চাইবে পয়েন্টের খাতা খুলতে। আগের ম্যাচে অল্প রান করেও অস্ট্রেলিয়াকে শেষ ওভার পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এতে ওদের লড়াকু মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায়। অন্য দিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ আগের ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খুব সাধারণ ক্রিকেট খেলেছে। ফিরে আসতে গেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দারুণ কিছু করতে হবে। তবে এটাও বলব, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সেরা কয়েক জন ক্রিকেটার ওয়েস্ট ইন্ডিজের হাতে আছে। একেবারে অসম্ভব পরিস্থিতি থেকে ফিরে আসার ক্ষমতা এই দলটার আছে।
যাই হোক, যে ম্যাচটা ঘিরে উত্তেজনা আর মাতামাতি তুঙ্গে ছিল, সেটা শেষ হয়ে গিয়েছে। যার ফলে বিশ্বকাপ আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। ক্রিকেটপ্রেমীরা এ বার সম্ভবত বুঝতে পারবেন, উপমহাদেশের বাইরেও খুব ভাল কিছু ক্রিকেটার আছে।
(টিসিএম)