টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেই প্রথম ভারতের জার্সি পরেন পন্থ। —ফাইল চিত্র
ঋষভ পন্থ মানেই প্রথম বল থেকে ছক্কা মারার চেষ্টা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য আদর্শ ব্যাটার মনে করা হয় তাঁকে। কিন্তু শেষ কয়েক বছরে টেস্ট ক্রিকেটে পন্থ যে ভাবে উন্নতি করেছেন, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তা পারেননি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পরিচিত শটগুলি খেলেই টেস্ট ক্রিকেটে দাপট দেখিয়েছেন পন্থ।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেই প্রথম ভারতের জার্সি পরেন পন্থ। ২০১৭ সালে অভিষেক হয় তাঁর। পাঁচ বছরে ভারতের হয়ে ৫৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। করেছেন ৯৩৪ রান। গড় ২৩.৯৪। স্ট্রাইক রেট ১২৬.২১। অর্ধশতরান করেছেন মাত্র তিনটি। এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁকে বসিয়েও দেওয়া হয়। বোঝাই যায়, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পন্থ অপরিহার্য নন।
২০১৯ সালের পর মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ভারতের হয়ে সাদা বলের ক্রিকেটে আর খেলেননি। সেই সময়ের পর থেকে পন্থ দেশের হয়ে এবং আইপিএল মিলিয়ে ৭৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। তাঁর গড় ২৯-এর একটু বেশি। এই সময়ের মধ্যে তাঁর স্ট্রাইক রেট ১২৭.৩৯। যা অনেক ব্যাটারের থেকেই বেশ খানিকটা কম। ভারতীয় দলে সঞ্জু স্যামসন, ঈশান কিশন, দীনেশ কার্তিকরা এসে যাওয়ায় পন্থের লড়াইও বেড়ে গিয়েছে।
টেস্ট ক্রিকেটে যদিও তেমনটা নয়। এ বছরের শুরুতে ঋদ্ধিমান সাহাকে দলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় যে, তাঁকে আর দলে ভাবা হচ্ছে না। পন্থকেই টেস্ট ক্রিকেটে উইকেটরক্ষক হিসাবে প্রথম পছন্দ হিসাবে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ৩১টি টেস্ট খেলা হয়ে গিয়েছে দিল্লির তরুণ উইকেটরক্ষকের। পাঁচটি শতরান-সহ টেস্টে তাঁর সংগ্রহ ২১২৩ রান। রয়েছে ১০টি অর্ধশতরানও। গড় ৪৩.৩২। টেস্ট ক্রিকেটে তিনি যে ভাবে সাফল্য পেয়েছেন, তা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাননি।
টেস্ট ক্রিকেটে ফিল্ডার সাজানোর ধরন সাদা বলের ক্রিকেটের থেকে আলাদা। সেখানে বেশ কিছু ফাঁকা জায়গা পেয়ে যান পন্থ। সেই জায়গাগুলি কাজে লাগিয়েই রান করে যাচ্ছেন তিনি। পরিসংখ্যান বলছে টেস্টে করা তাঁর ২১২৩ রানের মধ্যে ৮৩.১ শতাংশ রান এসেছে ক্রিকেটীয় শট খেলেই। টেস্টে পেসারদের বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়েছেন পন্থ। কিন্তু সেগুলো ভেবেচিন্তেই মারা। ফাঁক দেখে নিয়েই খেলেছেন তিনি। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সেটা দেখা যাচ্ছে না। তাই কখনও ক্যাচ দিচ্ছেন ফিল্ডারের হাতে, কখনও আবার ফাঁক খুঁজে পাচ্ছেন না বাউন্ডারি গলানোর মতো।
টেস্ট শতরানের পর পন্থ। —ফাইল চিত্র
সব সময় যে এমন হয়েছে তা নয়। ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পন্থের স্ট্রাইক রেট ছিল ১৬৬। গড় ৩৮.৩৭। সময়ের সঙ্গে বোলাররা পন্থের এই আক্রমণাত্মক খেলার ধরন বুঝে নিয়েছেন। পন্থকে তাঁরা এখন অফ স্টাম্পের বাইরে বল করেন, নয়তো গতির হের ফের করেন। তাতেই বার বার আউট হচ্ছেন পন্থ।
ভারতীয় দলে বাঁহাতি ব্যাটারের সংখ্যা কম। রবীন্দ্র জাডেজা না খেললে পন্থের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা তাই বেড়ে যায়। কিন্তু শুধু বাঁহাতি বলে দলে সুযোগ তিনি কত দিন পাবেন, তা বলা মুশকিল। উইকেটরক্ষক হিসাবে কার্তিক আছেন। যাঁর স্ট্রাইক রেট পন্থের থেকে বেশি। ফিনিশার হিসাবে এই মুহূর্তে তিনি বেশি সফল। রয়েছেন কিশনও। তিনি বাঁহাতি এবং উইকেটরক্ষক। বার বার পন্থ ব্যর্থ হলে ঝাড়খণ্ডের উইকেটরক্ষকের কথাও ভাবতে পারে ভারতীয় দল।