মধ্যপ্রদেশের রঞ্জি জয়। ছবি: পিটিআই
প্রথম বার রঞ্জি জয় মধ্যপ্রদেশের। ১৯৯৯ সালে রঞ্জি ফাইনালে ওঠাই ছিল সে রাজ্যের ক্রিকেটের সেরা কীর্তি। সেই ইতিহাস মুছে নতুন করে লিখলেন রজত পাটীদার, কুমার কার্তিকেয়রা। সেমিফাইনালে এই মধ্যপ্রদেশের কাছেই হেরেছিল বাংলা। অরুণ লালের দল দেখেছিল মধ্যপ্রদেশের হার না মানা জেদ।
বাংলার বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৯৭ রানে চার উইকেট হারায় মধ্যপ্রদেশ। সেখান থেকে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান হিমাংশু মন্ত্রী এবং অক্ষত রঘুবংশী। শুরু থেকেই পাল্টা লড়াই করার মানসিকতা দেখা যায় তাঁদের মধ্যে। বাংলার সহকারী কোচ সৌরাশিস লাহিড়ী বললেন, “সেমিফাইনালের আগেই বলেছিলাম মধ্যপ্রদেশ মানে চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের দল। ওরা সহজে হার মানতে জানে না।”
জেদ, মধ্যপ্রদেশ দল এই জেদ দিয়েই জিতে নিল এ বারের রঞ্জি। বাংলার অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরন বললেন, “মধ্যপ্রদেশ অনেক বেশি ধারাবাহিকতা দেখিয়েছে। রঞ্জির গ্রুপ পর্ব থেকেই ওদের ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং খুব ধারাবাহিক ছিল। আমার মনে হয় এ বারের রঞ্জিতে সেটাই ওদের সাফল্যের মূল ভিত্তি।”
কোনও বার রঞ্জি না জেতা মধ্যপ্রদেশ এ বার বদলে গেল কী ভাবে? অভিমন্যু বললেন, “ওদের দলে প্রতিভা ছিলই। হয়তো ট্রফি জেতেনি আগে। এ বার দলে সেই আত্মবিশ্বাসটাই ভরে দিয়েছিলেন কোচ পণ্ডিত। উনি খুব শৃঙ্খলাপরায়ণ। সেটাই হয়তো বদলে দিয়েছে মধ্যপ্রদেশকে।”
রঞ্জির গ্রুপ পর্বে গুজরাতের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ বাদ দিয়ে বাকি সব ম্যাচেই অন্তত একটি ইনিংসে সাড়ে তিনশোর উপর রান তুলেছে মধ্যপ্রদেশ। আর এই বড় রান তোলার পিছনে সৌরাশিস কৃতিত্ব দিচ্ছেন ওপেনারদের। যশ দুবে এবং হিমাংশু মন্ত্রী। সেমিফাইনালে বাংলার বিরুদ্ধে শতরান করেছিলেন হিমাংশু। ফাইনালে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে শতরান করেছিলেন যশ। সেই সঙ্গে রজত ধারাবাহিক ভাবে রান করেছেন। বাংলার সহকারী কোচ বললেন, “প্রথম দিকের ব্যাটাররা নিয়মিত রান করলে বড় রান তোলার কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। মধ্যপ্রদেশ সব ইনিংসেই লম্বা রান করার চেষ্টা করেছে।”
একের পর এক ম্যাচে বড় রান করেছেন মধ্যপ্রদেশের ব্যাটাররা আর তাঁদের যোগ্য সঙ্গত করে গিয়েছেন কুমার কার্তিকেয়রা। মধ্যপ্রদেশের বোলাররা এ বারের রঞ্জিতে ধারাবাহিক ভাবে উইকেট নিয়েছেন। কার্তিকেয় ছ’ম্যাচে নিয়েছেন ৩২টি উইকেট। পেসার গৌরব যাদব পাঁচ ম্যাচে নিয়েছেন ২৩টি উইকেট। বাংলার বহু দিনের সৈনিক অনুষ্টুপ মজুমদার। বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক বললেন, “সেমিফাইনালে আমরা ভাল খেলতে পারিনি। ওদের স্পিনাররা শুরু থেকেই ভাল বল করেছে। জায়গা দেয়নি খুব বেশি। আমাদের ব্যাটাররা দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারলে ফল অন্য রকম হত।”
প্রথম বার রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন মধ্যপ্রদেশ। তাদের হাতেই সেমিফাইনালে বিদায় নেওয়া বাংলার ক্রিকেটাররা বলছেন, যোগ্য দল হিসাবেই জিতেছে চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের দল।