রোহিত শর্মা (বাঁ দিকে) এবং বাবর আজম। — ফাইল চিত্র।
এশিয়া কাপে দু’বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান। বিশ্বকাপে আবার মুখোমুখি হবে তারা। দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় আবার কবে হবে, তা নিয়ে অনেক দিন ধরেই প্রশ্ন রয়েছে দু’দলের ক্রিকেটার এবং সমর্থকদের মধ্যে। এ বিষয়ে সরকারের মতামত জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। তাঁর স্পষ্ট কথা, পাকিস্তান যত দিন না সীমান্তে সন্ত্রাস বন্ধ করছে তত দিন দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় হওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।
২০০৮-এর পর থেকে দু’দেশের কোনও দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় হয়নি। এখনও শুধু এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপেই মুখোমুখি হয় দুই দল। সম্প্রতি অনন্তনাগে পাকিস্তানের জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। সেই সূত্র ধরে ক্রিকেট ম্যাচের প্রসঙ্গে অনুরাগ শুক্রবার বলেছেন, “বোর্ড বহু দিন আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং সীমান্তে সন্ত্রাস বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কোনও রকম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় খেলা হবে না। এই দেশের যে কোনও সাধারণ মানুষ এটাই চায়।” অর্থাৎ, আগামী দিনেও যে দু’দেশের মধ্যে কোনও সিরিজ় হবে না, তা স্পষ্ট হয়েছে ক্রীড়ামন্ত্রীর কথায়।
সম্প্রতি এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে এবং সুপার ফোরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলেছে ভারত। আগামী ১৪ অক্টোবর আমদাবাদে বিশ্বকাপের ম্যাচ রয়েছে দু’দেশের। কিন্তু দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের জেরে দীর্ঘ দিন ধরেই বন্ধ রয়েছে সিরিজ়। এশিয়া কাপ শুরুর পর পাকিস্তানের আমন্ত্রণে সে দেশে গিয়েছিলেন বোর্ড সভাপতি রজার বিন্নী এবং সহ-সভাপতি রাজীব শুক্ল। পাকিস্তানের আতিথেয়তার প্রশংসা করেন দু’জনেই। কিন্তু দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় নিয়ে প্রশ্ন করাতে বিন্নী বলেছিলেন, “বোর্ড এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারে না। এটা সরকারের ব্যাপার। ওরাই সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা অপেক্ষা করে দেখি।”
প্রসঙ্গত, গত বুধবার দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয় ভারতীয় সেনার কর্নেল, মেজর পদাধিকারীর আধিকারিকদের। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ডেপুটি সুপারিনটেন্ডেন্টও জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানায়, অনন্তনাগের গাড়োল এলাকায় কয়েক জন জঙ্গি লুকিয়ে ছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতেই তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। বুধবার সকাল থেকে ওই জঙ্গিদের সঙ্গেই নিরাপত্তারক্ষীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। চলতে থাকে অবিরত গুলির লড়াই। কোকারনাগ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন দুই সেনাকর্তা এবং এক পুলিশকর্তা-সহ বেশ কয়েক জন।
তাঁদের আকাশপথে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে খবর। কর্নেল, মেজর এবং ডিএসপি জঙ্গিদের গুলিতে গুরুতর ভাবে আহত হয়েছিলেন। তাঁদের শারীরিক অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। শেষ পর্যন্ত তিন জনেরই মৃত্যু হয়। মৃতেরা হলেন কর্নেল মনপ্রীৎ সিংহ, মেজর আশিস ডোনচাক এবং ডিএসপি হুমায়ুন ভট্ট। এঁদের মধ্যে হুমায়ুনের মৃত্যু হয়েছে অত্যধিক পরিমাণে রক্তক্ষরণের জন্য। কর্নেল সিংহ ১৯ রাষ্ট্রীয় রাইফেল্স ইউনিটকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তাঁর উপর নির্বিচারে গুলি চালায় জঙ্গিরা। ঝাঁঝরা হয়ে যায় কর্নেলের দেহ। এই তিন হত্যার দায় স্বীকার করেছে রেসিসট্যান্ট ফ্রন্ট নামের একটি জঙ্গিগোষ্ঠী।