শুধুমাত্র ভারত-পাক ম্যাচের জন্যই কেন রিজ়ার্ভ ডে রাখা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ছবি: পিটিআই।
এশিয়া কাপে বিভ্রাট শুরু হয়েছিল প্রবল বৃষ্টির কারণে। কিন্তু তা রাতারাতি বিতর্কে পরিণত হল এশীয় ক্রিকেট কাউন্সিলের একটি ঘোষণায়। শুক্রবার বিবৃতিতে জানিয়ে দেওয়া হয়, রবিবার সুপার ফোর পর্বে ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচে রাখা হচ্ছে রিজ়ার্ভ ডে। অর্থাৎ কোনও কারণে ফের বৃষ্টি কাঁটা হয়ে দাঁড়ালে ম্যাচ হবে সোমবার। আর এমনই বিচিত্র সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ দল।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, কলম্বোতে রবিবার বৃষ্টির সম্ভাবানা ৭০ শতাংশ। সারাদিন বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে। হাওয়ার গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার। কিন্তু শুধুমাত্র ভারত-পাক ম্যাচের জন্যই কেন রিজ়ার্ভ ডে রাখা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আজ, শনিবার সুপার ফোর পর্বে বাংলাদেশ খেলবে আয়োজক শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। তার আগের দিন সাংবাদিক বৈঠকে এসে বাংলাদেশ দলের কোচ চণ্ডীকা হাতুরাসিংহ জানিয়েছেন, হঠাৎ করে কেন এমন পরিবর্তন, তা তিনি বুঝতে পারছেন না। তিনি বলেছেন, ‘‘এশিয়া কাপ পরিচালনার জন্য টেকনিক্যাল কমিটি রয়েছে, যেখানে ছয় দেশের প্রতিনিধি রয়েছেন। তাঁরাই হয়তো এমন একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন!’’ সেখানেই না থেমে শাকিবদের দলের কোচ বলেছেন, ‘‘এটা ঠিক নয়। আমরাও রিজ়ার্ভ ডে চেয়েছিলাম।’’ তাঁর ইঙ্গিত, বাকি দলগুলির মতামত না নিয়েই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সুর শোনা গিয়েছে শ্রীলঙ্কা দলের কোচ ক্রিস সিলভারউডের গলাতেও। তিনি বলেছেন, ‘‘খবরটা শোনার পরে আমি বিস্মিতই হয়ে গিয়েছিলাম। তবে আমরা তো ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজন করি না। ফলে তা নিয়ে কিছু করণীয়ও নেই।’’ তবে তিনি যোগ করেছেন, ‘‘যদি এর পরেও দুই দলের মধ্যে পয়েন্ট ভাগ করে দিতে হয়, তা হলে তার প্রভাব পড়তে পারে আমাদের উপরেও। সেটা সমস্যা তৈরি করতে পারে।’’ শুক্রবার বেশি রাতের দিকে অবশ্য শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ দুই বোর্ডের তরফে টুইট করা হয়, ‘‘সুপার ফোর পর্যায়ে ওঠা চারটি দেশের বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেই ভারত-পাক ম্যাচে রিজ়ার্ভ ডে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
বিতর্কের আবহেই বৃষ্টিবিঘ্নিত এশিয়া কাপের স্থান পরিবর্তন নিয়ে মুখ খুলেছেন সুনীল গাওস্কর। কিংবদন্তি ভারতীয় ব্যক্তিত্ব একটি চ্যানেলে জানিয়েছেন, কলম্বো থেকে হাম্বানটোটায় কেন ম্যাচ নিয়ে যাওয়া হল না, সেটার প্রকৃত কারণ খুঁজে বার করা দরকার। তিনি মনে করেন, এমনও হতে পারে ক্রিকেটারেরা নতুন জায়গায় খেলতে অনিচ্ছাপ্রকাশ করায় আয়োজকদের শেষ মুহূর্তে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
গাওস্কর বলেছেন, ‘‘এমনও হতে পারে ক্রিকেটারেরা হাম্বানটোটায় খেলতে যেতে রাজি হননি বলে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে আয়োজকদের।’’ যোগ করেন, ‘‘আমি কোনও নির্দিষ্ট দলের ক্রিকেটারদের কথা বলছি না। হয়তো সব দলের ক্রিকেটারেরাই সেখানে খেলতে যেতে চায়নি।’’
প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার যোগ করেন, ‘‘আয়োজকদের দিকে আঙুল তোলা সবচেয়ে সহজ। কিন্তু আমি মনে করি এটাও খুঁজে বার করা দরকার যে, বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকার পরেও কেন কলম্বো থেকে ম্যাচগুলো হাম্বানটোটায় নিয়ে যাওয়া হল না।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘সমস্ত দলই চায় তাদের ক্রিকেটারেরা তরতাজা থাকুক। তাদের সমস্ত ধরনের সুযোগ-সুবিধাও দেওয়া হোক। তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে এমন প্রতিকূল পরিস্থিতি তো তৈরি হতেই পারে। সেটা নিয়েও ক্রিকেটারদের ওয়াকিবহাল থাকা উচিত।’’ যদিও গাওস্কর মনে করেন, বৃষ্টিবিঘ্নিত এশিয়া কাপ ক্রিকেটারদের বিশ্বকাপ প্রস্তুতির পথে বড় সমস্যা
তৈরি করবে না।