Wriddhiman Saha

Wriddhiman Saha: পারফরম্যান্স নয়, একের পর এক চোটই বিপক্ষে যাচ্ছে ঋদ্ধিমান সাহার

বলা হচ্ছে, ঋদ্ধির পারফরম্যান্সে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট খুশি নয়। কিন্তু যা জানা গেল, তাঁর বিপক্ষে বেশি যাচ্ছে একের পর এক চোট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১২:০৯
Share:

ঋদ্ধিমান সাহা। ফাইল চিত্র

ঋদ্ধিমান সাহার ক্রিকেটজীবন শেষ কি না, তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। বলা হচ্ছে, ঋদ্ধির যা পারফরম্যান্স, তাতে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট খুশি নয়। ঋদ্ধিকে এক রকম বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁকে আর ভারতীয় দলে ভাবা হচ্ছে না। কিন্তু যা জানা গেল, পারফরম্যান্সের থেকেও বাংলার এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারের বিপক্ষে বেশি যাচ্ছে তাঁর একের পর এক চোট।

Advertisement

গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, ঋদ্ধি এক বার করে চোট থেকে সেরে উঠেছেন, তার পর আবার নতুন করে চোট পেয়েছেন। আধুনিক ক্রিকেটে যেখানে চূড়ান্ত ফিট থাকা সবার আগে প্রয়োজন, সেখানে ঋদ্ধির বার বার চোট পাওয়া দলে তাঁর জায়গা অনিশ্চিত করে তুলেছে।

২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ঋদ্ধি প্রথম বড় চোট পান। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে সে বার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে যান। সেই চোট নিয়ে প্রচণ্ড বিতর্ক হয়। ঋদ্ধিকে পাঠানো হয় বেঙ্গালুরুতে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে (এনসিএ)। কিন্তু সেখানে গিয়ে কাঁধের ব্যথার কথাও বলেন ঋদ্ধি। এমআরআই স্ক্যানের পর ডাক্তার নারায়ণস্বামীর তত্ত্বাবধানে আলট্রাসাউন্ড ইঞ্জেকশন দিয়ে বলা হয়, ঋদ্ধি সুস্থ। এনসিএ-ও খেলার ছাড়পত্র দেয় ঋদ্ধিকে।

Advertisement

আইপিএল-এ ঋদ্ধিমান। ফাইল চিত্র

সেই ছাড়পত্র নিয়ে আইপিএল-এ সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলেন তিনি। কিন্তু যে কাঁধে ব্যথার কথা বলেছিলেন, কিপিং করতে গিয়ে সেই কাঁধের উপরে ভর দিয়েই দু’ বার পড়েন। সানরাইজার্স তাঁকে দিল্লির এক ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে দ্বিতীয় একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়।

ঋদ্ধির সমস্যা বাড়ে ইডেনে। সেই আইপিএল-এই কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে প্লে-অফ ম্যাচে শিবম মাভির বলে তাঁর বুড়ো আঙুল ভেঙে যায়। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে এক ম্যাচের টেস্ট সিরিজ থেকে ছিটকে যান। দেড় মাসের রিহ্যাবের নির্দেশ দেওয়া হয়। আঙুল ঠিক হয়ে যাওয়ার পরে এনসিএ-তে অনুশীলন শুরু করলেও নতুন করে কাঁধে ব্যথা অনুভব করেন। ফের স্ক্যান করে দেখা যায়, অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। মুম্বইয়ের ডাক্তার তৃতীয় একটি ইঞ্জেকশন দেন। কোনও উন্নতি হয়নি। ইংল্যান্ড সিরিজের দল ঘোষিত হয়। কিন্তু ঋদ্ধির ব্যাপারে একটি শব্দও বলা হয় না।

২০১৯ সালের অক্টোবরে রাঁচিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্টে অশ্বিনের বলে ফের ডান আঙুলে চোট পান। সেই বছরই ই়ডেনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দিন-রাতের টেস্টে ডান হাত ভেঙে যায় ঋদ্ধির। অস্ত্রোপচার করতে হয়।

এর পর ২০২০ সালের আইপিএল। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ম্যাচে কুঁচকিতে চোট পান ঋদ্ধি।

ঋদ্ধির চোটের তালিকায় শেষ সংযোজন গত নভেম্বরে ঘাড়ের চোট। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে কানপুর টেস্টের তৃতীয় দিন হঠাৎ দেখা যায় ঋদ্ধি মাঠে নেই। তাঁর বদলে কিপিং করতে নেমেছেন শ্রীকর ভরত। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিবৃতি দিয়ে জানায়, ‘ঘাড়ে ব্যথা হয়েছে ঋদ্ধিমানের। বোর্ডের মেডিক্যাল দল তাঁকে পর্যবেক্ষণে রেখেছে। তাঁর চিকিৎসা চলছে। তাঁর বদলে কিপিং করবেন ভরত।’ সেই টেস্টেই দ্বিতীয় ইনিংসে চোট নিয়ে ঋদ্ধি ১২৬ বলে ৬১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন।

ফলে তাঁর উইকেট কিপিং নিয়ে তো নয়ই, এমনকী ব্যাটিং নিয়েও তেমন প্রশ্ন উঠছে না। জানা যাচ্ছে, চোটই ঋদ্ধির সব থেকে বেশি বিপক্ষে যাওয়ার কারণ। তাঁর অভিষেকের পর থেকে ভারত এখনও পর্যন্ত ১২৫টি টেস্ট খেলেছে। অথচ এই মুহূর্তে দেশের, হয়ত বিশ্বের এক নম্বর উইকেটরক্ষক হয়েও বাংলার ঋদ্ধি ওই ১২৫টির মধ্যে মাত্র ৪০টি টেস্ট খেলতে পেরেছেন।

সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, সিএবি কর্তারা ঋদ্ধিকে প্রচুর বোঝানোর চেষ্টা করেছেন রঞ্জি খেলার জন্য। কিন্তু তাঁরা সফল হননি। নাছোড় ঋদ্ধি ‘ব্যক্তিগত কারণের’ জন্য এই মরসুমের রঞ্জি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement