অজিঙ্ক রাহানে এবং স্টিভ স্মিথের নেতৃত্বে দলের শাপমুক্তি। —ফাইল চিত্র
স্টিভ স্মিথ এবং অজিঙ্ক রাহানে। এক জন বিশ্বের সেরা ব্যাটারদের অন্যতম। অন্য জন ভারতীয় দলের বাইরে। আর সুযোগ পাবেন কি না তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু এই দুই ক্রিকেটার মিলে গেলেন বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে।
দু’দিন এবং এক সেশনে খেলা শেষ। এ বারের বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে এটা নতুন কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু ফলাফলটা পাল্টে গিয়েছে। প্রথম দু’টি টেস্টে ভারত যতটা সহজে জিতেছিল, তৃতীয় টেস্টে ততটাই দাপট দেখাল অস্ট্রেলিয়া। এই পাল্টে যাওয়ার কারণ হিসাবে উঠে আসছে স্মিথের নাম। মায়ের শরীর খারাপ হওয়ায় দেশে ফিরে গিয়েছেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। দায়িত্ব স্মিথের কাঁধে। সেই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার শরীরী ভাষাও পাল্টে গিয়েছে।
২০২০-২১ সালের বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে প্রথম ম্যাচ খেলে দেশে ফিরেছিলেন বিরাট কোহলি। তিনি সেই সময় ভারতের টেস্ট অধিনায়ক। মেয়ের জন্মের সময় স্ত্রী অনুষ্কার পাশে থাকতেই দেশে ফিরেছিলেন তিনি। অ্যাডিলেডে প্রথম টেস্টে ভারতকে ৩৬ রানে শেষ হয়ে যাওয়ার লজ্জায় মুখ ঢাকতে হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জিতেছিল ভারতকে দুরমুশ করে। পরের টেস্ট থেকে দলকে নেতৃত্ব দেন রাহানে। ০-১ পিছিয়ে থাকা সিরিজ় ভারত জিতে ফেরে ২-১ ব্যবধানে। দ্বিতীয় টেস্টে রাহানের শতরান দলের মানসিকতাটাই পাল্টে দিয়েছিল।
ইনদওর টেস্টের আগে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন কামিন্স। তিনি দেশে ফিরে যেতে স্মিথ দায়িত্ব নেন। তাতে প্রথম ইনিংস থেকেই নজর যায় অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডিংয়ে। স্মিথ আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং সাজাচ্ছিলেন। ভারতকে চাপে ফেলার চেষ্টা করছিলেন। ম্যাচ শেষ স্মিথ নিজেও জানালেন ভারতে এসে নেতৃত্ব দিতে পছন্দ করেন তিনি। স্মিথ বলেন, “আমি ভারতীয় পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত। এখানে নেতৃত্ব দিতে আমার দারুণ লাগে। এখানকার ছোট ছোট জিনিস আমি বুঝি। মনে এই সপ্তাহে ভালই কাজ করেছি। এই ভাবেই খেলব আমরা। পরের টেস্টের পরিবেশটাও দেখতে হবে।”
মনে করা হচ্ছে কামিন্স পরের টেস্টেও দলে যোগ দিতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে চতুর্থ টেস্টেও অধিনায়ক স্মিথ। অস্ট্রেলিয়া প্রথম দুই টেস্টের পর ০-২ পিছিয়ে ছিল সিরিজ়ে। ইনদওরে জিতে কিছুটা উজ্জীবিত দল। আমদাবাদেও স্মিথ নেতৃত্ব দেবেন মানে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতেই খেলবে অস্ট্রেলিয়া। একটি মাত্র টেস্ট বাকি থাকায় রাহানের মতো স্মিথের পক্ষে দলকে সিরিজ় জেতানো সম্ভব নয়। কিন্তু ড্র করে ফিরতে পারলেও অস্ট্রেলিয়া যথেষ্ট খুশি হবে তা বলাই যায়।
স্মিথ এক সময় অস্ট্রেলিয়া দলকে নেতৃত্ব দিতেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় বল বিকৃত করার অপরাধে তাঁর নেতৃত্ব কেড়ে নেয় বোর্ড। নির্বাসিতও করা হয়। পরে দলে ফিরলেও তাঁকে অধিনায়ক করা হয়নি। কামিন্সকে অধিনায়ক করে সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয় স্মিথকে। রাহানে বরাবর বিরাটের সহ-অধিনায়ক হিসাবে কাজ করেছেন। দুই দেশের দুই ডেপুটি দলের খেলা পাল্টে দিলেন দায়িত্ব পেয়েই।