মনোজদের দলের খেলা দেখে খুশি সম্বরণ। ছবি: বিসিসিআই
শেষ বার বাংলা যখন রঞ্জি জিতেছিল, সেই সময় অধিনায়ক ছিলেন সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কেটে গিয়েছে ৩৩ বছর। আবার ইডেনে রঞ্জি ফাইনাল। বাংলার রঞ্জি জয়ী অধিনায়কের স্মৃতি এখনও তরতাজা। সে বারের মতো এ বারেও বাংলার হাতে ট্রফি দেখতে চাইছেন সম্বরণ। মনোজ তিওয়ারির দলের সঙ্গে নিজের দলের মিলও পাচ্ছেন তিনি।
রবিবার মধ্যপ্রদেশকে তাদের মাঠে গিয়ে ৩০৬ রানে হারিয়ে দেয় বাংলা। রঞ্জিতে ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলা এবং সেমিফাইনালে বিরাট জয়ের পর বাংলা দলকে নিয়ে সমর্থকদের আশা তৈরি হয়েছে। মনোজদের দলের খেলা দেখে খুশি সম্বরণও। মিল পাচ্ছেন তাঁর রঞ্জিজয়ী দলের সঙ্গে। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বললেন, “প্রায় ৩৪ বছর পর ইডেনে ফাইনাল খেলবে বাংলা। আমার এটা খুবই নস্ট্যালজিক একটা ঘটনা। আমাদের দলটার সঙ্গে এই দলটার একটা মিল আছে। দুই দলেই সিনিয়র এবং জুনিয়র দলের মিশেল রয়েছে। অভিমন্যু ঈশ্বরন, মনোজ, অনুষ্টুপ মজুমদারের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা যেমন রান করছে, তেমনই সুদীপ ঘরামি, অভিষেক পোড়েল, প্রদীপ্ত প্রামাণিকরা দলের হয়ে রান করছে, উইকেট নিচ্ছে। আমাদের দলেও এটা ছিল।”
বাংলা দলের খেলা নিয়ে উচ্ছ্বসিত সম্বরণ। তিনি বললেন, “বাংলা খুব ভাল খেলছে। পেস বোলাররা তো অসাধারণ। দারুণ ছন্দে রয়েছে ওরা। তবে বাংলা দলের আসল ক্রিকেটার হচ্ছে শাহবাজ় আহমেদ। গত তিন বছর ধরে ও একার ক্ষমতায় ম্যাচের রং পাল্টে দিচ্ছে। দলের ভারসাম্য রাখার পিছনেও বড় ভূমিকা নিচ্ছে ও। তবে এ বছর দলের সেরা আবিষ্কার সুদীপ ঘরামি। খুব নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছে ও। সুদীপ সোজা ব্যাটে খেলতে পারে। এটা ওর বড় গুণ। খুব পরিশ্রমী ছেলে। দলের সকলেই পারফরম করছে। এটা বাংলা দলের জন্য দারুণ একটা ব্যাপার।”
সম্বরণের সুর শোনা গেল বাংলার প্রাক্তন কোচ অরুণ লালের গলাতেও। আনন্দবাজার অনলাইনকে অরুণ বললেন, “বাংলা দলের বোলিং আক্রমণ এই মুহূর্তে ভারতের সেরা। যে কোনও ব্যাটিংকে ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে এই দল। শাহবাজ় ভাল খেলছে। সুদীপ ভাল খেলছে। মনোজ, অনুষ্টুপরা তো রয়েছেই।”
বাংলার বোলিং শক্তির কথা বলছিলেন সম্বরণরা। কোয়ার্টার ফাইনাল এবং সেমিফাইনালে ম্যাচের সেরা বাংলার পেসার আকাশ দীপ। দু’টি ম্যাচেই ছ’উইকেট নিয়েছেন বাংলার পেসার। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে শতরান করেন অনুষ্টুপ এবং সুদীপ। দ্বিতীয় ইনিংসে ৮০ রান করেন অনুষ্টুপ। ভুল আউটের শিকার হয়ে মাঠ ছাড়তে তাঁকে দ্বিতীয় ইনিংসে। আকাশ প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেন। তাঁর দাপটে মধ্যপ্রদেশ শেষ হয়ে যায় ১৭০ রানে। ২৬৮ রানে লিড পেয়ে যায় বাংলা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে ৫৪৮ রানের বিরাট লক্ষ্য রাখে তারা মধ্যপ্রদেশের সামনে। সেই রান তাড়া করতে নেমে মধ্যপ্রদেশের ইনিংস শেষ ২৪১ রানে। ৫ উইকেট নেন প্রদীপ্ত।
ইডেনে রঞ্জি ফাইনাল শুরু ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে। বৃহস্পতিবার বাংলা খেলতে নামবে সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচের আগে সম্বরণ বললেন, “আশা করি দুর্দান্ত একটা ফাইনাল হবে। বাংলার বোলিং আক্রমণকে সামলানো সৌরাষ্ট্রের পক্ষে কঠিন হবে বলেই মনে হয়। মনোজদের বলব ঘরের মাঠে খেলা বলে বাড়তি চাপ না নিতে। নিজেদের খেলাটা উপভোগ করো। তা হলেই হবে।”