গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ছবি: এক্স থেকে।
বিশ্বকাপে মঙ্গলবার গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের অপরাজিত ২০১ রানের ইনিংস দেখে মুগ্ধ সচিন তেন্ডুলকর। তিনি মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের এই ইনিংসকে তাঁর জীবনে দেখা সেরা এক দিনের ম্যাচের ইনিংস বললেন। ম্যাক্সওয়েলের ইনিংস আজীবন মনে থাকবে তাঁর। অস্ট্রেলিয়া বনাম আফগানিস্তানের ম্যাচের শেষে সচিন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) খেলোয়াড়দের প্রশংসা করলেন।
তিনি লেখেন, “ইব্রাহিম জ়াদরান অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অসাধারণ খেলেছে। তাঁর ব্যাটের জোরে আফগানিস্তান একটা বড় রান করতে পেরেছে। ম্যাচে ৭০ ওভার আফগানরা ভাল খেললেও, শেষের ২৫ ওভার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল তাদের জেতার আর কোনও সুযোগ দেয়নি।” এর পরই সচিন লেখেন, “ম্যাক্স প্রেসার থেকে ম্যাক্স পারফরম্যান্স। এটা আমার জীবনে দেখা সেরা এক দিনের ম্যাচের ইনিংস।”
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তানের ব্যাটিংকে প্রথমে টেনছিলেন জ়াদরান। তিনি ১২৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। এ বারের বিশ্বকাপে দলের সব থেকে ধারাবাহিক ব্যাটার এই ম্যাচেও রান করলেন। আফগানিস্তান ৫০ ওভারের শেষে ৫ উইকেটে ২৯১ রান করে।
কিন্তু আফগানদের ধরে ফেললেন ম্যাক্স একাই। ১২৮ বলে ২০১ রানের ইনিংস আজীবন থেকে যাবে ক্রিকেট ইতিহাসে।কী ভাবে একার হাতে এবং এক পায়ে দাঁড়িয়ে ম্যাচ জেতানো যায়, তা সোমবার আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রমাণ করে দিলেন তিনি। ৯১ রান থেকে দলকে ২৯২ রানে নিয়ে গেলেন ম্যাক্সওয়েল। করলেন বিরাট দ্বিশতরান।পায়ে ক্র্যাম্প ধরায় হাঁটতে পারছিলেন না ম্যাক্সওয়েল। কার্যত এক পায়ে খেলেই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন তিনি।
মুম্বইয়ের প্রচণ্ড আর্দ্রতার মধ্যে লম্বা ইনিংস খেলা সহজ নয়। যতই মাঠ ছোট হোক এবং বড় শট খেলা সহজ হোক, দীর্ঘ ক্ষণ একই ছন্দে ইনিংস খেলে যাওয়া বেশ কঠিন ব্যাপার। মানসিক ভাবে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকলেও শারীরিক ভাবে সমস্যায় পড়ছিলেন ম্যাক্সওয়েল। শতরানের আগেই থেকেই পায়ের পেশিতে টান ধরা শুরু হল। দু’বার মাঠের মধ্যেই শুয়ে পড়লেন। পিঠে, কোমরে চাপ দিয়ে ম্যাক্সওয়েলকে সচল রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছিলেন চিকিৎসকেরা। অন্য কোনও ক্রিকেটার হলে খারাপ কোনও শট খেলে উইকেট দিয়ে আসতেন। কিন্তু ম্যাক্সওয়েল অন্য ধাতুতে গড়া। নিজের দিনে তাঁকে থামানো কঠিন। শরীর সঙ্গ দিচ্ছে না বলে দৌড়ে রান নেওয়া বন্ধ করে দিলেন। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খেলা শুরু করলেন। তাতেও আফগানিস্তান বোলারেরা আটকাতে পারলেন না। অবলীলায় চার-ছক্কা মেরে গেলেন ম্যাক্সওয়েল। এমনকী সুইচ হিটেও চার মেরে দিলেন। শেষ ওভারে ছয়, ছয়, চার এবং ছয় মেরে নিজের দুশো তো পূর্ণ করলেনই, অস্ট্রেলিয়াকেও জয়ের তরী পার করে দিলেন। এই ম্যাচের পর সেমি ফাইলানেও অসিস তাদের জায়গা পাকা করে ফেলল।