শাহিন আফ্রিদি (বাঁ দিকে) এবং বাবর আজম। — ফাইল চিত্র।
রবিবার সকালেই অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। পাকিস্তানের সাদা বলের দলে অধিনায়ক হিসাবে ফিরেছেন বাবর আজ়ম। আর সে দিনই সন্ধ্যায় নীরবতা ভাঙলেন শাহিন আফ্রিদি। পাকিস্তানের বরখাস্ত অধিনায়ক জানিয়েছেন, বাবরের পাশেই থাকবেন। কোনও বিতর্কের রাস্তায় হাঁটেননি তরুণ বোলার।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাকিস্তানের অধিনায়ক হিসাবে মাত্র একটি সিরিজ়ে ছিলেন শাহিন। সেটিতে পাকিস্তান ১-৪ হারে। এর পর পাকিস্তান সুপার লিগে শাহিনের খারাপ নেতৃত্ব এবং ফর্ম তাঁকে অধিনায়ক পদ থেকে সরানোর রাস্তা পরিষ্কার করে দেয়। রবিবার এক বিবৃতির মাধ্যমে বাবরকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানায় পাক বোর্ড।
বোর্ডের বিবৃতিতেই শাহিন বলেছেন, “পাকিস্তান দলকে নেতৃত্ব দিতে পেরে সম্মানিত। এই স্মৃতি আজীবন মনে রাখব। দলের একজন খেলোয়াড় হিসাবে অধিনায়কের পাশে দাঁড়ানো আমার কর্তব্য। ওর অধিনায়কত্বে আগে খেলেছি। নেতা হিসাবে বাবরকে সমীহ করি। মাঠ এবং মাঠের বাইরে ওকে সাহায্য করতে তৈরি। দু’জনের লক্ষ্যই এক। তা হল পাকিস্তানকে বিশ্বের সেরা দল বানানো।”
বাবরও ভাল কথা বলেছেন শাহিনকে নিয়ে। তাঁর কথায়, “শাহিনের অধিনায়কত্বে খেলেছি। ও এখনও তরুণ। নিজেকে প্রতি দিন উন্নত করছে। অধিনায়ক হিসাবে বরাবর ওর কথা শুনে চলার চেষ্টা করেছি। আগামী দিনেও সেটাই করব।”
গত এক দিনের বিশ্বকাপের পর পাকিস্তানে নেতৃত্বে ইস্তফা দিয়েছিলেন বাবর। এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ব্যর্থতার পর তাঁকে নেতৃত্ব ছাড়তে এক রকম বাধ্য করা হয়েছিল। পিসিবির তৎকালীন চেয়ারম্যান জ়াকা আশরফ প্রস্তাব দিয়েছিলেন, বাবর শুধু টেস্ট দলকে নেতৃত্ব দিন। সাদা বলের ক্রিকেটে নতুন কেউ আসুক। দেশের সেরা ব্যাটারের উপর থেকে চাপ কমানোর যুক্তি দিয়েছিলেন তিনি। বাবর অবশ্য সব ধরনের ক্রিকেটেই পাকিস্তানের নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। সে সময় টেস্ট দলের অধিনায়ক করা হয়েছিল শান মাসুদকে। পরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অধিনায়ক করা হয় শাহিন আফ্রিদিকে। এক দিনের ক্রিকেটের জন্য কোনও অধিনায়ক ঘোষণা করা হয়নি।
এর মধ্যে পিসিবির ক্ষমতা বদল হয়। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছেন মহসিন নকভি। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বাবরকে নেতত্বে ফিরিয়ে আনার কথা ভাবেন তিনি। কারণ আফ্রিদির নেতৃত্ব তাঁর পছন্দ হয়নি। তা ছাড়া আফ্রিদির পারফরম্যান্স নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল অস্ট্রেলিয়া এবং নিউ জ়িল্যান্ড সফরে। তখন থেকেই শুরু হয় জল্পনা। সেই মতোই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বাবরকে আবার নেতৃত্বে ফিরিয়ে আনা হয়। তবে টেস্ট দলের নেতৃত্বে মাসুদকেই রাখা হয়েছে আপাতত। পিসিবি বিবৃতিতে লিখেছে, ‘‘বাবর আজ়মকে সাদা বলের ক্রিকেটে পাকিস্তানের অধিনায়ক করা হল। পিসিবির নির্বাচক কমিটির সব সদস্য এ ব্যাপারে সহমত হয়েছেন। তার ভিত্তিতে পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নকভি পাকিস্তানের পুরুষ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক করা হল বাবরকে। তিনি সাদা বলের ক্রিকেটে নেতৃত্ব দেবেন।’’ লেখার সঙ্গে পিসিবি চেয়ারম্যানের সঙ্গে বাবরের বৈঠকের ছবিও দেওয়া হয়েছে।