মহম্মদ শামি। —ফাইল চিত্র।
এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপের আগে অস্বস্তিতে ভারতীয় ক্রিকেটার মহম্মদ শামি। স্ত্রী হাসিন জাহানের করা মামলায় তাঁকে জামিন নিতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভারতীয় দলের জোরে বোলারকে সশরীরে আদালতে হাজিরা দিতে হবে।
সোমবার আলিপুর অতিরিক্ত দায়রা বিচারকের রায়, স্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে শামিকে তলব করার পিছনে কোনও প্রয়োজনীয় কারণ খুঁজে পায়নি আদালত। তাই তাঁকে কোর্টে হাজিরা দিতে হবে না। তবে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এই মামলার পরবর্তী বিচারপ্রক্রিয়ার জন্য ভারতীয় ক্রিকেটারকে ট্রায়াল কোর্টে আবেদন করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে তিনি জামিনের আবেদন করতে পারবেন। আইন মোতাবেক শামির জামিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ট্রায়াল কোর্ট। এই অবস্থায় আইনজীবীরা মনে করছেন, শামি যদি জামিনের আবেদন করেন তবে তাঁকে অ্যাডিশনাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (এসিজেএম)-এর কাছে হাজিরা দিতে হবে। বড় দু'টি প্রতিযোগিতার আগে শামির পক্ষে যা অস্বস্তির কারণ।
২০১৮ সালের ৮ মার্চ শামি এবং তাঁর দাদার বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ তুলে যাদবপুর থানায় এফআইআর করেন হাসিন। ২০১৯ সালের ২৯ অগস্ট শামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আলিপুরের এসিজেএম কোর্ট। ওই বছর ৯ সেপ্টেম্বর আলিপুর জেলা দায়রা আদালত ওই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়। এই অবস্থায় প্রায় চার বছর ধরে মামলাটি সেখানে বিচারাধীন রয়েছে। পরে জেলা দায়রা বিচারকের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন হাসিন। বিচারপতি শম্পা সরকার নিম্ন আদালতের নির্দেশ বহাল রাখলে ক্রিকেটারের স্ত্রী সুপ্রিম কোর্টে যান। গত মাসে শীর্ষ আদালত জানায়, এক মাসের মধ্যে সব পক্ষের বক্তব্য শুনে দায়রা বিচারককে মামলাটির নিষ্পত্তি করতে হবে। সেই মতো জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আলিপুর জেলা আদালতে মামলাটির শুনানি হয়। গত সোমবার এই মামলায় রায় ঘোষণা করে আদালত।
আদালতের রায়, শামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা খারিজ করা হল। এই মামলায় চার্জশিট দাখিল হওয়ার দরুন ট্রায়াল বা এসিজেএম কোর্টে বিচার চলবে। এমতাবস্থায় ভারতীয় ক্রিকেটারকে সমন করার প্রয়োজনীয়তা নেই। তবে ৩০ দিনের মধ্যে শামি এবং তাঁর দাদাকে মামলার পরবর্তী বিচার প্রক্রিয়ার জন্য ট্রায়াল কোর্টে যেতে হবে। এই সময়ের মধ্যে তাঁরা জামিনের আবেদন করলে আইন মোতাবেক দ্রুত সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে এসিজেএম কোর্ট। হাসিনের আইনজীবী মৃগাঙ্ক মিস্ত্রি জানান, শামিরা জামিনের আবেদন করলে তাঁর মক্কেল বিরোধিতা করবেন। নিম্ন আদালতে জামিন মিললে উচ্চ আদালতে যাওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, স্ত্রীর করা মামলার এর আগে আগাম বা অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন করেননি শামি। এই অবস্থায় আইনজীবীদের মতে, অন্তর্বর্তী জামিনের জন্য জেলা দায়রা বিচারক, হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে তাঁকে সশরীরে যেতে হত না। এখন ট্রায়াল কোর্ট থেকে জামিন নিতে গেলে তাঁকে সশরীরে আদালতে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।