মহম্মদ শামি। —ফাইল চিত্র।
চোট সারিয়ে এক বছর পর মাঠে ফিরলেন মহম্মদ শামি। বাংলা-মধ্যপ্রদেশ রঞ্জি ট্রফির ম্যাচে ১০ ওভার বলও করলেন স্বচ্ছন্দে। দু’দলের লড়াইয়ের মাঝে তিনিই এ ম্যাচের মূল আকর্ষণ। বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির আগে তাঁর পারফরম্যান্সের দিকে নজর থাকবে জাতীয় নির্বাচক এবং ভারতীয় দলের কোচ গৌতম গম্ভীরেরও। গত এক দিনের বিশ্বকাপ ফাইনালের পর বুধবার প্রথম মাঠে নামলেন তিনি।
ফিটনেসের সমস্যার জন্য শামির মাঠে ফেরা একাধিক বার পিছিয়ে যাওয়ায় কিছুটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফিরলেন দেশের অন্যতম সেরা বোলার। ফিরলেন বাংলার জার্সি গায়ে। ২০২৩ সালের জুনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট বিশ্বকাপ ফাইনালের পর আর লাল বলের ক্রিকেট খেলেননি শামি। ১৭ মাস পর আবার লাল বলের ক্রিকেট খেললেন। প্রথম বার ভাই মহম্মদ কাইফের সঙ্গে জুটি বেঁধে নতুন বলে আক্রমণও শুরু করলেন।
চোট কাটিয়ে ফেরা শামিকে সম্পূর্ণ চেনা ফর্মে দেখা যায়নি। ১০ ওভারে ৩৪ রান দিয়েছেন। উইকেট পাননি। শামি ঠিক কেমন ছন্দে রয়েছেন, তা আরও ভাল বোঝা যেতে পারে বৃহস্পতিবার। বুধবার তিনি বল করেছেন ম্যাচের শেষ সেশনে। তবু বাংলার অধিনায়ক অনুষ্টুপ মজুমদার তাঁকেই সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেছেন। ম্যাচের দ্বিতীয় দিন সকালে বল করার সুযোগ পাবেন শামি। বাংলা শিবির কিন্তু শামিকে দেখে খুশি। কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘শামি এক বছর পর মাঠে ফিরেই দারুণ কিছু করবে, সেটা আশা করা ঠিক না। তবে ভাল বল করেছে। বোঝা গিয়েছে, ফর্মে রয়েছে। শামি উইকেট পায়নি। তবে পেতে পারত। কয়েকটা বলে মধ্যপ্রদেশের ব্যাটারদের বিট করেছে। আশা করছি, বাংলার হয়ে আরও ম্যাচ খেলবে এবং দ্রুত ভারতীয় দলেও ফিরবে।’’
বাংলা শিবিরও শামির দিকেই তাকিয়ে রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে দ্রুত প্রতিপক্ষের উইকেট তুলে নেওয়ার জন্য অনুষ্টুপদের সেরা বাজি হতে পারেন তিনি। ঢেকে দিতে পারেন দলের ব্যাটিং ব্যর্থতা। টস জিতে ইন্ডোরের ২২ গজে বাংলাকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন মধ্যপ্রদেশের অধিনায়ক শুভম শর্মা। ইন্ডোরের ২২ গজে সুবিধা করতে পারেননি বাংলার ব্যাটারেরা। ২২৮ রানেই শেষ হয়ে যায় বাংলার ইনিংস। ৪২ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলা। ৭৯ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন শাহবাজ় এবং অনুষ্টুপ। ষষ্ঠ উইকেটে তাঁদের জুটিতে ওঠে ৯৬ রান। এই জুটিই অক্সিজেন জুগিয়েছে বাংলার ইনিংসকে। ঘাড়ে চোটের জন্য নিজের চার নম্বর জায়গায় ব্যাট করতে পারেননি অনুষ্টুপ। সাত নম্বরে ব্যাট করতে নামেন। অধিনায়কের চোটও সমস্যায় ফেলেছে বাংলাকে। শাহবাজ় ৮০ বলে ৯২ রানের আগ্রাসী ইনিংস খেলেছেন ১৬টি চার এবং ১টি ছয়ের সাহায্যে। অনুষ্টুপের ব্যাট থেকে এসেছে ৬৯ বলে ৪৪ রানের লড়াকু ইনিংস।
দিনের শেষে মধ্যপ্রদেশের প্রথম ইনিংসের রান ১ উইকেটে ১০৩। ২২ গজে রয়েছেন শুভ্রাংশু সেনাপতি (অপরাজিত ৪৪) এবং রজত পাটিদার (৪১)। প্রথম দিনের শেষে বাংলা চাপে থাকলেও আশাবাদী কোচ। লক্ষ্মী বললেন, ‘‘এখনও ম্যাচের তিন দিন রয়েছে। আমরা লড়াইয়ে ফিরবই।’’ চোট সারিয়ে মাঠে ফেরা শামিই ভরসা বাংলার।