রিঙ্কু সিংহ। —ফাইল চিত্র।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারতের নতুন ফিনিশার বলা হচ্ছে রিঙ্কু সিংহকে। আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলেও কলকাতা নাইট রাইডার্সের ব্যাটারকে দেখা যেতে পারে। গত বছর আইপিএলে আমদাবাদে গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতানো রুদ্ধশ্বাস ইনিংসের পর থেকেই আলোচনা এবং আকর্ষণের কেন্দ্রে রয়েছেন রিঙ্কু। তবু তাঁর বাবা সংসার চালানোর জন্য এখনও নিয়মিত পরিশ্রম করে চলেছেন।
ছেলে বিশ্ব ক্রিকেটে নজর কাড়লেও নিজের জীবন পরিবর্তন করতে চান না রিঙ্কুর বাবা খানচাঁদ সিংহ। আগের মতো এখনও তিনি বাড়ি বাড়ি রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার সরবরাহ করে চলেছেন। সম্প্রতি রিঙ্কুর বাবা একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। তাতে দেখা যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গাড়িতে এলপিজি সিলিন্ডার তুলছেন খানচাঁদ। এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
ক্রিকেটীয় সাফল্য পাওয়ার নতুন ফ্ল্যাট কিনেছেন রিঙ্কু। পরিবারের এখন আর আগের মতো দারিদ্র নেই। রিঙ্কুর আয়ে যথেষ্ট সচ্ছল পরিবার এখন। তা হলে খানচাঁদ কেন এখনও রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহের কাজ করছেন? ভাইরাল হওয়া খানচাঁদের ভিডিয়ো বিস্ময় তৈরি করেছে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যেও। তা হলে কি তারকা হয়ে ওঠা রিঙ্কু বাবা-মায়ের খেয়াল রাখছেন না?
বিষয়টা একদমই তেমন নয়। খানচাঁদের এখনও প্রতি দিন পরিশ্রম করা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল রিঙ্কুকে। কেকেআর ব্যাটার বলেছেন, ‘‘বাবাকে অনেক বার বলেছি বিশ্রাম নেওয়ার জন্য। আমাদের অবস্থা এখন যথেষ্ট ভাল। ভারী সিলিন্ডারগুলো বাবার প্রতি দিন তোলার কোনও দরকার নেই। কিন্তু বাবা কাজ বন্ধ করতে নারাজ। নিজের কাজের প্রতি বাবার অসম্ভব ভালবাসা। তাই যত দিন পারবেন, তত দিন কাজ করে যেতে চান।’’ রিঙ্কু আরও বলেছেন, ‘‘বাবা সারা জীবন কঠোর পরিশ্রম করেছেন। নিজেকে কাজের মধ্যেই রাখতে চান। এত দিন যে কাজ করেছেন, সেই কাজই করে চলেছেন। তাই বাবাকে বসে থাকতে বাধ্য করতে চাইছি না।’’ রিঙ্কুর কথায়, তাঁর বাবা স্বেচ্ছায় বেছে নেননি বিলাসের জীবন। পরিবারের কারও কথা শোনেননি তিনি। ক্রিকেটপ্রেমীরা প্রশংসা করেছেন রিঙ্কুর বাবার। তাঁর পরিশ্রম এবং কাজের প্রতি ভালবাসাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।
আগামী আইপিএলেও কেকেআরের হয়ে খেলবেন রিঙ্কু। ২০১৮ সালে প্রথম আইপিএলের কলকাতা ফ্র্যাঞ্চাইজ়িতে যোগ দিয়েছিলেন রিঙ্কু। তখন তাঁকে ৮০ লাখ টাকা দিয়ে নিয়েছিলেন কেকেআর কর্তৃপক্ষ। প্রথম কয়েক বছর খেলার সুযোগ পাননি তেমন। তাই তাঁর দাম কমেছে। এখন বছরে কেকেআরের কাছ থেকে রিঙ্কু পান ৫৫ লাখ টাকা। গত বছর থেকে কেকেআরের প্রথম একাদশে নিয়মিত হয়েছেন আগ্রাসী ব্যাটার। ভারতের টি-টোয়েন্টি দলেও তিনি এখন নিয়মিত সদস্য। তবু নিয়মিত নিজের কাজ করে চলেছেন খানচাঁদ। ছেলের বদলে যাওয়া জীবনে এখনই গা ভাসিয়ে দিতে নারাজ তিনি।