বিরাট কোহলি। —ফাইল চিত্র।
গৌতম গম্ভীরকে কোচ করতে গিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে যে দশ বার ভাবতে হয়েছে, তা ক্রমশ পরিষ্কার হচ্ছে। কারণ একটাই। দলে বিরাট কোহলির উপস্থিতি। এখন জানা যাচ্ছে, বিরাটকে প্রায় মুচলেকা দেওয়ার মতো জানাতে হয়েছে যে, গম্ভীর সাজঘরে থাকলেও তাঁর কোনও সমস্যা হবে না। ভবিষ্যতে দু’জনের মধ্যে কোনও ঝামেলা হবে না।
এক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বিরাট বোর্ডকে জানিয়েছেন যে, তাঁর সঙ্গে গম্ভীরের কোনও সমস্যা নেই। বোর্ডের এক কর্তা বলেন, “বিরাট জানিয়েছেন, গম্ভীরের সঙ্গে আগে যে সব ঝামেলা হয়েছিল, সেগুলো তাঁদের সম্পর্কে এখন কোনও প্রভাব ফেলবে না। ড্রেসিংরুমে কোনও সমস্যা হবে না।” নতুন কোচ দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দলের একজন সিনিয়র মহাতারকা কার্যত হলফনামা দেওয়ার মতো করে জানাচ্ছেন, তিনি দলে ভাল ছেলের মতো থাকবেন। তাঁকে নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না। ভারতীয় ক্রিকেটে এরকম ঘটনার নজির হয়তো আর নেই।
ভারতীয় দলের কোচ হিসাবে গম্ভীরের দায়িত্ব দেওয়ার সময় একটাই প্রশ্ন ছিল। বিরাটের সঙ্গে তাঁর সমস্যা হবে না তো? আইপিএলে বিরাট এবং গম্ভীরের মধ্যে একাধিক বার কথা কাটাকাটি হয়েছে। ২০২৩ সালে যা প্রায় হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। এমন দু’জনকে একই দলে রাখলে সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে এক দিনের দলে রাখা হয়েছে বিরাটকে। অর্থাৎ তখনই প্রথম বার কোচ গম্ভীরের সঙ্গে দেখা হবে ক্রিকেটার বিরাটের। তাঁদের সম্পর্কের উপর নির্ভর করবে দলের অন্দরের পরিবেশও। টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন বিরাট। তাই এই সফরে শুধু এক দিনের দলেই দেখা যাবে তাঁকে।
বিরাট-গম্ভীর বিতর্কের সূত্রপাত গত বছর আইপিএলে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে লখনউ সুপার জায়ান্টসের ম্যাচ ছিল। তখন গম্ভীর মেন্টর ছিলেন লখনউ সুপার জায়ান্টসের। ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ার পর মাঠেই কথা কাটাকাটি হয় দু’জনের। যদিও ২০২৪ সালের আইপিএলে তার কোনও আঁচ পড়েনি। গম্ভীর এই বছর কলকাতা নাইট রাইডার্সের মেন্টর ছিলেন। মাঠে কোনও বিরোধ দেখা যায়নি তাঁদের।
বিরাট এবং গম্ভীর দু’জনেই একই রাজ্যের। দিল্লি থেকে উঠে ভারতীয় ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। গম্ভীর ২০০৭ (টি-টোয়েন্টি) এবং ২০১১ (এক দিনের) সালে ভারতের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন। দু’টি বিশ্বকাপের ফাইনালেই গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল তাঁর। বিরাট ২০১১ সালে বিশ্বকাপজয়ী দলে ছিলেন। অর্থাৎ, বিরাটের এক সময়ের সতীর্থ এখন কোচের দায়িত্বে। সদ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও জিতেছেন বিরাট। বিশ্বকাপ জয়ের পর আপাতত ছুটি কাটাচ্ছেন বিরাট। তিনি রয়েছেন লন্ডনে। বিরাটের পরিবারও সেখানে।
শ্রীলঙ্কা সফর দিয়েই শুরু হবে কোচ গম্ভীরের কাজ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত দায়িত্ব সামলেছিলেন রাহুল দ্রাবিড়। তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গম্ভীরকে কোচ করা হয়। মাঝে জ়িম্বাবোয়ে সফরে কোচ হিসাবে গিয়েছিলেন জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির প্রধান ভিভিএস লক্ষ্মণ।