— ফাইল চিত্র।
এশিয়া কাপের আগে আরও বিপদে পাকিস্তান। তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে এ কথা জানতে পেরেই তড়িঘড়ি বৈঠক ডাকলেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান জাকা আশরফ। রবিবার বৈঠক ডাকা হয়েছে।
গত জুনে পিসিবি চেয়ারম্যানের পদে বসেন জাকা। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের সরকার এবং নির্বাচন কমিশন তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্যেই এই সিদ্ধান্ত। নির্দেশের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চেয়ে লাহোর হাইকোর্টে গিয়েছেন জাকা। পিসিবি-র তরফে বৈঠকের ব্যাপারে কোনও কথা না বলা হলেও অভ্যন্তরীণ ভাবে প্রত্যেক সদস্যকে করাচির বৈঠকে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
লাহোরে হাইকোর্টে শুনানি রয়েছে সোমবার। তার আগে বৈঠক ডাকা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। শোনা যাচ্ছে, পাকিস্তান ক্রিকেট দেখভালের জন্যে বোর্ড অফ গভর্নর্স তৈরি করা হতে পারে। কিন্তু সেই কমিটিতে অবশ্যই পাকিস্তানের ক্রীড়ামন্ত্রক এবং নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন থাকা চাই। তা ছাড়া সেই কমিটিতে দু’জন সদস্য মনোনীত করার অধিকার রয়েছে একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর।
বিপদ আরও বেড়েছে দুই সদস্য বেঁকে বসায়। তাঁরা জানিয়েছেন, বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন না। যে ভাবে বৈঠক ডাকা হয়েছে তা নিয়ে আপত্তি রয়েছে তাঁদের। তা ছাড়া, বোর্ড অফ গভর্নর্স তৈরি হলে পাকিস্তান ক্রিকেটে নতুন টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হবে। আন্তর্জাতিক মঞ্চেও তার প্রভাব পড়তে পারে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই চেয়ারম্যানের বদল হতে চলেছে। সে দেশে ক্ষমতায় ছিল শাহবাজ় শরিফের সরকার। কিন্তু পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি সম্প্রতি সেই সরকার ভেঙে দিয়েছেন। ফলে পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত শরিফের সরকার স্রেফ দায়িত্বে থাকবে। কিন্তু তাদের হাতে কোনও ক্ষমতা থাকবে না।
এর পরেই পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন একটি বিবৃতি দিয়ে জানায় যে, বর্তমান সরকার যে যে জায়গায় রাজনৈতিক নিয়োগ করেছে, তাদের সবাইকে সরিয়ে ফেলতে হবে। মুক্ত এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের কারণেই এই সিদ্ধান্ত। তার পরেই পাকিস্তানের একটি মন্ত্রক আশরফকে রাজনৈতিক নিয়োগ বলে চিহ্নিত করেছে এবং পাকিস্তানের সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে ওই পদ থেকে আশরফকে বরখাস্ত করার। তেমনটা হলে নাজাম ফের পুরনো পদে ফিরতে পারেন। জুলাই মাসে দায়িত্ব নিয়েছিলেন আশরফ। দু’মাসের মধ্যেই তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরানো হতে পারে।
পাকিস্তান বোর্ডের চেয়ারম্যানের পদটি বরাবরই রাজনৈতিক নিয়োগ হিসাবে পরিচিত। যে দল সরকারে থাকে, তারাই নিজেদের প্রতিনিধিকে পাক বোর্ডের চেয়ারম্যান বানায়। আশরফের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আরও নাটকীয়। তিনি বর্তমান সরকার নন, পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সদস্য। শরিফের সরকার ক্ষমতায় থাকলেও যে হেতু পিপিপি-র হাতে দেশের ক্রীড়ামন্ত্রকের ভার রয়েছে, তাই তারাই আশরফকে পিসিবি চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল। তার পরেই আশরফকে চেয়ারম্যান করা হয়।