বাবর আজ়ম। —ফাইল চিত্র।
বিশ্বকাপে বিপর্যয়ের পর নেতৃত্বে ইস্তফা দিয়েছেন বাবর আজ়ম। ঠিক কী কারণে বা কোন পরিস্থিতিতে তাঁকে নেতৃত্ব ছাড়তে হয়েছে, তা জানাননি বাবর। মুখ খোলেননি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কোনও কর্তাও। সম্প্রতি জানা গিয়েছে বাবরের নেতৃত্ব খোয়ানোর কারণ।
পিসিবি চেয়ারম্যান জ়াকা আশরফের সঙ্গে এক মহিলার ফোনালাপের অডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। ২ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের সেই অডিয়ো থেকে জানা গিয়েছে বাবরের নেতৃত্ব ছাড়ার কারণ। বাবরকে টেস্ট দলের অধিনায়ক থাকার জন্য অনুরোধ করেছিলেন পিসিবি প্রধান। বাবর নাকি জাতীয় দলের আট জন সতীর্থকে নিয়ে একটি গোষ্ঠী তৈরি করেছিলেন। বিশেষ এক জনের নির্দেশেই সব ধরনের ক্রিকেটেই নেতৃত্ব ছেড়ে দেন।
ভাইরাল হওয়া অডিয়োয় ওই মহিলাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমরা ক্রিকেটপ্রেমী। আমরা দেখছি বাবর ওর বন্ধুদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। বিশেষ করে শাদাব খানের মতো ওর ঘনিষ্ঠদের পাশে। অথচ দলে ওর জায়গা পাওয়াই উচিত নয়।’’
মহিলার বক্তব্যের জবাবে আশরফকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘এই জন্যই পাকিস্তানের ক্রিকেটের ক্ষতি হচ্ছে।’’ আর এক জনের কথা শোনা গিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘‘হাসান আলিরও দলে জায়গা পাওয়া উচিত নয়।’’ উত্তরে আশরফ বলেন, ‘‘হাসানও বাবরের খুব ভাল বন্ধু।’’ এর পর পিসিবি প্রধান আরও বলেছেন, ‘‘তালহা বলে এক জন এজেন্ট আছে। জাতীয় দলের আট জন ক্রিকেটারকে সে নিয়ন্ত্রণ করে। ক্রিকেটারদের সঙ্গে ওর চুক্তি রয়েছে। ছেলেটি খুব চতুর। ক্রিকেটারদের বাড়ি গিয়ে গিয়ে ওদের এবং পরিবারের সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। ক্রিকেটারেরাও ওর কথা ছাড়া কিছু করে না। মনে হয় ছেলেটার পুরো নাম তালহা ওসমানি। আমি অবশ্য ওর নামটা ঠিক জানি না।’’
বিশ্বকাপের পর বাবরের সঙ্গে কী কথা হয়েছিল? পিসিবি চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘‘বাবরকে বলেছিলাম, তোমারই টেস্ট দলের অধিনায়ক থাকা উচিত। তোমাকে শুধু সাদা বলের ক্রিকেটের নেতৃত্ব ছাড়তে বলছি। এটা শোনার পর বাবর আমাকে বলে, ‘ঠিক আছে। বাড়িতে একটু আলোচনা করি। তার পর আপনাকে আমার সিদ্ধান্ত জানাব।’ এর পরেই বাবর ফোন করে তালহা নামের ছেলেটাকে। বিষয়টা নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করে। তালহাই ওকে সব ধরনের ক্রিকেটের নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেয়।’’
এর পরের ঘটনাও শোনা গিয়েছে ভাইরাল হওয়া ফোনালাপে। আশরফকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমার একটা দ্বিতীয় পরিকল্পনা তৈরি ছিল। বাবরের উত্তর শুনেই অন্য এক জনকে বলেছিলাম, ভাই এখন থেকে তুমিই অধিনায়ক।’’ এর পর শোনা গিয়েছে সেই মহিলার কথা। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি কি শান মাসুদকে বলেছিলেন কথাটা?’’ আশরফ আবার বলেন, ‘‘না, সাদা বলের ক্রিকেটে অধিনায়ক হওয়ার জন্য শাহিন আফ্রিদিকে ফোন করেছিলাম।’’ মহিলা বলেন, ‘‘শাহিন ভাল, কিন্তু মহম্মদ রিজ়ওয়ান কি বেশি ভাল হত না সাদা বলের জন্য?’’ উত্তরে আশরফ বলেন, ‘‘আমিও রিজ়ওয়ানকে পছন্দ করি। কিন্তু রিজ়ওয়ানও বাবর এবং তালহার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ।’’ পিসিবি চেয়ারম্যান বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাবরের ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণেই রিজ়ওয়ানকে অধিনায়ক করতে চাননি।
শাহিন আফ্রিদিকে তাঁর শ্বশুর শাহিদ আফ্রিদি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন বলে আস্থা প্রকাশ করেন আশরফ। এর পর ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা ব্যক্তি প্রশ্ন করেন, ‘‘শাহিদ কি একটু বেশি হস্তক্ষেপ করে না? সেটা কি ভাল হবে?’’ আশরফ বলেন, ‘‘দেখ এ টুকু তো হবেই।’’ শেষে ওই মহিলা বলেন, ‘‘পাকিস্তান ক্রিকেটের ভাল হলেই ভাল।’’