পরীক্ষা: ছন্দহীন পুজারা কি রানে ফিরবেন মুম্বইয়ে? ফাইল চিত্র
কানপুরে প্রথম টেস্টে চতুর্থ দিনের শেষে নিউজ়িল্যান্ডকে এক উইকেট হারাতে দেখে ধরেই নিয়েছিলাম এই ম্যাচ আমরাই জিতছি। কিন্তু ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা। পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনে উইল সমারভিল ও টম লাথাম যে প্রথম দু’ঘণ্টা ব্যাট করে দেবে, তা হয়তো কেউ ভাবতেও পারেননি। এমনকি শেষের দিকে রাচিন রবীন্দ্র ও অজাজ় পটেল বিশ্বের সেরা স্পিনারদের বিরুদ্ধে যে ঢাল হয়ে দাঁড়াবে, সেটাও আশা করিনি। সব মিলিয়ে জমজমাট একটি টেস্ট ম্যাচের শেষে ভারত জিতলে ভাল লাগত।
নিউজ়িল্যান্ডের এই লড়াইকেও কুর্নিশ। যে ভাবে নীচের সারির ব্যাটাররা দাঁতে দাঁত চেপে শেষ পর্যন্ত লড়াই করল, তাতে বলে দেওয়াই যায় অচেনা পরিবেশে হার-না-মানা লড়াই করে যেতে ওরা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে। ওদের কাছে এই ফল কার্যত জয়ের সমান। শুক্রবার থেকে শুরু মুম্বই টেস্ট। ওয়াংখেড়ের পিচে বল অনেক বেশি বাউন্স করে। সুইং পায় পেসাররা। টিম সাউদি, কাইল জেমিসনের সঙ্গে নিল ওয়াগনারকেও দলে নিয়ে ভারতকে পরীক্ষার মধ্যে ফেলতে পারে কেন উইলিয়ামসনরা।
প্রথম টেস্ট ড্র করে ভারতীয় দলের মনোবল কিছুটা ধাক্কা খেতেই পারে। তবে তাদের চাঙ্গা করে দেবে বিরাট কোহালির আবির্ভাব। মুম্বই টেস্টে অধিনায়ক হিসেবে ফিরছে বিরাট। কিন্তু কার জায়গায় অধিনায়ক খেলবে, তা সবচেয়ে বড় আলোচ্য হয়ে উঠেছে।
অভিষেক ম্যাচের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি ও দ্বিতীয় ইনিংসে ম্যাচ বাঁচানো হাফসেঞ্চুরি করা শ্রেয়স আয়ারকে বাদ দিয়ে কোহালিকে খেলানো হলে সবচেয়ে বড় ভুল হবে। যে ভুল হয়েছিল করুণ নায়ারের সঙ্গে। এমনকি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে-তে সেঞ্চুরি করার পরে বসতে হয়েছিল মনোজ তিওয়ারিকেও। এ ধরনের সিদ্ধান্ত একজন ক্রিকেটারের মনোবল ভেঙে দিতে পারে। শ্রেয়সকে যেন কোনও ভাবেই বসানো না হয়। বর্তমান কোচ রাহুল দ্রাবিড় নিশ্চয়ই জানেন, অভিষেক ম্যাচে রান করার পরে মনোবল কতটা বেড়ে যেতে পারে। যদিও তাঁর হাতে বিকল্প বেশি নেই। হয় ছন্দ হারানো চেতেশ্বর পুজারা ও অজিঙ্ক রাহানের মধ্যে একজনকে বসিয়ে বিরাটকে খেলানোর কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। না হলে ওপেনারদের মধ্যে একজনকে বসিয়ে পুজারাকে দিয়ে ওপেন করানোর কথা ভেবে দেখতে পারেন দ্রাবিড়।
ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয়েছে মায়াঙ্ক আগরওয়ালের জায়গায় খেলুক বিরাট। শুভমন গিল প্রথম ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি করেছে। পঞ্চম দিনে দুরন্ত ক্যাচ নিয়েছে ফাইন লেগ অঞ্চলে। সেই তুলনায় মায়াঙ্ক সে রকম কিছু করে দেখাতে পারেনি। প্রথম ইনিংসে করেছে ১৩ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭। কানপুরের মন্থর পিচেও দুই ইনিংসে পেসারের বলে আউট হয়েছে ও। দেখেই বোঝা যাচ্ছে আত্মবিশ্বাসের অভাব। বলের কাছে পা নিয়ে যেতে পারছে না। শটও খেলতে পারছে না। মায়াঙ্কের জায়গায় শুভমনের সঙ্গে ওপেন করুক পুজারা। তিন নম্বরে আসুক শ্রেয়স। চার নম্বরে কোহালি।
বোলিং বিভাগেও একটি পরিবর্তন না করলেই নয়। ইশান্ত শর্মা কোন যুক্তিতে এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলছে? নিউজ়িল্যান্ডের দুই পেসার কানপুরের পিচ থেকে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১৪ উইকেট নিয়েছে। সে জায়গায় ইশান্ত মাত্র ২২ ওভার বল করেছে ম্যাচে। উইকেট পাওয়ার কোনও লক্ষণও ছিল না। ব্যাটারকে পরাস্তও করতে পারেনি। মহম্মদ সিরাজ কেন বাইরে বসে আছে? কানপুরের পিচের সঙ্গে কিন্তু মুম্বইয়ের বাইশ গজের অনেক তফাত থাকবে। সেখানে সিরাজের মতো তরুণ পেসারকে খেলানোই কিন্তু বুদ্ধিমানের কাজ হবে।