৭৫তম শতরান করে ফেললেন বিরাট। ছবি: এএফপি
টি-টোয়েন্টি এবং এক দিনের ক্রিকেটে শতরানের খরা কেটে গিয়েছিল আগেই। এ বার লাল বলের ক্রিকেটেও শতরান। ইডেনের পর আমদাবাদ। মাঝে ১২০৫ দিনের দীর্ঘ অপেক্ষা। টেস্ট শতরান এল বিরাট কোহলির ব্যাটে। তা-ও আবার দেশের মাটিতে ৫০তম টেস্ট খেলতে নেমে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭৫তম শতরান করে ফেললেন বিরাট।
আমদাবাদ টেস্টের পিচ ব্যাটারদের সাহায্য করছে। এই ম্যাচে শুরু থেকে বল ঘুরছে না। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা রান পেয়েছেন। ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে শুভমন গিল শতরান করেছেন। সেই সব কিছুর পরও ম্যাচের অন্যতম মুহূর্ত হয়ে রইল বিরাটের শতরান। ইডেনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গোলাপি বলের টেস্টের (২৩ নভেম্বর, ২০১৯) পর লাল বলের টেস্টে শতরান আসছিল না ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের। এল আমদাবাদে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যে শতরান ভারতকে ভরসা দিল। শুভমন আউট হওয়ার সময়ও ভারত ২৩৫ রানে পিছিয়ে ছিল। কোনও ব্যাটারকে বড় রানের ইনিংস খেলতে হত। সেই দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন বিরাট। ১০৮তম টেস্ট খেলতে নামা বিরাট জানেন ইনিংসের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে। সেই অভিজ্ঞতার ছাপ দেখা গেল বিরাটের গোটা ইনিংসে।
বিরাট ব্যাট করতে নেমেই শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন শতরান করা শুভমনকে। তরুণ ক্রিকেটারকে উৎসাহ দিয়েছিলেন। আর নিজে যখন শতরান করলেন, তখন উল্টো দিকে সবে ব্যাট করতে নামা অক্ষর। তার কিছু ক্ষণ আগেই ফিরে গিয়েছেন চতুর্থ টেস্ট খেলতে নামা তরুণ উইকেটরক্ষক ভরত। যাঁর উপর ইনিংসের মাঝে এক সময় রেগে গিয়েছিলেন বিরাট। মাঝ ক্রিজ থেকে বিরাটকে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিলেন অনভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক। যা ভাল লাগেনি বিরাটের। কঠোর ভাবে তাকিয়ে যা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ভরতকে। শুধু তিনি নন, বিরাট রেগে গিয়েছিলেন জাডেজার উপরও। তিনি এবং জাডেজা ৬৪ রানের জুটি গড়েন। মন্থর ভাবেই এগোচ্ছিলেন দু’জনে। কিন্তু হঠাৎ ব্যাট চালাতে শুরু করেন জাডেজা। সেটা করতে গিয়েই নিজের উইকেট দিয়ে আসেন তিনি। যা দেখে রেগে যান বিরাট। বিরক্তির চোখে তাকিয়ে ছিলেন জাডেজার দিকে। তাঁর মাথায় যে তখনও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পিছিয়ে থাকার চাপ।
সেই চাপ নিজেই কাটালেন। একটা একটা করে রান নিয়ে ভারতের ইনিংস গড়তে শুরু করলেন। শতরানের সময়েও বিরাটের পরিসংখ্যান বলছে মাত্র পাঁচটি চার মেরেছেন তিনি। অর্থাৎ ৮০ রান নিয়েছেন দৌড়ে। বিরাট দৌড়চ্ছেন আর নাভিশ্বাস উঠছে অস্ট্রেলিয়ার। চিন্তা বাড়ছে স্মিথের। নাথান লায়নকে দিয়ে এক ইনিংসে ৫০ ওভারের বেশি বল করে ফেলালেন। কিন্তু উইকেট এল না। বিরাটকে ফেরাতে পারলেন না। নিজের লক্ষ্যে বিরাট স্থির। আসলে ফিল্ডিং করার সময়ই বুঝে গিয়েছিলেন আমদাবাদের পিচে ভুল না করলে আউট হওয়া মুশকিল। তাই ভুল করবেন না, এই প্রতিজ্ঞা নিয়েই নেমেছিলেন।
শেষ পর্যন্ত বিরাট শতরান করলেন। কোনও তাড়াহুড়ো নেই। কিন্তু তাই বলে রানের গতি খুব কমেনি। একটা সময় শতরানের খরা চলছিল বিরাটের। ব্যাট ধরেননি দেড় মাস। তার পর সাদা বলের ক্রিকেটে শতরান পেলেও লাল বলের ক্রিকেটে অধরা ছিল সেই তিন অঙ্কের রান। অবশেষে সেই শতরান এল। ৭৫তম শতরান। আগামী দিনে আর থামতে চাইবেন না বিরাট।