আইপিএল ট্রফি। —ফাইল ছবি।
আইপিএল নয়, ক্রিকেটারদের উচিত দেশের হয়ে খেলাকে অগ্রাধিকার দেওয়া। আইপিএলের দাপট থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে রক্ষা করতে এ ছাড়া উপায় নেই। এমনই বলেছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রাক্তন ক্রিকেটার।
টেস্ট বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলতে দল নিয়ে ইংল্যান্ডে পৌঁছেছেন প্যাট কামিন্স। ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচের পর রয়েছে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অ্যাশেজ সিরিজ়। ঠাসা আন্তর্জাতিক সূচি অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দলের সামনে। ভারতের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ টেস্টের আগে আইপিএলের একচেটিয়া দাপট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক। কামিন্স নিজেও গত বছর কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আইপিএল খেলেছেন। এ বছর অবশ্য নিজেকে সরিয়ে নেন ভারতে টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগ থেকে।
কামিন্স মনে করেন, এক দশক আগে থেকে আইপিএল ক্রিকেটের পরিবর্তন শুরু করেছে। তার মধ্যে ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগের লোভনীয় প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে ট্রেন্ট বোল্টের নিউ জ়িল্যান্ডের হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত এক দৃষ্টান্ত। কামিন্সের মতে, আইপিএলের দাপটে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সূচি প্রভাবিত হচ্ছে। খেলোয়াড়দের পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
কেকেআরের প্রাক্তন ক্রিকেটার বলেছেন, ‘‘বেশ কিছু দিন ধরেই মাথায় ভাবনাটা ঘুরছে আমার। খেলোয়াড়দের পাওয়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আর একচেটিয়া অধিকার নেই। এক দশক আগে থেকে এই পরিবর্তনটা শুরু করেছে আইপিএল। এখন আরও নতুন কিছু বিষয় যুক্ত হতে চলেছে। আমার মনে হয় এটা নিয়ে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে।’’
কামিন্স চান তাঁর সতীর্থরা ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগের থেকে জাতীয় দলের স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিন। যদিও মেনে নিয়েছেন ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগের লোভনীয় আর্থিক প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া সহজ নয়। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘আমাদের চেষ্টা করতে হবে অস্ট্রেলিয়ার জন্য সেরাটা দেওয়ার। দেশের জার্সি গায়ে যতটা সম্ভব ভাল পারফরম্যান্স করার। সবাইকে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সেরা খেলাটা খেলতে হবে। এটাই সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ।’’ কেকেআরের প্রাক্তন ক্রিকেটার আরও বলেছেন, ‘‘বিষয়টা অনেকটাই আমাদের উপর নির্ভর করছে। আমাদের সবাইকে এটা নিয়ে গভীর চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। কয়েক বছর আগের কথা ভাবলে দেখবেন, আন্তর্জাতিক সূচি অন্য রকম ছিল।’’
কামিন্সের মতে, ক্রিকেট আস্তে আস্তে ফুটবলের পথে হাঁটছে। এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যাচ্ছে যে, বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে জাতীয় দলে খেলোয়াড়দের নেওয়ার জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। তিনি বলেছেন, ‘‘আসলে ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলো ক্রিকেটারদের বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা দেয়। যেগুলো অস্বীকার করা যায় না। ক্রিকেটারদের সেগুলো আকৃষ্ট করে। এ জন্য ক্রিকেটারদের দোষ দেওয়া যায় না। কারণ বিকল্প সুযোগ গ্রহণ করা দোষের নয়।’’
কেমন হতে পারে আগামী দিনের ক্রিকেট? কামিন্স বলেছেন, ‘‘মনে হচ্ছে এমন একটা দিন আসতে চলেছে, যখন ফ্র্যাঞ্চাইজ়িগুলোই সব নিয়ন্ত্রণ করবে। এটাই বাস্তব। অন্য খেলাতেও এমন দেখা যায়। তাই অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলাকে কেন বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত, তা নিয়ে প্রচার চালিয়ে যেতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ছেলেরা তাদের সেরাটা দেশের জন্য রেখে দেয়। আমরা সব সময় চাই দেশের জন্য বিশ্বকাপ জিততে। বড় সিরিজ়গুলো জিততে। এটা ঠিক, আগের থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও প্রতিযোগিতা বেড়েছে।’’