দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট দল। ছবি: টুইটার।
ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ় খেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে পারেন ডিন এলগার। দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট অধিনায়ককেই নাকি আর দলে চাইছেন না কোচ শুকরি কনরাড। যদিও ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বেশ ভাল ফর্মে রয়েছেন এলগার।
দেশের হয়ে সাদা বলের ক্রিকেট খেলার তেমন সুযোগ পাননি। ২০১২ সালে এক দিনের ক্রিকেটে অভিষেক হলেও খেলেছেন মাত্র আটটি ম্যাচ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি তিনি। তবে দেশের হয়ে ৮৪টি টেস্ট খেলেছেন তিনি। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই টেম্বা বাভুমাকে সরিয়ে এলগারকে টেস্ট দলের অধিনায়ক করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বোর্ড। সম্প্রতি ঘরোয়া ক্রিকেটে ছ’টি ইনিংসে ৮০.৪০ গড়ে এলগার করেছেন ৪০২ রান। তবু তাঁকে আর জাতীয় দলে চাইছেন না কোচ। দক্ষিণ আফ্রিকার এক ক্রিকেট কর্তা বলেছেন, ‘‘হয়তো খুব তাড়াতাড়িই আমরা এলগারের অবসরের সিদ্ধান্ত জানতে পারব।’’
ক্রিকেটীয় দক্ষতা অটুট থাকলেও বয়স তাঁর বিপক্ষে যাচ্ছে। ৩৬ বছর বয়স হয়ে গিয়েছে এমন ক্রিকেটারদের ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় রাখছেন না কোচ কনরাড। সেই তালিকায় রয়েছেন এলগারও। বিষয়টি অধিনায়ককে পরিষ্কার করে দিয়েছেন কোচ। ভারতের বিরুদ্ধে দুই টেস্টের সিরিজ় খেলার পর ফেব্রুয়ারিতে নিউ জ়িল্যান্ড সফরে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা। কেন উইলিয়ামসনের দলের বিরুদ্ধেও দুই টেস্টের সিরিজ় খেলার কথা তাদের। তার আগে ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ়ের পরই সম্ভবত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করবেন এলগার।
তা হলে কে হবেন দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন টেস্ট অধিনায়ক? কোচের পছন্দ নেল ব্র্যান্ড। তিনিও এলগারের মতো ওপেনিং ব্যাটার। এখন দক্ষিণ আফ্রিকার ‘এ’ দলের অধিনায়ক। নিউ জ়িল্যান্ডে সফরের দলে ওপেনার হিসাবে তাঁর থাকা এক রকম চূড়ান্ত। এলগার অবসর ঘোষণা করলে ইনিংসের শুরুতে ব্র্যান্ডের সঙ্গী হতে পারেন টনি ডি জ়োরজ়ি।
প্রাপ্য কৃতিত্ব না পাওয়ার আক্ষেপ এবং হতাশা অনেক দিন ধরে রয়েছে এলগারের। বছর পাঁচেক আগে এক সাক্ষাৎকারে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট অধিনায়ক বলেছিলেন, ‘‘অতীতে কখনও ক্রিকেটীয় প্রাপ্তির জন্য আমাকে তেমন কৃতিত্ব দেওয়া হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট প্রেমীদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভাল বলেও মনে হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই আমার কৃতিত্বকে ধামা চাপা দেওয়া হয়েছে। আমার মতো ক্রিকেটার যে সব দলেই প্রয়োজন রয়েছে, সেটা মানুষ আসলে ভুলে যায়।’’ আইপিএল না খেলার জন্যই প্রাপ্য কৃতিত্ব পান না বলে দাবি করেছিলেন এলগার। তিনি বলেছিলেন, ‘‘যারা আইপিএল খেলে, তারা অনেক বেশি কৃতিত্ব পায়। এটা অবশ্যই ওদের প্রাপ্য। আমি আইপিএল খেলি না। তাই সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে ততটা জনপ্রিয় নই। তাঁরা আমার সাফল্যে উচ্ছ্বাসও প্রকাশ করেন না খুব একটা।’’
সম্ভবত সে কারণেই ফর্মে থেকেও নিঃশব্দে বিদায় নিতে চাইছেন এলগার। অবসর নিতে কার্যত বাধ্য করা হলেও বিতর্ক চাইছেন না। ভারতের বিরুদ্ধে দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে নিজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটজীবনের সমাপ্তি ঘোষণা করবেন তিনি। একই সঙ্গে শেষ হবে দেশের টেস্ট অধিনায়ক হিসাবে ১১ মাসের কার্যকাল।