রিঙ্কু সিংহ। —ফাইল চিত্র।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও দ্রুত পরিণত হয়ে উঠছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের রিঙ্কু সিংহ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে হয়ে উঠছেন ভারতীয় দলের ব্যাটিংয়ের অন্যতম ভরসা। সাধারণত শেষ দিকে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে অভ্যস্ত রিঙ্কুকে মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দেখা গেল অন্য রূপে।
ব্যাটিং অর্ডারের উপরের দিকে পাঠানো হয়নি রিঙ্কুকে। নেমেছিলেন নিজের পরিচিত পাঁচ নম্বরেই। তবে খানিকটা অনভ্যস্ত পরিস্থিতিতে। ভারতীয় ইনিংসের ৫.৫ ওভারের মাথায় রিঙ্কু যখন ব্যাট করতে নামলেন, তখন ভারতের রান ৩ উইকেটে ৫৫। সাজঘরে ফিরে গিয়েছেন দুই ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল (শূন্য), শুভমন গিল (শূন্য) এবং তিন নম্বরে নামা তিলক বর্মা (২৯)। চাপের মুখে থাকা দলকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দিল রিঙ্কুর ব্যাট।
কঠিন পরিস্থিতিতেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তাদের মাঠে গুটিয়ে যাননি রিঙ্কু। আবার চেনা আগ্রাসী মেজাজে প্রথম থেকেই বল তুলে মারারও চেষ্টা করেননি। রিঙ্কু জানতেন, ওই পরিস্থিতিতে আরও উইকেট পড়লে হার বাঁচানো কঠিন হবে। মাঠে নেমে রিঙ্কু মন দিলেন ইনিংস গড়ার কাজে। উইকেটের অন্য প্রান্তে আগ্রাসী মেজাজে থাকা অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবকে সঙ্গ দিলেন। আগলে রাখলেন উইকেটের এক প্রান্ত। চেষ্টা করলেন মাটিতে বল রেখে খেলার। ছক্কা মারার বল পেলেও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করলেন। অধিনায়কের সঙ্গে গড়ে তুললেন ৭০ রানের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জুটি।
সূর্যকুমার আউট হওয়ার পরেও নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকলেন মাথা ঠান্ডা রেখে। যে রিঙ্কুর ইনিংসে একের পর এক ছক্কা আছড়ে পড়ে মাঠের বাইরে, সেই রিঙ্কুই প্রথম ছক্কা হাঁকালেন ১৯তম ওভারের প্রথম বলে। পরের বলে আবার ছয়। এ বার আরও বড়। বল ভেঙে দিল স্টেডিয়ামের মিডিয়া বক্সের কাচ। তখন আর শুরুর চাপ নেই। বরং যতটা সম্ভব রান তুলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য রাখা দরকার। বোলারদের লড়াই করার মতো পুঁজি তৈরি করে দেওয়া দরকার। রিঙ্কু সেই কাজেই মন দিলেন দলকে চাপমুক্ত করার পর। উইকেটের অন্য প্রান্তে রবীন্দ্র জাডেজার মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার থাকলেও নিজের কাঁধেই দায়িত্ব তুলে নিলেন কেকেআরের তরুণ ব্যাটার।
বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার সময়ও অপরাজিত রিঙ্কু। তাঁর নামের পাশে ৩৯ বলে ৬৮ রানের ইনিংস। যা সাজানো ৯টি চার এবং ২টি ছক্কা দিয়ে। সেই দুই ছক্কা যা তাঁর ব্যাট এসেছে ১৯তম ওভারে। তার আগে পর্যন্ত পরিণত হয়ে ওঠা রিঙ্কু ছিলেন সংযমে মোড়া। এর পর আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে থাকার ক্ষেত্রে রিঙ্কু নিজের দাবি আরও দৃঢ় করলেন। কারণ, ২০ ওভারের ক্রিকেটে তিনিই এখন দেশের সেরা ফিনিশার।