পুজারার সঙ্গে রিজওয়ান। ছবি: টুইটার
কাউন্টি ক্রিকেটে স্বপ্নের ছন্দে রয়েছেন ভারতের চেতেশ্বর পুজারা। সাসেক্সের হয়ে প্রতি ম্যাচেই ব্যাট হাতে দাপট দেখাচ্ছেন। চারটি ম্যাচ খেলে দু’টি দ্বিশতরান সহ চারটি শতরান করে ফেলেছেন পুজারা। ব্যাটিংয়ের সময় ভারতীয় ব্যাটারের মনসংযোগ দেখে মুগ্ধ তাঁর পাকিস্তানী সতীর্থ মহম্মদ রিজওয়ান।
পুজারার মতোই সাসেক্সের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেটে খেলছেন রিজওয়ান। পাক ক্রিকেটারও যথেষ্ট ভাল ছন্দে রয়েছেন। বাইশ গজে পুজারার সঙ্গে লম্বা সময় কাটিয়েছেন দু’টি ম্যাচে। উইকেটের অন্য প্রান্ত থেকে দেখছেন অনবদ্য ছন্দে থাকা পুজারার ব্যাটিং। ব্যাট করার সময় পুজারার একাগ্রতা এবং মনসংযোগ দেখে মুগ্ধ তিনি। রিজওয়ান চান পুজারার কাছে এই দু’টি বিষয়ের পাঠ নিতে।
ভারত-পাকিস্তান শীতল সম্পর্কের প্রেক্ষিতে রিজওয়ান বলেছেন, ‘‘আমাদের দু’জনের এক সঙ্গে খেলার কথা বললে বলতে পারি, পুজারাকে দেখে আমি অবাক হইনি। ওকেও যদি জিজ্ঞেস করেন, মনে হয় একই উত্তর পাবেন। আমি ওর সঙ্গে বেশ রসিকতাও করছি। দলের সকলেই সেটা জানে।’’ রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক সম্পর্কের প্রভাব তাঁদের মধ্যে নেই বলেই দাবি পাক ক্রিকেটারের।
পুজারার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে রিজওয়ান বলেছেন, ‘‘ও ভীষণ ভাল ছেলে। তেমনই ভাল ওর একাগ্রতা এবং মনসংযোগ। আপনি চাইলে এগুলো ওর থেকে শিখতেই পারেন।’’ পাক ক্রিকেটার আরও বলেছেন, ‘‘পুজারার মনসংযোগের কথা আমি সাসেক্সের কোচদেরও বলেছি। সত্যিই শেখার মতো। আমার ক্রিকেট জীবনে যাদের মনসংযোগের মান দেখে মুগ্ধ হয়েছি, তারা হল ইউনিস ভাই (ইউনিস খান), ফাওয়াদ আলম আর পুজারা। আমার তালিকায় পুজারা দ্বিতীয় স্থানে থাকবে। তৃতীয় স্থানটা ফাওয়াদের জন্য। এদের মতো গভীর মনসংযোগ আর কারোর দেখিনি। আমি শুধু ভাবি এরা তিন জন কী করে এত মনসংযোগ করতে পারে! কী করে এত একাগ্র থাকতে পারে! ইউনিস ভাইয়ের সঙ্গে কয়েক বার কথা বলেছি। ফাওয়াদের সঙ্গে তেমন কথা বলা হয়নি।’’
সময় পেলেই ব্যাটিং নিয়ে পুজারার সঙ্গে আলোচনা করছেন জানিয়ে রিজওয়ান বলেছেন, ‘‘একটা ম্যাচে দ্রুত আউট হওয়ার পর পুজারা আমাকে কয়েকটা কথা বলেছে। তার মধ্যে অন্যতম, বলের কাছে শরীর নিয়ে গিয়ে খেলা। সাদা বলের ক্রিকেট বেশি খেললে ব্যাটিংয়ে এই সমস্যাটা চলে আসে। গত কয়েক বছর আমরা সাদা বলেই বেশি খেলেছি। বল থেকে শরীর দূরে রেখে খেলার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। কারণ সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বলের কাছে শরীর নিয়ে গিয়ে খেলার সুযোগ কম। অবশ্য বল সুইং বা স্পিন করে শরীরের কাছে চলে এলে আলাদা বিষয়। এখানে এসেও শরীর থেকে দূরে খেলতে গিয়ে পর পর দু’টো ইনিংসে দ্রুত আউট হয়েছি।’’
এর পরেই পুজারার পরামর্শ চান রিজওয়ান। পাক ক্রিকেটার বলেছেন, ‘‘নেটে পুজারার সঙ্গে কথা বললাম। ও আমাকে বলেছে, ‘আমরা যখন এশিয়ায় খেলি তখন বলকে ঠেলে দূরে পাঠাতে হয় শক্তি প্রয়োগ করে। এখানে তেমন করার দরকার নেই। বলের কাছে শরীর নিয়ে গিয়ে খেললে ভাল ফল হবে।’ পুজারার এই পরামর্শটা বেশ কাজে দিয়েছে।’’ এর পরে মজা করে রিজওয়ান বলেছেন, ‘‘আপাতত পুজারা আমার থেকে এটুকুই শিখেছে।’’