ধোনির স্মৃতি ফেরালেন কেএস ভরত। ফাইল ছবি
সব ঠিক ঠাক থাকলে হয়তো এই টেস্টে তাঁর খেলাই হত না। অভিষেকের জন্যে অপেক্ষা করে থাকতে হত অনন্তকাল। কিন্তু গত ৩০ ডিসেম্বরের একটি ঘটনা শ্রীকর ভরতের জীবন বদলে দিয়েছে। গাড়ি দুর্ঘটনার জেরে দীর্ঘ দিনের জন্যে ঋষভ পন্থের ছিটকে যাওয়া আচমকাই সুযোগ এনে দিয়েছে ভরতের কাছে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ঈশান কিশনের সঙ্গে লড়াই থাকলেও, ভারতীয় দলের টুপি পাওয়া আটকায়নি ভরতের। এবং প্রথম টেস্টেই ভরত বুঝিয়ে দিয়েছেন, কেন তিনি পন্থের যোগ্য উত্তরসূরি হয়ে উঠতে পারেন।
ম্যাচের তখন দ্বিতীয় ওভার শুরু হয়েছে। মহম্মদ সিরাজের প্রথম বলই গিয়ে লাগল উসমান খোয়াজার ব্যাটে। সজোরে চেঁচিয়ে উঠলেন সিরাজ এবং দলের বাকিরা। কিন্তু আম্পায়ার নীতিন মেনন পাত্তাই দিলেন না। মিড অন থেকে দৌড়ে এসে রোহিত শর্মা আগে পরামর্শ করলেন ভরতের সঙ্গে। এক সেকেন্ড বাকি থাকতে ডিআরএসের সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। দেখা গেল, ভরতের অনুমানক্ষমতা নির্ভুল।
অতীতে ধোনির এ রকমই অনুমানক্ষমতা ছিল। এক সময় তাঁর ডিআরএসের নামই হয়ে গিয়েছিল, ‘ধোনি রিভিউ সিস্টেম’। পন্থ অবশ্য এ ব্যাপারে অনেকটাই কাঁচা। অতীতে তাঁর পরামর্শ শুনে ডিআরএস হারাতে হয়েছে ভারতকে। কিন্তু বৃহস্পতিবার ভরতের আত্মবিশ্বাস নজর কেড়েছে অনেকেরই।
ধোনির মতোই স্টাম্পিং দেখা গেল ভরতের। ফাইল ছবি
এখানেই শেষ নয়। দুর্দান্ত একটি স্টাম্পও করলেন তিনি। উইকেটে তখন জমে গিয়েছিলেন মার্নাস লাবুশেন। অর্ধশতরান থেকে এক রান দূরে। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বল এগিয়ে গিয়ে খেলতে গেলেন। বিদ্যুৎগতিতে বল ধরেই উইকেট ভেঙে দিলেন ভরত। লাফিয়ে উঠলেন আনন্দে।
ডিআরএসের সময় ভরতের প্রশংসা করে ভারতের প্রাক্তন উইকেটকিপার দীনেশ কার্তিক বলেন, “সবাই বলে টেস্ট খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে হয়। ভরত সেটা প্রমাণ করে দিয়েছে। অনেক দিন ধরে অন্ধ্রের হয়ে খেলছে। ভারত ‘এ’ দলের হয়েও বছর পাঁচেক খেলেছে। অভিষেক টেস্টে পাঁচ মিনিটের মাথায় একটা বড় সিদ্ধান্ত নিল। কিপার হিসাবে আপনাকে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে এবং অধিনায়ককে বলতে হবে ঠিক কী দেখেছ। সেটা দারুণ ভাবে করেছে ভরত।”
ভারতের উইকেটকিপার নিজে বলেন, “ভারতের হয়ে খেলার মতো প্রতিভা রয়েছে এটা জানতামই। চার-পাঁচ বছর ধরে একটানা পারফর্ম করার পর সুযোগ পেয়েছি। প্রথম তিনটে মরসুম ভাল গেলেও পরে একটু খারাপ সময় কেটেছে। তার পরেও ফিরে এসেছি। তখনই বুঝতে পারি, দেশের হয়ে খেলার ক্ষমতা রয়েছে আমার।”