(বাঁদিকে) বিরাট কোহলি এবং গৌতম গম্ভীর। —ফাইল চিত্র।
আইপিএল শুরুর আগে আবার পুরনো বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন আফগানিস্তানের নবীন উল হক। গত মরসুমে বিরাট কোহলির সঙ্গে গৌতম গম্ভীরের ঠিক কী নিয়ে ঝগড়া হয়েছিল, তা জানিয়েছেন লখনউ সুপার জায়ান্টসের ক্রিকেটার। প্রায় এক বছর পর মুখ খুললেন সেই ঘটনায় প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত নবীন।
কোহলি এ বারও খেলবেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে। গম্ভীর শিবির বদল করে এ বার কলকাতা নাইট রাইডার্সের মেন্টর। গত বছর বেঙ্গালুরু-লখনউ ম্যাচের উত্তেজনা কি ফিরে আসতে পারে এ বারের বেঙ্গালুরু-কলকাতা ম্যাচে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হবে ক্রিকেটপ্রেমীদের। তবে গত এক দিনের বিশ্বকাপের সময় কোহলির সঙ্গে ঝগড়া মিটিয়ে নিয়েছেন আফগান জোরে বোলার।
গত বছর আইপিএলে কোহলি এবং গম্ভীরের প্রকাশ্যে ঝগড়া উত্তাপ বৃদ্ধি করেছিল আইপিএলের। ক্রিকেট মহলের সকলেরই মনে আছে সেই ঘটনা। আইপিএল শুরুর ১৯ দিন আগে সেই বিতর্ক নিয়ে কথা বলেছেন নবীন। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘আমরা বেঙ্গালুরুতে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলাম। সেই ম্যাচ থেকেই সমস্যার শুরু। খুব হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল। জেতার পর আমাদের আবেশ খান উত্তেজনায় হেলমেট ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল। বিষয়টা সম্ভবত পছন্দ হয়নি কোহলির। তার পর ওরা লখনউয়ে খেলতে এসেছিল। সেই ম্যাচে আমি ৯ অথবা ১০ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলাম। সে বারও আমরা অল্প ব্যবধানে হেরে গিয়েছিলাম।’’ এর পর তিনি বলেছেন, ‘‘প্রত্যাশা করিনি হেরে যাওয়ার পর আমাকে কটাক্ষ (স্লেজিং) করা হবে। অথচ সেটাই হয়েছিল। বেঙ্গালুরুর এক জন ক্রিকেটারের কটাক্ষ শুনে আমিও মুখ খুলেছিলাম। সেই উত্তেজনাটাই বড় হয়ে গিয়েছিল। কটাক্ষ-পাল্টা কটাক্ষ চলতেই থাকে। খেলা শেষ হওয়ার পর দু’দলের ক্রিকেটারদের করমর্দন করার সময়ও অনেকে উত্তেজিত ছিল। নাম বলেই দিচ্ছি। দু’জনই মূলত কটাক্ষ করেছিল আমাকে। এক জন কোহলি। আর দ্বিতীয় জন মহম্মদ সিরাজ।’’
মাঠে প্রতিপক্ষের ক্রিকেটারকে কটাক্ষ করা ক্রিকেটে নতুন কিছু নয়। সব ক্ষেত্রেই এমন হয়ে থাকে। সেটা ক্রিকেটারদের মধ্যে এবং খেলার মধ্যেই থাকে। দলের কোচ বা অন্য সাপোর্ট স্টাফেরা খুব একটা জড়ান না। কিন্তু গম্ভীর কেন সেই ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছিলেন? নবীন বলেছেন, ‘‘একটানা চলছিল বিষয়টা। আমিই বিরক্ত হয়ে গম্ভীরকে বিষয়টা জানিয়েছিলাম। উনিও বেঙ্গালুরুর ক্রিকেটারদের আচরণে প্রথম ম্যাচেই কিছুটা বিরক্ত হয়েছিলেন। প্রথম ম্যাচে আমাদের শেষ বলে ১ রান দরকার ছিল। সে সময় ওদের বোলার নন স্ট্রাইকার প্রান্তে থাকা আমাদের ব্যাটারকে রান আউট করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেই বোলার উইকেটে বল মারতে পারেনি। হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচের চূড়ান্ত সময় বিষয়টা পছন্দ হয়নি গম্ভীরের। তবে তিনি কোনও কথা বলেননি।’’ নবীন আরও বলেছেন, ‘‘বিষয়টা আমাদের খেলোয়াড়সুলভ মনে হয়নি। কারণ সেই ম্যাচটা দারুণ উচ্চতায় পৌঁছে গিয়েছিল। ও ভাবে রান আউটে খেলা শেষ হলে ভাল উদাহরণ তৈরি হত না। গ্যালারির দর্শকেরাও বেশ উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন। পরিস্থিতি সামলাতে গম্ভীর মুখে আঙুল দিয়ে দর্শকদের চুপ করার অনুরোধ করেছিলেন। গম্ভীর এবং কোহলি দু’জনেই ক্রিকেটের ব্যাপারে ভীষণ আবেগপ্রবণ। সে জন্যই হয়তো বিষয়টা অন্য মাত্রায় চলে গিয়েছিল।’’
নবীন বলতে চেয়েছেন, গম্ভীর বা কোহলি কেউই ব্যক্তিগত ভাবে কারও বিরুদ্ধে ছিলেন না। ক্রিকেটীয় আদর্শ বা অনুভূতির সংঘাত তৈরি হয়েছিল দিল্লির দুই ক্রিকেটারের মধ্যে।