উইকেট নিয়ে এই কায়দাতেই উল্লাস করেন পাকিস্তানের সাজিদ খান। মুলতানে এই দৃশ্য দেখা গিয়েছে সাত বার। ছবি: সমাজমাধ্যম।
২১১ রানে ২ উইকেট পড়েছিল ইংল্যান্ডের। দেখে মনে হচ্ছিল, প্রথম টেস্টের পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে। সেখান থেকে ২৯১ রানে অল আউট হয়ে গেল ইংল্যান্ড। শেষ আটটি উইকেটের মধ্যে ছ’টিই নিলেন তিনি। সব মিলিয়ে ইনিংসে সাতটি উইকেট নিলেন সাজিদ খান। এই সাফল্যের পরেও সাজিদের নিশানায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।
বাংলাদেশ সিরিজ়ে ছিলেন না। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও প্রথম টেস্টে খেলেননি। দ্বিতীয় টেস্টে তাঁকে নেওয়া হয়েছে। খেলতে নেমে চমক দিলেন তিনি। মুলতানে এই টেস্টে খেলা সব স্পিনারের মধ্যে তিনিই পিচ সবচেয়ে বেশি কাজে লাগালেন। তাঁর বলই সবচেয়ে বেশি ঘুরল। ফলে সমস্যায় পড়লেন জো রুট, হ্যারি ব্রুকরা।
প্রথম দর্শনে দেখলে সাজিদকে স্পিনার হিসাবে হয়তো অনেকে ভাববেন না। নাড়া মাথা। গালে দাড়ি। গোঁফ তা দেওয়া। চোখে রোদচশমা পরে বল করেন। একটি করে উইকেট নেওয়ার পরে উল্লাসের কায়দাও অন্য রকম। আগ্রাসী। চিৎকার করেন। আর শেষে কবাডি খেলোয়াড়দের মতো পায়ে চাপড় মারেন। এই ধরনের উল্লাসের ভঙ্গি আগেও দেখেছে ক্রিকেট দুনিয়া। শিখর ধাওয়ানের কাছে। ক্যাচ ধরার পর এ ভাবেই উল্লাস করতেন তিনি।
সাজিদের সাফল্যের সবচেয়ে বড় কারণ তাঁর লেংথ। যেখানে বাকি স্পিনারের মাঝ পিচে বল করেছেন সেখানে সাজিদ অনেক বেশি ফুল লেংথে বল করেছেন। তিনি হয়তো বাকিদের থেকে বেশি রান দিয়েছেন। কিন্তু ব্যাটারদের খেলতে বাধ্য করেছেন তিনি। ফলে উইকেট পেয়েছেন।
২০২১ সালে জ়িম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে অভিষেক পেশোয়ার ও খাইবার পাখতুনখোয়ার হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা সাজিদের। কিন্তু বেশি ম্যাচে সুযোগ পাননি তিনি। চলতি বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একটি টেস্ট খেলেছিলেন। তার পর আবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সুযোগ পেলেন। সুযোগ না পাওয়ায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে নিশানা করেছেন সাজিদ।
সাত উইকেট নেওয়ার পরে পাক স্পিনার জানান, তিনি কেন বাদ পড়েছিলেন তা জানেন না। সাজিদ বলেন, “অস্ট্রেলিয়ায় আব্রার চোট পেয়েছিল। নোমান ছিল না। তাই আমাকে ডেকেছিল। আমি ভাল বল করেছিলাম। তার পর আবার বাদ পড়ে গেলাম। কেন বাদ পড়লাম জানি না। তার উত্তর ক্রিকেট বোর্ডই দিতে পারবে।”
বাংলাদেশ সিরিজ়ের আগে নিজেকে তৈরি করেছিলেন সাজিদ। কিন্তু সুযোগ পাননি। তিনি বলেন, “ বাংলাদেশ সিরিজ়ের আগে আমি ল্যাঙ্কাশায়ারে খেলছিলাম। লাল বলের ক্রিকেটের প্রস্তুতিই নিচ্ছিলাম। কিন্তু বাংলাদেশ সিরিজ়ে জায়গা পেলাম না। তার পর আবার চ্যাম্পিয়ন্স কাপ খেললাম। সেখানেও ফাইনালে দলে জায়গা পেলাম। ম্যাচের সেরা হলাম। যখনই সুযোগ পাই নিজের সেরাটা দিই। ভাল খেলি। তার পর আবার বাদ পড়ি।”
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে হারের পরে পাকিস্তান দলে অনেক বদল হয়েছে। তার মধ্যে একটি সাজিদ। নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন তিনি। এ বার হয়তো আর বাইরে যেতে হবে না তাঁকে। আরও অনেক বার তাঁর বিশেষ কায়দায় উল্লাস দেখতে পাবেন পাকিস্তানের ক্রিকেট সমর্থকেরা।