ম্যাচের রাশ ভারতের হাতেই। ছবি রয়টার্স
এজবাস্টন টেস্টে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের শেষে চালকের আসনে ভারত। ২৫৭ রানে এগিয়ে আছে তারা। ভারতের প্রথম ইনিংসে ৪১৬ রানের জবাবে এ দিন ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস শেষ হয়ে যায় ২৮৪ রানে। ১৩২ রানে এগিয়ে থেকে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসের ভারতের স্কোর ১২৫-৩। ক্রিজে রয়েছেন চেতেশ্বর পুজারা (৫০) এবং ঋষভ পন্থ (৩০)। ফের বড় রান করতে ব্যর্থ বিরাট কোহলী (২০)।
দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই ধাক্কা খায় ভারত। প্রথম ওভারেই জেমস অ্যান্ডারসন ফিরিয়ে দেন শুভমন গিলকে। একই ভুল দু’বার করলেন শুভমন। বল ট্র্যাকারে দেখা গেল, প্রথম ইনিংসে যে ভাবে আউট হয়েছিলেন, দ্বিতীয় ইনিংসেও ঠিক সে ভাবেই। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দেওয়ার স্বভাব গেল না। দ্বিতীয় উইকেটে লম্বা জুটি গড়ার চেষ্টা করছিলেন হনুমা বিহারী এবং চেতেশ্বর পুজারা। চা-বিরতির আগে এবং পরে মিলিয়ে ঘণ্টা খানেক ক্রিজ কামড়ে পড়েছিলেন। তবে বিহারীও সেই অফস্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে ফিরে গেলেন।
নামলেন কোহলী। প্রথম থেকেই তাঁকে দেখে মনে হচ্ছিল উইকেটে পড়ে থাকার জন্যই এসেছেন। অফস্টাম্পের বাইরের বলে পারতপক্ষে সাড়া দিচ্ছিলেন না। অহেতুক কভার ড্রাইভ বা স্ট্রেট ড্রাইভ করতে যাওয়ার কোনও মনোভাবই ছিল না। কোহলীর আউট হওয়া নিতান্তই দুর্ভাগ্যের। বেন স্টোকসের বল পিচে পড়ে আচমকাই লাফিয়ে উঠল। কোহলী বুঝতে পারেননি। বল তাঁর গ্লাভস ছুঁয়ে উইকেটকিপার বিলিংসের হাতে গিয়েছিল। বিলিংস সেই ক্যাচ ধরতে পারেননি। তবে পাশে থাকা জো রুট কোনও মতে এক হাত বাড়িয়ে ক্যাচ ধরে নেন।
তৃতীয় দিনের শুরুতে কিছুটা চিন্তা নিয়েই নেমেছিল ভারত। রুটকে তুলে নিলেও ক্রিজে ছিলেন স্টোকস এবং জনি বেয়ারস্টো। নিজের দিনে যে কেউ একার হাতে খেলার গতিপ্রকৃতি পাল্টে দিতে পারেন। সেটাই হল বেয়ারস্টোর হাত ধরে। ইংরেজ ব্যাটার নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকেই দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় টেস্টে শতরান করার ভারতের বিরুদ্ধেও তাঁর ব্যাট থেকে তিন অঙ্কের রান পাওয়া গেল। সেটা এল ভারতীয় বোলারদের উপর দাপট দেখিয়েই।
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে যতটা আক্রমণাত্মক খেলেছিলেন, ভারতের বিরুদ্ধে সে ভাবে দাপট দেখাতে পারছিলেন না বেয়ারস্টো। রান করতে সময় নিচ্ছিলেন। বেয়ারস্টো বিপক্ষের এই মুহূর্তে সেরা ছন্দে থাকা ক্রিকেটার। স্লিপ থেকে ক্রমাগত তাঁকে স্লেজিং করে যাচ্ছিলেন কোহলী। এক বার দু’জনে তর্কাতর্কিতেও জড়ান। আম্পায়ার এসে দু’জনকে আলাদা করেন। সেই রাগেই কিনা জানা নেই, বেয়ারস্টো এর পর রুদ্রমূর্তি ধারণ করলেন। যে ভারতীয় বোলারদের এতক্ষণ তিনি সমঝে খেলছিলেন, তাঁদেরকেই অবলীলায় পাঠাতে থাকলেন বাউন্ডারির বাইরে। প্রথম ৫০ এসেছিল ৮১ বলে। পরের ৫০ করলেন ৩৮ বলে।
মারকুটে এই ব্যাটারকে শেষ পর্যন্ত ফেরালেন মহম্মদ শামি। স্লিপে সেই কোহলীর হাতেই ক্যাচ দিলেন বেয়ারস্টো। তবে তার আগেই ফিল্ডিংয়ের খারাপ নিদর্শন দেখা গেল ভারতীয় দলে। স্টোকস মাত্র ২৫ করে ফিরলেও, অনেক আগেই তাঁকে ফেরানো যেত। প্রথম শামির বলে তাঁর লোপ্পা ক্যাচ ফেলেন শার্দূল। কিছু ক্ষণ পরেই বুমরা আপাত-নিরীহ একটি ক্যাচ ফেলে দেন। পরের বলেই একই শট মারেন স্টোকস। এ বার বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে বুমরার ক্যাচ নিতে ভুল হয়নি। বেয়ারস্টো ফেরার পর স্যাম বিলিংস লড়াই দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তবে সিরাজের বলে তিনি ফিরতেই ইংল্যান্ডের ইনিংস মুড়িয়ে যায়।