জুটি: মঙ্গলবার থেকে লাল বলে নতুন পরীক্ষা। দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্টের প্রস্তুতির ফাঁকে অশ্বিন ও জাডেজা। ছবি: এক্স।
মঙ্গলবার থেকে ফের লাল বলের ক্রিকেটে ফিরতে চলেছেন রোহিত শর্মারা। সেঞ্চুরিয়নে ‘বক্সিং ডে’ টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট। তারই প্রস্তুতি নিতে শনিবার নেটে অনুশীলনে নেমে পড়েছেন টেম্বা বাভুমার দলের দুই জোড়া ফলা কাগিসো রাবাডা এবং লুনগি এনগিডি। সেঞ্চুরিয়নের পেস সহায়ক উইকেটে দুই জোরে বোলারের মোকাবিলার জন্য তৈরি থাকছেন ভারতীয় দলের অলরাউন্ডার শার্দূল ঠাকুরও।
সতীর্থ আর অশ্বিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শার্দূল বলেছেন, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্ট খেলা খুব কঠিন একটা পরীক্ষা। বিদেশে আমরা বহু টেস্ট খেলেছি কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা হল সেই দেশ যেখানে উইকেট কী রকম আচরণ করতে পারে, সে সম্পর্কে কোনও অনুমানই কাজে আসে না। ফলে খুব দ্রুত পরিবেশ এবং উইকেটের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা সেরে না রাখতে পারলে কাজটা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।’’
শার্দূল আরও বলেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমি নিজেকে টেস্ট সিরিজ়ের জন্য তৈরি রাখছি। সেঞ্চুরিয়ন এমনিতেই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে একটু উঁচুতে। ফলে খেয়াল রাখতে হচ্ছে শ্বাসজনিত কোনও সমস্যা যেন না হয়। তবে শুধু আমি বলেই নয়, সকলেই সেই ব্যাপারটা নিয়ে ভাবছে।’’
ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ় ধরে রাখতে মরিয়া দক্ষিণ আফ্রিকা দলের কোচ শুকরি কনরাড। শনিবার তিনি বলেছেন, ‘‘চোট সারিয়ে ফিরেছে রাবাডা এবং এনগিডি। ওরা এক দিনের সিরিজ়েও খেলেনি। আশা করব, বিশ্রাম নিয়ে ওরা টেস্টে নিজেদের সেরা বোলিং উপহার দেবে।’’ আরও বলেছেন, ‘‘জেরাল্ড কোয়েতজ়ার মতো তরুণ বোলার রয়েছে। টেস্টে হয়তো ও সই অর্থে নতুন কিন্তু ওর মাঝের দিকে বোলিং দলের পক্ষে কার্যকরী হবে।’’
ভারতীয় দল সম্পর্কে কনরাডের বিশ্লেষণ, ‘‘দুই টেস্টের সিরিজ় এমনিতেই কঠিন পরীক্ষা। তার উপরে ভারতীয় দল শক্তি এবং ভারসাম্যে অনেক বেশি পরিণত। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলির মতো কিংবদন্তিদের সমীহ করতেই হবে।’’
কিন্তু সিরিজ়ের প্রথম বল উইকেটে পড়ার আগেই খারাপ খবর শুনিয়েছেন ব্রায়ান ব্লয়। সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কের কিউরেটর জানিয়েছেন, ম্যাচের প্রথম দিন পরিত্যক্ত হতে পারে প্রবল বৃষ্টিতে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলতে পারে দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত। সেখানেই শেষ নয়। বৃষ্টির কারণ তাপমাত্রা কমবে, ফলে বাইশ গজ থেকে তেমন সাহায্য হয়তো পাবেন না স্পিনাররা।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর সঙ্গে কথাপ্রসঙ্গে ব্রায়ান বলেছেন, ‘‘বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রিতে নামতে পারে। প্রথম দু’দিন খেলা না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তৃতীয় দিন ম্যাচ শুরু হলে উইকেট থেকে স্পিনাররা আদৌ কোনও সাহায্য পাবে কি না, তা জোর দিয়ে বলা সম্ভব নয়।’’ শনিবারই সতীর্থ রবীন্দ্র জাডেজার সঙ্গে ছবি দিয়ে আর অশ্বিন লিখেছেন, ‘‘টেস্টের প্রস্তুতি শুরু করে দিলাম আমরা।’’ কিন্তু সেঞ্চুরিয়নের পিচ কিউরেটরের মন্তব্য শোনার পরে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে বড় মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়াল প্রথম এগারো তৈরি করা।
ব্রায়ান জানিয়েছেন, বৃষ্টি থেকে পিচ এবং মাঠ বাঁচাতে তা ঢাকা হবে আচ্ছাদনে। তৃতীয় দিন খেলা শুরু হলে আগে ব্যাটিং করা খুব ঝুঁকির হতে পারে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘উইকেট দু’দিন ঢাকা থাকার পরে কোনও দল আগে ব্যাট করতে চাইবে না। ম্যাচ তৃতীয় দিন শুরু হলে সকালের স্যাঁতস্যাঁতে উইকেট থেকে বোলাররা বাড়তি সুবিধা তুলবে। কোনও দলই আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেবে না।’’
স্পিনারদের যে এই পিচে ঘূর্ণি দেখানোর সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন ব্রায়ান। তিনি বলেছেন, ‘‘যে ভাবে উইকেট তৈরি করা হয়েছে, তাতে স্পিনারদের পক্ষে এখান থেকে বিশেষ কোনও সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। বরং জোরে বোলাররা সুবিধা পাবে।’’
ভারতের প্রথম একাদশের আকার কেমন হওয়া উচিত, তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। দুটো বিষয় নিয়ে চিন্তা থাকছে। প্রথমটি যদি ব্যাটিং শক্তি বাড়াতে উইকেটকিপার হিসেবে কে এল রাহুলকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে, দ্বিতীয় প্রশ্ন, মহম্মদ শামিহীন ভারতীয় বোলিংয়ে যশপ্রীত বুমরা। মহম্মদ সিরাজের সঙ্গে তৃতীয় সঙ্গী কে? মুকেশ কুমার নাকি প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ? যা শোনা গিয়েছে, ভারতীয় শিবিরের প্রথম পছন্দ মুকেশ। টানা লম্বা স্পেলে বোলিং করার ক্ষমতা থাকায় বাংলার পেসারই এখনও পর্যন্ত দৌড়ে
এগিয়ে থাকছেন।