টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাবর এখন আর পাকিস্তানের সেরা ব্যাটার নন। ছবি: টুইটার।
কয়েক দিন পরেই শুরু হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২০ ওভারের ক্রিকেট মানেই রানের বন্যা। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, বাবর আজম, ডেভিড ওয়ার্নার, জস বাটলার-সহ অনেকেই ম্যাচের বরং বদলে দিতে পারেন ব্যাট হাতে। নামের তালিকা বেশ দীর্ঘ। পাকিস্তানের সেরা বাজি হতে পারেন মহম্মদ রিজওয়ান। অধিনায়ক বাবরের থেকেও বেশি বিপজ্জনক তিনি।
এই মুহূর্তে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অন্যতম সেরা ব্যাটার পাক উইকেট রক্ষক। পরিসংখ্যান অন্তত তেমনই বলছে। বাবর, কোহলি, রোহিত, ওয়ার্নার, বাটলারের মতো আগ্রাসী ব্যাটারের থেকে বেশ খানিকটা এগিয়ে রয়েছেন রিজওয়ান। যদিও আইসিসির টি-টোয়েন্টি ব্যাটারদের ক্রমতালিকায় এক হাজার দিনের বেশি শীর্ষে ছিলেন পাক অধিনায়ক বাবর।
রিজওয়ান পাকিস্তানের ইনিংস শুরু করেন বাবরের সঙ্গে। আইসিসির টি-টোয়েন্টি ব্যাটারদের ক্রমতালিকায় তিনিই এখন শীর্ষে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভারতের সূর্যকুমার যাদবের থেকে রিজওয়ান এগিয়ে রয়েছেন ৮০ পয়েন্টে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এক হাজার রান রয়েছে এমন ব্যাটারদের মধ্যে রিজওয়ানের গড়ই সব থেকে বেশি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা কোহলির থেকে বেশ খানিকটা এগিয়ে রয়েছেন তিনি। ৩৯টি ম্যাচ খেলে ১৬৮২ রান করেছেন রিজওয়ান। গড় ৭৬.৪৫। একটি শতরান এবং ১৫টি অর্ধশতরান রয়েছে তাঁর। সর্বোচ্চ রান অপরাজিত ১০৪। দ্বিতীয় স্থানে থাকা কোহলি ৬৮টি ম্যাচে ৬২.৯ গড়ে করেছেন ২৫১৬ রান। একটি শতরান এবং ২৩টি অর্ধশতরান রয়েছে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের। সর্বোচ্চ অপরাজিত ১২২।
এই তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছেন স্কটল্যান্ডের রিচি বেরিংটন। ৩৪টি ম্যাচ খেলে ৫৭.৯৪ গড়ে ১০৪৩ রান করেছেন স্কটিশ ব্যাটার। একটি শতরান এবং চারটি অর্ধশতরান রয়েছে তাঁর। সর্বোচ্চ ১০০। তালিকার চতুর্থ স্থানে ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের কোচের ৩২টি ম্যাচে ১২৭৯ রান রয়েছে। গড় ৫৫.৬। একটি শতরান এবং ১১টি অর্ধশতরান রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। সর্বোচ্চ ১২৩। পঞ্চম স্থানে আছেন আফগানিস্তানের নাজিবুল্লাহ জ়াদরান। ৫৬টি ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ ১১৬০ রান। আফগান ব্যাটারের গড় ৫০.৪৩। সাতটি অর্ধশতরান রয়েছে তাঁর। জ়াদরানের সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭২। তালিকার ষষ্ঠ এবং সক্রিয় খেলোয়াড়দের মধ্যে পঞ্চম স্থানে জস বাটলার। ৪৮টি ম্যাচে ১২৮০ রান রয়েছে তাঁর। গড় ৪৭.৪। একটি শতরান এবং ১০টি অর্ধশতরান রয়েছে ইংল্যান্ড অধিনায়কের। সর্বোচ্চ অপরাজিত ১০১। বাটলারের পর রয়েছেন ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। তিনি ৪৩টি ম্যাচে করেছেন ১৬৪৩ রান। গড় ৪৬.৯৪। একটি শতরান এবং ১৭টি অর্থশতরান রয়েছে রাহুলের। সর্বোচ্চ অপরাজিত ১০১। এই তালিকার আট নম্বরে রয়েছেন বাবর। ৫৬টি ম্যাচে ২০৯৪ রান করেছেন পাক অধিনায়ক। তাঁর গড় ৪৬.৫৩। দু’টি শতরান এবং ১৯টি অর্ধশতরান করেছেন বাবর। সর্বোচ্চ ১২২। পরিসংখ্যানের হিসাবে সতীর্থ রিজওয়ানের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন বাবর।
চাপের মুখে ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রেও বাবরের থেকে এগিয়ে রয়েছেন রিজওয়ান। পরে ব্যাট করে অন্তত ৭০০ রান করেছেন এমন ব্যাটারদের তালিকায় সর্বোচ্চ গড় কোহলির। ৩৮টি ম্যাচে ৮৫.৫ গড়ে করেছেন ১৫৩৯ রান। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাটলার ২৬টি ম্যাচে ৭৮.৩৩ গড়ে করেছেন ৭০৫ রান। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন রিজওয়ান। ২৩টি ম্যাচে ৬০.১৫ গড়ে করেছেন ৭৮২ রান। চতুর্থ স্থানে শোয়েব মালিক। ৩৯টি ম্যাচে ৫৫.৯২ গড়ে তাঁর সংগ্রহ ৭২৭ রান। তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছেন অইন মরগ্যান। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক ৩৮টি ম্যাচে ৫৩.৬২ গড়ে ৮৫৮ রান করেছেন। ষষ্ঠ স্থানে রয়েছেন বাবর। ২৮টি ম্যাচে ৪৮.৪৭ গড়ে পাক অধিনায়কের সংগ্রহ ১০১৮ রান।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাবর নন, আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সেরা বাজি হতে পারেন রিজওয়ানই। কারণ আরও পরিসংখ্যান রয়েছে রিজওয়ানের পক্ষে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাকিস্তানের ওপেনিং ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক বাবর হলেও গড়ের দিক থেকে এগিয়ে রিজওয়ানই। ৬০টি ম্যাচে ওপেনার হিসাবে বাবর ৪১.০১ গড়ে ২১৭৪ রান করেছেন। অন্য দিকে, রিজওয়ান ৪৪টি ম্যাচে ইনিংস শুরু করে ৬৬.৮৭ গড়ে করেছেন ২০৭৩ রান।
চলতি বছরের পারফরম্যান্সেও অধিনায়ককে পিছনে ফেলে দিয়েছেন রিজওয়ান। তিনি ২০২০ সালে ৪৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ৬৬.৮৭ গড়ে ২০৭৩ রান করেছেন। বাবর ৪১টি ম্যাচে ৩৫.১৯ গড়ে ১২৬৭ রান করেছেন। রিজওয়ান একটি শতরান এবং ২০টি অর্ধশতরান করেছেন। বাবরের ব্যাট থেকে এসেছে দু’টি শতরান এবং ১০টি অর্ধশতরান। সবমিলিয়ে রিজওয়ানের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন বাবর।