ইতিহাসের পাতায় শ্রেয়সের নাম। ছবি: এএফপি
ভারতীয় ক্রিকেটে শ্রেয়স আয়ারকে জন্ম দিয়েছিলেন প্রবীণ আমরে। ২০ বছরের তরুণ শ্রেয়সকে কানপুরের গ্রিন পার্কের সবুজে নামিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সুযোগ ছাড়েননি শ্রেয়স। ৭ বছর পর সেই গ্রিন পার্ক। আন্তর্জাতিক মঞ্চে টেস্ট অভিষেক। নেমেই শতরান করে ঢুকে পড়লেন ইতিহাসের পাতায়।
শ্রেয়সকে ১২ বছর বয়স থেকে চেনেন আমরে। জানেন শ্রেয়সের মধ্যে কী ধরনের প্রতিভা লুকিয়ে রয়েছে। ২০১৪ সালে রঞ্জি ম্যাচে প্রথম নামেন জম্মু কাশ্মীরের বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচে রান করতে পারেননি। দুই ইনিংস মিলিয়ে মাত্র ৮ রান করেছিলেন শ্রেয়স। সেই শ্রেয়সকেই তারপর কানপুরের ম্যাচের আগে আমরে বলেন, “কাল কিছু করো। শেষ দুই ম্যাচ ধরে তো অন্যদের জন্য হাততালি দিয়ে যাচ্ছ। মাঠে নেমে খেলো, মানুষ তোমার জন্য হাততালি দেবে।”
কোচকে নিরাশ করেননি শ্রেয়স। সে দিন ৭৫ রান করে দলে নিজের জায়গা যেমন বাঁচিয়ে ছিলেন, তেমনই আমরের চাকরিও বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। আর ফিরে তাকাতে হয়নি শ্রেয়সকে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট এখনও অবধি ৫৪টি ম্যাচ খেলে করেছেন ৪৫৯২ রান। গড় ৫২.১৮। রয়েছে ১২টি শতরান। দ্বিশতরানও করেছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে।
৭ বছর পর আবার সেই কানপুর। বিরাট কোহলীর অনুপস্থিতিতে শ্রেয়সকে গ্রিন পার্কে নামিয়ে দিলেন রাহুল দ্রাবিড়রা। খুব ভুল যে করেননি তা বুঝিয়ে দিলেন শ্রেয়স। অভিষেক ম্যাচে ১৭১ বলে ১০৫ রানের ইনিংস খেললেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সুনীল গাওস্করের হাত থেকে টুপি নিয়ে সাদা জামা পরে মাঠে নেমেন মুম্বইয়ের এই ব্যাটার। তবে বছরের শুরুর দিকে এটা বোধ হয় ভাবতেই পারতেন না শ্রেয়স। পুণেতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এক দিনের ম্যাচ খেলার সময় কাঁধে চোট পান তিনি। আইপিএল-এর প্রথম পর্বে খেলতেও পারেননি।
ইংল্যান্ডে কাঁধের অস্ত্রোপচার করা হয় শ্রেয়সের। ল্যাঙ্কশায়ারের হয়ে রয়্যাল লন্ডন কাপে খেলার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। আইপিএল-এ তাঁর বদলে দিল্লির অধিনায়কত্ব করেন ঋষভ পন্থ। চোটের জন্য দীর্ঘ সময় ক্রিকেট থেকেই দূরে সরে থাকতে হয় শ্রেয়সকে। আইপিএল-এর দ্বিতীয় পর্বে দলে ফেরেন তিনি। তবে অধিনায়ক রাখা হয় পন্থকেই।
বুধবার ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন শ্রেয়স। সেখানে দেখা যাচ্ছে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রয়েছেন তিনি। সেখান থেকে ছবিটি পাল্টে যাচ্ছে তাঁর টেস্ট জার্সিতে। এই ভাবেই যেন পাল্টে গেল তাঁর ভাগ্য। কাঁধের চোটে একাধিক ম্যাচ খেলতে না পারা শ্রেয়সই এখন কানপুর টেস্টের মূল আলোচনার বিষয়।