ভারতীয় ব্যাটারদের ব্য়র্থতার দিনে একাই লড়লেন চেতেশ্বর পুজারা। অর্ধশতরান করলেন তিনি। ছবি: পিটিআই
আরও এক দিন দাপট দেখালেন বোলাররা। আরও এক দিন প্রতিটি রানের জন্য লড়তে হল ব্যাটারদের। আরও এক দিন প্রতিটি সেশনে বদলে গেল খেলার ছবি। প্রথমে উমেশ যাদব, রবিচন্দ্রন অশ্বিনের দাপটে অস্ট্রেলিয়ার লিড ৮৮ রানে আটকে রাখল ভারত। পরে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসও শেষ হয়ে গেল ১৬৩ রানে। আরও খারাপ পরিস্থিতি হতে পারত ভারতের। দলের ইনিংসকে ভেঙে পড়ার হাত থেকে বাঁচালেন চেতেশ্বর পুজারা। অর্ধশতরান করলেন তিনি। অন্য দিকে দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেট নিয়ে ম্যাচের ‘সিংহ’ অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার নেথান লায়ন। তৃতীয় টেস্ট জিততে দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৬ রান করতে হবে স্টিভ স্মিথদের।
দ্বিতীয় দিনের প্রথম ১ ঘণ্টা অস্ট্রেলিয়ার। সকালে পিচের আর্দ্রতা কাজে লাগিয়ে উইকেট তোলার চেষ্টা করেন ভারতীয় বোলাররা। কিন্তু সেটা হতে দেননি অস্ট্রেলিয়ার দুই ব্যাটার পিটার হ্যান্ডসকম্ব ও ক্যামেরুন গ্রিন। রানের গতি কম হলেও উইকেট পড়েনি। দেখে মনে হচ্ছিল প্রথম ইনিংসেই খেলা ভারতের ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে চলে যাবেন তাঁরা। তখনই দলকে খেলায় ফেরালেন অশ্বিন।
১৯ রানের মাথায় হ্যান্ডসকম্বকে আউট করে অস্ট্রেলিয়াকে দ্বিতীয় দিনের প্রথম ধাক্কা দেন অশ্বিন। তার পরে দেখা গেল উমেশের সঙ্গে তাঁর যুগলবন্দি। পুরনো বলে রিভার্স সুইং করিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের ধরাশায়ী করে দিলেন উমেশ। মাত্র ১১ রানে অস্ট্রেলিয়ার শেষ ৬ উইকেট পড়ল। উমেশ ও অশ্বিন ৩টি করে উইকেট নেন। ১৯৭ রানে অলআউট হয়ে যায় গোটা দল। ৮৮ রানের লিড নেয় অস্ট্রেলিয়া।
লড়াইয়ে থাকতে হলে দ্বিতীয় ইনিংসে বড় রান করতে হত ভারতকে। কিন্তু শুরুটা ভাল হয়নি। মাত্র ৫ রানের মাথায় যে ভাবে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে বড় শট মারতে গিয়ে শুভমন গিল আউট হলেন তাকে অপরাধের পর্যায়ে ফেলা যায়। আরও এক বার ব্যর্থ রোহিত। ১২ রান করে লায়নের বলে আউট হন তিনি।
প্রথম ইনিংসে কুনেম্যান ৫ উইকেট নিয়ে থাকলে দ্বিতীয় ইনিংসে সেই কাজ করলেন লায়ন। একের পর এক উইকেট নিলেন তিনি। কোহলি আবার ম্যাথু কুনেম্যানের বলে আড়া ব্যাটে খেলতে গিয়ে ১৩ রানের মাথায় উইকেট দিয়ে ফিরলেন। রবীন্দ্র জাডেজা, শ্রীকর ভরতও রান পাননি। ব্যর্থতার জন্য দায়ী ভারতীয় ব্যাটাররাই। কখনও সামনের বল পিছনের পায়ে খেললেন। আবার কখনও পিছনের পায়ের বল আড়া ব্যাটে খেলতে গিয়ে উইকেট দিয়ে এলেন তাঁরা।
এক প্রান্তে উইকেট পড়লেও আর এক প্রান্তে টিকেছিলেন পুজারা। ধরে খেলছিলেন তিনি। কোনও তাড়াহুড়ো করেননি। শুধু দু’টি কাজ খুব ভাল ভাবে করেছেন তিনি। এক, পায়ের ব্যবহার করে বোলারের ছন্দ নষ্ট করেছেন। দুই, সোজা ব্যাটে খেলার চেষ্টা করেছেন। তার পুরস্কারও পেয়েছেন পুজারা। চলতি সিরিজ়ে নিজের প্রথম অর্ধশতরান করলেন পুজারা।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দ্রুত রান করছিলেন শ্রেয়স আয়ার। পুজারার সঙ্গে জুটি বাঁধেন তিনি। দেখে মনে হচ্ছিল, এই জুটি ভারতের লিড ১০০ পার করে দেবে। কিন্তু ২৬ রান করে আউট হয়ে দেলেন শ্রেয়স। যত ক্ষণ পুজারা ছিলেন তত ক্ষণ রান এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আশা ছিল ভারতের। কিন্তু পুজারা ৫৯ রান করে আউট হয়ে গেলে রোহিতদের বড় রানের সব আশা শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ১৬৩ রানে শেষ হয়ে যায় ভারতের ইনিংস।
তৃতীয় দিন সকালে ব্যাট করতে নামবে অস্ট্রেলিয়া। ৭৬ রান করলেই ম্যাচ জিতে যাবে তারা। তবে এই পিচে ভারতও চেষ্টা করবে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলতে। এখন দেখার এই ম্যাচে ভারত আর লড়াই করতে পারে কি না।