সম্মান: অ্যালান বর্ডার পদক জিতে মিচেল স্টার্ক। ছবি রয়টার্স।
বিশ্বের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার তিনি। দেশকে অনেকবারই একার হাতে ম্যাচ জিতিয়েছেন। সেই মিচেল স্টার্ক জানিয়েছেন, গত বছরে তিনি ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন!
গত বছরের অনেকটা সময় খারাপ গিয়েছিল স্টার্কের কাছে। শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও। তার পরে দুঃসময় কাটিয়ে দারুণ ভাবে প্রত্যাবর্তন করেন স্টার্ক। এবং, এক ভোটে মিচেল মার্শকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার, অ্যালান বর্ডার পদকও জিতে নেন তিনি। আর তার পরে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ওয়েবসাইটে স্টার্ক বলেন, ‘‘গত বছরটা আমার কাছে খুবই খারাপ গিয়েছিল। মাঠ এবং মাঠের বাইরেও। যে রকম খেলতে চাইছিলাম, সে রকম পারছিলাম না। একটা সময় তো এমন এসেছিল যে, ক্রিকেটটা না খেলার কথাও ভাবছিলাম।’’
বল হাতে প্রত্যাশিত সাফল্য না পাওয়ার পাশাপাশি আরও একটা লড়াই লড়তে হচ্ছিল স্টার্ককে। তাঁর বাবা ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ভারতের বিরুদ্ধে ২০২০-২১ সালের সিরিজ়ে একেবারেই ভাল বল করতে পারেননি স্টার্ক। চার টেস্টে মাত্র ১১টি উইকেট নিয়েছিলেন, গড় ছিল ৪০.৭২। সেই সিরিজ়ের পরে বাবাকেও হারান তিনি।
এর পরে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেননি এই বাঁ-হাতি ফাস্ট বোলার। ফাইনালে চার ওভারে ৬০ রান দিয়েছিলেন। যদিও নিউজ়িল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া। খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য স্টার্কের কড়া সমালোচনাও করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি স্পিনার শেন ওয়ার্ন। যা ভাল ভাবে নিতে
পারেননি স্টার্ক।
কিন্তু অ্যাশেজে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন করেন স্টার্ক। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচটি টেস্টেই খেলেছিলেন তিনি। তুলে নিয়েছিলেন ১৯টি উইকেট। বোলিং গড় ছিল ২৫.৩৭। তার পরে ওয়ার্নের উদ্দেশে স্টার্ক বলেছিলেন, ‘‘আমার মনে হয়, ওয়ার্ন বলেছিল, এটা কী বল হচ্ছে? লেগস্টাম্পে ফুলটস!’’ যোগ করেন, ‘‘আমি কী নিয়ে ওয়ার্নের সঙ্গে কথা বলব? আমার কোনও আগ্রহ নেই। ওয়ার্ন নিজের বক্তব্য জানাতেই পারে।’’ এখানেই শেষ নয়। স্টার্ক আরও বলেন, ‘‘আমি যে ভাবে ক্রিকেটটা খেলি, সে ভাবেই খেলে যাব। আমি আমার পরিবারকে পাশে পাচ্ছি। আর দারুণ সব সতীর্থের সঙ্গেও আমি ক্রিকেটটা খেলার সুযোগ পাচ্ছি। তাই নিজের অবস্থান নিয়ে আমি খুশি।’’ গত ১২ মাসে সব ধরনের ক্রিকেট মিলিয়ে ৪২টি উইকেট পেয়েছিলেন স্টার্ক। তিনি হলেন অস্ট্রেলিয়ার পঞ্চম ফাস্ট বোলার, যিনি অ্যালান বর্ডার পদক জিতলেন। বাকি চার জন হলেন গ্লেন ম্যাকগ্রা, ব্রেট লি, মিচেল জনসন এবং প্যাট কামিন্স। গত বছর সাদা বলের ক্রিকেটে দুরন্ত ছন্দে ছিলেন অলরাউন্ডার মিচেল মার্শও। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে অসাধারণ খেলে অস্ট্রেলিয়াকে জয় এনে দেন মার্শ। কিন্তু বর্ষসেরার লড়াইয়ে এক ভোটের ব্যবধানে তিনি হেরে যান স্টার্কের কাছে।