নাগপুরে অর্ধশতরানের পর উচ্ছ্বাস জাডেজার। ছবি: আইসিসি।
চোট সারিয়ে ২২ গজে ফিরেই নজির গড়লেন রবীন্দ্র জাডেজা। ভাঙলেন ভারতের বিশ্বকাপ জয়ী প্রাক্তন অধিনায়ক কপিল দেবে রেকর্ড। প্রথম ভারতীয় ক্রিকেটার হিসাবে পাঁচ বার একই টেস্ট ম্যাচে ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ৫০ রান করলেন তিনি।
কপিল দেব একই টেস্টে অর্ধশতরান করার পাশাপাশি ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন চার বার। চোট সারিয়ে ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে দিয়েই কপিল দেবের সেই রেকর্ড ভেঙে দিলেন জাডেজা।
বৃহস্পতিবার ৪৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে ধস নামিয়েছিলেন জাডেজা। যে ২২ গজে কথা বলেছিল তাঁর বল, সেই উইকেটেই শুক্রবার কথা বলল তাঁর ব্যাট। টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শেষে ৬৬ রান করে অপরাজিত আছেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার। তাঁর ব্যাট থেকে এখনও পর্যন্ত এসেছে ন’টি চার। অর্ধশতরান করার পর শুক্রবার জাডেজাকে দেখা গিয়েছে চেনা মেজাজে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে। রাজপুত যুবক তরোয়ালের মতো চালনা করেছেন ব্যাট। জাডেজার এই উচ্ছ্বাস গত কয়েক মাস দেখতে পাননি ক্রিকেটপ্রেমীরা।
সৌরাষ্ট্রের হয়ে রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ খেলতে নেমেই জাডেজা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, চোট সারিয়ে কতটা প্রস্তুত প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটের জন্য। পাঁচ দিনের ম্যাচ খেলার ধকল তিনি নিতে পারবেন কিনা, তা দেখে নিতে চেয়েছিলেন বোর্ড কর্তারা। সেই পরীক্ষায় সসম্মানে উতরে গিয়েছিলেন। ফলে টেস্টের প্রথম একাদশে তাঁর থাকা নিয়ে আর কোনও প্রশ্ন ছিল না।
এশিয়া কাপের সময় হোটেলে সতীর্থদের সঙ্গে মজা করার সময় হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন জাডেজা। তার পর অনেক সমালোচনা, বিদ্রুপ শুনতে হয়েছিল তাঁকে। প্রশ্ন উঠেছিল অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারের দায়িত্বজ্ঞান নিয়েও। তাঁর চোট পাওয়ার ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন বিসিসিআই কর্তাদের একাংশও। জাডেজা অবশ্য মুখে কোনও জবাব দেননি। কঠিন সময় কাটিয়েছেন দাঁতে দাঁত চেপে। অস্ত্রোপচারের পর গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় থেকে জিমে ট্রেনিং শুরু করেছিলেন। পরে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে শান দিয়েছেন ক্রিকেটীয় দক্ষতায়। তাঁর দক্ষতার ধার নাগপুর টেস্টে হারে হারে বুঝছেন প্যাট কামিন্সরা। সফরকারীদের বুকে যত কাঁপুনি ধরছে, রোহিত শর্মাদের মুখের হাসি তত চওড়া হচ্ছে।
মাঠে ফিরেই জাডেজা প্রমাণ করে দিয়েছেন নিজেকে। রিকি পন্টিং, রবি শাস্ত্রী, সুনীল গাওস্করের মতো প্রাক্তন ক্রিকেটাররা তাঁর পারফরম্যান্সের প্রশংসা করেছেন। যে পারফরম্যান্সে ভেঙে গিয়েছে কপিলের রেকর্ড।