Rishabh Pant

৯৮ বলের ইনিংসে গায়ে-মাথায় খেলেন ১২ বার! দায়িত্বজ্ঞানহীন শট খেলে আবার ডোবালেন দলকে

ম্যাচের পরিস্থিতি দেখেন না। দলের কী প্রয়োজন বোঝেন না। ঋষভ পন্থ ব্যাট চালান নিজের খুশিতে। লাগলে তুক, না লাগলে তাক। জুরেল কিন্তু তৈরি হচ্ছেন। পন্থ দেখছেন কি?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১১:২৩
Share:

সিডনিতে বার বার মাথায় বল লাগল ঋষভ পন্থের। মাঠে ফিজিয়ো এলেন শুশ্রূষার জন্য। ছবি: এএফপি।

ব্যাট করতে নেমেছিলেন মধ্যাহ্নভোজের পর। পুরো দ্বিতীয় সেশন ব্যাট করলেন। কিন্তু তৃতীয় সেশন শুরু হতেই সাজঘরে ঋষভ পন্থ। আবার একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন শট এবং তিনি আউট। মেলবোর্নে যেমন পরিস্থিতির তোয়াক্কা না করে শট খেলতে গিয়ে আউট হয়েছিলেন, ঠিক তেমনই আউট হলেন সিডনিতেও। মাঠ বদলায়, ম্যাচ বদলায় কিন্তু পন্থ বদলান না।

Advertisement

সিডনিতে ৯৮টি বল খেললেন পন্থ। তার মধ্যে গায়ে-মাথায় খেলেন ১২বার। পড়ে গেলেন। মাঠে ফিজিয়ো এলেন শুশ্রূষা করতে। অস্ট্রেলিয়ার পেসারেরা জানেন, শর্ট বলের বিরুদ্ধে পন্থের সমস্যা হয়। সেটাকেই বার বার অস্ত্র করছেন তাঁরা। একের পর এক ম্যাচে শর্ট বলে উইকেট দিচ্ছেন পন্থ। ম্যাচের পরিস্থিতি বা দলের প্রয়োজন, কোনওটাই মাথায় রাখছেন না তিনি। কোচ এবং অধিনায়ক বলার পরেও একই ভুল করলেন পন্থ।

অস্ট্রেলিয়া সফর শুরু হওয়ার আগে নিজেদের মধ্যে একটি ম্যাচ খেলেছিল ভারত। সেখানেও মুকেশ কুমার, নীতীশ রেড্ডিরা বল হাতে পন্থকে বার বার বাউন্সার দিচ্ছিলেন। শর্ট বলে পন্থের এই দুর্বলতা গোটা সিরিজ়ে ঢাকা যায়নি। শুক্রবার দ্বিতীয় সেশনে কোনও মতে বাউন্সারগুলির বিরুদ্ধে বাঁচার চেষ্টা করছিলেন। বার বার গায়ে, মাথায় বল লাগছিল। তৃতীয় সেশনে শুরুর দিকে তাঁকে বাউন্সার দেওয়া হয়নি। কিন্তু স্কট বোলান্ড বল করতে এসেই শর্ট বল করলেন। পন্থও লোভ সামলাতে পারলেন না। তিনি ব্যাট চালালেন। বল লাগল ব্যাটের সামনের দিকে। মিড-অনে ক্যাচ নিলেন প্যাট কামিন্স।

Advertisement

সিডনি টেস্টের আগে ভারতীয় দলের সাজঘরের খবর প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। শোনা গিয়েছিল, পরিস্থিতি না বুঝে খেলার জন্য ক্রিকেটারদের ধমক দিয়েছেন কোচ গৌতম গম্ভীর। কোচ গম্ভীর কারও নাম নেননি, কিন্তু তিনি ক্রিকেটারদের খেলায় ক্ষুব্ধ। সেই সব ক্রিকেটারের তিনি সমালোচনা করেছেন, যাঁরা দলের কথা না ভেবে নিজেদের ইচ্ছেমতো শট খেলেছেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করেননি তাঁরা। গম্ভীর কারও নাম না নিলেও মেলবোর্নে দ্বিতীয় ইনিংসে পরিস্থিতি না বুঝে শট খেলার জন্য সমালোচিত হয়েছিলেন পন্থ। তাই মনে করা হচ্ছে তাঁকেই সাবধান করে দিতে চেয়েছেন গম্ভীর। সিডনিতেও নিজেকে শুধরে নিতে পারলেন না পন্থ।

মেলবোর্ন টেস্টের পর পন্থের সমালোচনা করেছিলেন রোহিত শর্মাও। তিনি বলেছিলেন, “পন্থকে বুঝতে হবে ওর কাছ থেকে কী চাওয়া হচ্ছে। এটা কারও বলে দেওয়ার বিষয় নয়। এগুলো নিজেকে বুঝতে হয়। ওর নিজেরই বোঝা উচিত কোন পরিস্থিতিতে কী করা দরকার। কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল।” রোহিত বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, সব সময় ঝুঁকি নেওয়া ঠিক নয়। তাতে হিতে বিপরীত হয়। কিন্তু পন্থ বোঝেননি।

মেলবোর্নে প্রথম ইনিংসে পন্থের আউট হওয়ার ধরন দেখে সমালোচনা করেছিলেন সুনীল গাওস্কর। পন্থকে ‘স্টুপিড’ বলেছিলেন ক্ষুব্ধ গাওস্কর। পার্‌থ টেস্টে প্যাট কামিন্সের অফ স্টাম্পের বাইরের একটি বল ‘পুল’ করে ছক্কা মেরেছিলেন পন্থ। সেই শটের প্রশংসা করেছিলেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের একাংশ। কিন্তু বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির প্রথম টেস্টের সেই পরিস্থিতির থেকে চতুর্থ বা পঞ্চম টেস্টের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। মেলবোর্নে দু’ইনিংসেই কোণঠাসা পরিস্থিতিতে ছিল ভারতীয় ইনিংস। এমন পরিস্থিতিতে অহেতুক আগ্রাসী শট খেলতে গিয়ে দলকে বিপদে ফেলেছিলেন পন্থ। সিডনিতেও প্রয়োজন ছিল ধরে খেলা। সেই সময় হঠাৎ চালাতে গেলেন তিনি।

সিডনি টেস্টের আগে শোনা গিয়েছিল পন্থকে বসিয়ে দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার ধ্রুব জুরেলকে নেটে অনেক ক্ষণ অনুশীলন করতেও দেখা যায়। সিডনিতে তাঁকে বসানো না হলেও আগামী দিনে যে পন্থের বদলে জুরেলকে খেলানো হবে না তা বলা কঠিন। এই ভারতীয় দলে যে অধিনায়ককেও রান না পেলে বসে যেতে হয়। ফলে আগামী দিনে গুরু গম্ভীর আরও একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নেবেন না, তা বলা যায় না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement