IPL

আইপিএল নিলামে তিন ইংরেজকে নিয়ে কাড়াকাড়ি! কারেন, স্টোকসদের পকেটে ৪৮ কোটি

স্যাম কারেন সবচেয়ে বেশি দাম পেয়ে আইপিএলের নজির ভেঙে দিলেন। তার পরেই রয়েছেন বেন স্টোকস। সবার আগে কাড়াকাড়ি হল হ্যারি ব্রুককে নিয়ে। সেই বাজারেও অবিক্রিত জো রুট।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:০৩
Share:

আইপিএল নিলামে ১৬ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা দর উঠল বেন স্টোকসের। ফাইল ছবি

ক্রিকেট তাঁর রক্তে। বাবা প্রাক্তন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। দুই ভাইও ক্রিকেট খেলেন। তবে স্যাম কারেন বাকি সবাইকে ছাপিয়ে গেলেন। নাম তুলে ফেললেন আইপিএলের ইতিহাসে। সাড়ে ১৮ কোটি! এত দামে আইপিএলে এর আগে কোনও ক্রিকেটার বিক্রি হননি। সব নজির ভেঙে দিলেন কারেন। তিনি, হ্যারি ব্রুক এবং বেন স্টোকসকে নিয়ে শুক্রবার কোচিতে নিলামে কাড়াকাড়ি হয়ে গেল। একমাত্র জো রুট বাদে সব ইংরেজ ক্রিকেটারকে নিয়েই লড়াই হল এ দিন। তিন ইংরেজ ক্রিকেটারের মোট দাম উঠল ৪৮ কোটি টাকা। কারেনকে নিল পঞ্জাব। ব্রুক গেলেন হায়দরাবাদে। স্টোকসকে নিল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দল চেন্নাই। ইংরেজদের নিয়ে এই কাড়াকাড়িতেও শিকে ছিঁড়ল না জো রুটের। নিলামে অবিক্রিত থাকলেন তিনি।

Advertisement

কারেনের বাবা কেভিন অতীতে জিম্বাবোয়ের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন। তিন ছেলেকেই ক্রিকেটার বানাতে চেয়েছিলেন। সে কাজে তিনি সফল। ছোটবেলায় জিম্বাবোয়ের অনূর্ধ্ব-১৩ দলের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন কারেন। তবে পরে কারেনের পরিবার ইংল্যান্ডে চলে আসে। সেখানেই ক্রিকেটে বিকাশ।

কেন কারেনকে নিয়ে এত কাড়াকাড়ি হল নিলামে? এর পিছনে উঠে আসছে বেশ কয়েকটি কারণ। প্রথমত, কারেন এক জন অলরাউন্ডার। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এমনিতেই গত কয়েক বছরে অলরাউন্ডারের গুরুত্ব ব্যাপক বেড়েছে। প্রতি দলই চায় এমন একজন ব্যাটারকে, যিনি একটু বল করে দিতে পারেন। অথবা একজন বোলারকে যিনি দরকারে ব্যাটট করে দিতে পারেন। সেই চাহিদা ভাল ভাবেই পূরণ করতে পারেন কারেন।

Advertisement

দ্বিতীয়ত, বলের বৈচিত্র। ডানহাতি ব্যাটারদের ক্ষেত্রে বল সুইং করাতে তাঁর জবাব নেই। আইপিএলে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলিতে যদি তিনি নিজের এই গুণ কাজে লাগাতে পারেন, তা হলে চমক দেখাতেই পারেন। তৃতীয়ত, পরিষ্কার শট। কারেন ব্যাটিং করার সময় এমন ঘটনা খুব কমই হয়েছে, যখন তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে কোনও বল ক্যাচ হয়েছে। আধুনিক ক্রিকেটে কারেন এমন এক জন ব্যাটার, যিনি দেখে বল বাউন্ডারির বাইরে পাঠাতে পারেন। চতুর্থত, আইপিএলে খেলার অভিজ্ঞতা। অতীতে ভারতের একাধিক দলের আইপিএলে খেলেছেন কারেন। যে দল তাঁকে কিনেছে, সেই পঞ্জাবে খেলেছেন তিনি। হ্যাটট্রিকও রয়েছে তাঁর পকেটে।

কিছু দিন আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। সেই প্রতিযোগিতার সেরা ক্রিকেটার হন তিনি। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচেই দুর্দান্ত বোলিং করেন তিনি। ইংল্যান্ডের প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ৫টি উইকেট নেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ফাইনালে ১২ রানে ৩ উইকেট নেন। মোট ১৩টি উইকেট নিয়েছিলেন প্রতিযোগিতায়। নিলামের আগে তাঁর এই পারফরম্যান্স যে অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছে তাঁকে, তা বলাই যায়।

হ্যারি ব্রুক আবার সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ছন্দে রয়েছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৩টি টেস্টে ৩টি শতরান করেছেন। প্রথম টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৭ রানে আউট না হলে সেই টেস্টে জোড়া শতরান হত তাঁর। ব্রুক অতীতে ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ভারতে ৫০ ওভারের ৫ ম্যাচের সিরিজ় খেলতে এসেছিল ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-১৯ দল। সেই সিরিজ়ে অধিনায়ক ছিলেন ব্রুক। ২০১৮ অনূর্ধ্ব-১৮ ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শতরান রয়েছে তাঁর। এ বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ়‌ের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় তাঁর। দেশের হয়ে এখনও পর্যন্ত ২০টি টি-টোয়েন্টিতে ৩৭২ রান রয়েছে তাঁর। অগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজে টেস্টে অভিষেক হয়। তবে নজর কেড়ে নিয়েছেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত খেলে। তাঁকে নিয়ে রাজস্থান রয়্যালস এবং হায়দরাবাদের মধ্যে কাড়াকাড়ি হয়। তবে ১৩ কোটি পর্যন্ড বিড করে হাল ছেড়ে দেয় রাজস্থান।

স্টোকস অতীতে রাইজ়িং পুনে সুপারজায়ান্টের হয়ে খেলেছেন। ২০২১-এর আইপিএলে স্টোকস রাজস্থানে ছিলেন। প্রথম কয়েকটি ম্যাচ খেলার পর আঙুল ভাঙায় তিনি দেশে ফিরে যান। সেই আইপিএলে তিনি আর খেলতে পারেননি। এ বছরের আইপিএল থেকে তিনি বিরতি নিয়েছিলেন মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখার জন্যে। এর মাঝে স্টোকসের জীবনে ঘটে গিয়েছে অনেক ঘটনা। জো রুটের জায়গায় তিনি টেস্ট দলে অধিনায়ক হয়েছেন। প্রাক্তন কেকেআর কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালামের অধীনে টেস্টে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে শুরু করেছে ইংল্যান্ড। স্টোকস সেই ধরনের ক্রিকেটের পুরোধা। এক দিনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও টি-টোয়েন্টিতে এখনও দাপটের সঙ্গে খেলছেন তিনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠিন পরিস্থিতিতে তাঁর অর্ধশতরান এখনও কেউ ভুলতে পারেননি। দলের কঠিন সময়ে সবচেয়ে বেশি কাজে আসেন স্টোকস। এই কারণেই তাঁর খ্যাতি বেশি। চেন্নাই সুপার কিংসও সেটাই চাইছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement