রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সঙ্গে রোহিত শর্মা। —ফাইল চিত্র।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের এক দিনের সিরিজ়ে দলে নেওয়া হয়েছে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে। এশিয়া কাপে অক্ষর পটেল চোট পেতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড। কেন দেড় বছর পরে এক দিনের ক্রিকেটে ফেরানো হল এই অফ স্পিনারকে? যেখানে আর কয়েক দিন পরেই বিশ্বকাপ, সেখানে ঠিক তার আগে অশ্বিনকে দলে ফেরানোর পিছনে কারণ কী?
বাঁহাতি স্পিনার অক্ষর চোট পেয়েছেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ়ে নেই। আর এক বাঁহাতি স্পিনার কুলদীপ যাদবকে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম দু’টি ম্যাচের দলে রাখা হয়নি। তাঁকে তৃতীয় ম্যাচে দলে ফেরানো হবে। এই সুযোগে অশ্বিনকে খেলিয়ে দেখে নেওয়া হচ্ছে। আসলে ভারতের বিশ্বকাপের দলে কোনও অফ স্পিনার নেই। অক্ষর সুস্থ না হলে অশ্বিন এবং ওয়াশিংটন সুন্দরের মধ্যে কাউকে দলে নেওয়া হবে। নির্বাচক প্রধান অজিত আগরকর বলেন, “আশা করি অক্ষর সুস্থ হয়ে উঠবে। কিন্তু যদি না হয়, তাহলে তো অন্য কাউকে নিতে হবে। ওয়াশিংটন এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলেছিল। অশ্বিনের অভিজ্ঞতা প্রচুর। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আমরা ওদের দেখে নিতে পারব।”
২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শেষ বার এক দিনের ম্যাচ খেলেছিলেন অশ্বিন। ১৮ মাস পর দলে ফেরানো হল তাঁকে। অশ্বিন এত দিন জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ছিলেন। সেখানে কোচ সাইরাজ বাহুতুলের প্রশিক্ষণে অনুশীলন করছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ দিন এক দিনের ক্রিকেট খেলেননি তিনি। এই অবস্থায় একেবারে বিশ্বকাপে তাঁকে খেলিয়ে দেওয়া হলে সেটা কি ঠিক হবে? অধিনায়ক রোহিত মনে করেন, অশ্বিনের দীর্ধ দিন এক দিনের ক্রিকেট না খেলাটা কোনও বড় ব্যাপার নয়। রোহিত বলেন, “অশ্বিনের অভিজ্ঞতা প্রচুর। ম্যাচ খেলতে পারছে কি না সেটা বড় ব্যাপার নয়। সেই কারণেই অশ্বিনকে দলে নেওয়া হয়েছে। মানসিক ভাবে ও নিজেকে অনেক তাড়াতাড়ি তৈরি করে নিতে পারবে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলার সময় আমরা দেখে নিতে পারব যে, ও কতটা ম্যাচ ফিট। এমন তো নয় যে, ও অনেক দিন ক্রিকেট খেলেনি। এই বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে খেলেছে, যত দূর জানি তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগেও খেলেছে।”
বিশ্বকাপের দল ঘোষণার পর থেকেই প্রশ্ন উঠছিল অশ্বিনের বাদ পড়া নিয়ে। আইসিসির ক্রমতালিকায় টেস্টে বিশ্বের এক নম্বর বোলার অশ্বিন। কিন্তু ঘটনা হল লাল বলের ক্রিকেটেও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বাদ পড়তে হয় তাঁকে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যেমন নেওয়া হয়নি তাঁকে। যেখানে টেস্ট দলেই বাদ পড়তে হয় এক নম্বর বোলারকে, সেখানে বিশ্বকাপের দলে অশ্বিন কী করে থাকবেন! প্রশ্ন উঠেছিল, ক্রিকেটীয় যুক্তিতে কি বাদ পড়তে হল অশ্বিনকে?
বাংলার প্রাক্তন স্পিনার সৌরাশিস লাহিড়ী সেই সময় অশ্বিনকে দলে রাখার কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “ভারতের সর্বকালের সেরা বোলারদের তালিকায় বেশ উপরের দিকে থাকবে অশ্বিন। ওর বোলিং নিয়ে তো প্রশ্ন উঠতেই পারে না। অশ্বিনকে অবশ্যই দলে রাখা উচিত ছিল। বিপক্ষে যদি বাঁহাতি ব্যাটার বেশি হয়, তখন কিন্তু তিন জন বাঁহাতি স্পিনার নিয়ে বিপদে পড়তে পারে ভারত। অশ্বিন থাকলে সেই সমস্যা হত না।”
হয়তো দল ঘোষণার পরে টনক নড়েছে নির্বাচকদের। নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেই হয়তো অশ্বিনকে বিশ্বকাপের দলে ঢোকানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দিলেন আগরকররা।