ফাইনালে ৪ উইকেট নিয়েছেন রবি। ছবি: টুইটার
‘‘আমি সীমান্তে গুলি চালিয়ে দেশের সেবা করি, আর আমার ছেলে বল করে দেশের সেবা করে।’’ মাওবাদী অধ্যুষিত ওড়িশার রায়গড়ে দাঁড়িয়ে এমন কথাই বলছিলেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে চার উইকেট নেওয়া রবি কুমারের সিআরপিএফ বাবা রাজেন্দ্র সিংহ।
ছেলে ও পরিবারের জন্য কম স্বার্থ ত্যাগ করেননি রাজেন্দ্র। পরিবার যাতে কষ্ট না পায় তার জন্য চেপে গিয়েছিলেন নিজের জখম হওয়ার কথাও। ২০০৬ সালে কাশ্মীরের শ্রীনগরে মোতায়েন ছিলেন তিনি। তখনই জঙ্গি হামলায় জখম হন। রাজেন্দ্র বলেন, ‘‘আমি সব সময় চেয়েছি আমার পরিবার ভাল থাকুক। আমার কষ্ট কখনও ওদের জানাইনি। যখন আমার দুই পা ও হাত গ্রেনেড হামলায় জখম হয়েছিল তখনও কিছু বলিনি। ওরা টিভি দেখে জানতে পেরেছিল।’’
ছেলে যে খেলায় এত ভাল তা তিনি নিজেই জানতেন না। রাজেন্দ্র বলেন, ‘‘কাজের জন্য আমাকে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হত। তাই জানতেই পারিনি ছেলে ক্রিকেটে এত ভাল। যখন বাড়ি ফিরতাম দেখতাম ছেলে খেলা নিয়েই রয়েছে। আমি কোনও দিন ওকে লেখাপড়া নিয়ে চাপ দিইনি। তাই হয়তো আজ দেশের নাম উজ্জ্বল করছে।’’
আর্থিক ভাবে ছেলেকে খুব সাহায্য করতে পারেননি তিনি। রবি নিজের যোগ্যতায় এত দূর এসেছে বলে জানিয়েছেন রাজেন্দ্র। তিনি বলেন, ‘‘রবির যখন ১৩-১৪ বছর বয়স তখন ওর খেলার প্রতি ভালবাসার কথা জানতে পারি। কিন্তু ক্রিকেটের সরঞ্জাম কিনে দেওয়া বা অন্যান্য সাহায্য আমি খুব বেশি করতে পারিনি। ও নিজের যোগ্যতায় সব করেছে। আশা করছি আগামী দিনে ও আরও উন্নতি করবে।’’
নকআউটে দুরন্ত বল করেন রবি। প্রতিটি ম্যাচে বল হাতে দলকে শুরুতেই ভাল জায়গায় পৌঁছে দেন তিনি। কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন রবি। তার পর সেমিফাইনালে ২ ও ফাইনালে ৪ উইকেট নেন এই বাঁহাতি জোরে বোলার।